রাজশাহীর তানোরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি সদস্য (মেম্বার) লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে মসজিদ উন্নয়নের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) চকপ্রভুরাম গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। গত ৩ জুলাই এ ঘটনায় চকপ্রভুরাম গ্রামের আব্দুস সাত্তার বাদি হয়ে ইউপি সদস্য (মেম্বার) লুৎফর রহমান ও মসজিদ কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিনসহ ১১ জনের নামে তানোর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এদিকে গ্রামবাসি জানান, এই মেম্বারের বিরুদ্ধে হেরিংবন্ড রাস্তা ও মসজিদের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে ইয়াহিয়া আলী লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা এলজিইডি অফিসের এসও শাহিন সালাম তদন্ত আসেন। তারপর থেকেই টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি প্রকাশ পায়। কিন্তু সেই ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে পড়েন মেম্বার লুৎফর রহমান ও তার অনুসারীরা।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২৮ জুন শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে গ্রাম প্রধান শেরশাহ ঘোষণা দেন, ২৯ জুন শনিবার এশার নামাজের পর মসজিদের আয় ব্যয়ের হিসাব নিয়ে বসা হবে, কমিটির সকলকে উপস্থিত থাকার আহবান জানান। ঘোষণা মোতাবেক শনিবার এশার নামাজের পর ফয়েজের বাড়িতে হিসাব নেয়ার জন্য গ্রামের লোকজন উপস্থিত হন। এ সময় মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ শহিদুল মাস্টার ২০২৩ সাল থেকে ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত হিসাব দেয়। কিন্তু সরকারি অনুদানের টাকা পাননি বলে অবহিত করেন। এ অবস্থায় মসজিদ কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন উপস্থিত গ্রামবাসীকে জানায় ২০২৩ সালে সরকারি অনুদানের ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং ২০২৪ সালে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা মেম্বার লুৎফর রহমানসহ আমি উত্তোলন করি। উপস্থিত গ্রামবাসী সেই টাকা চাইলে মোবাইলে মেম্বারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
কিন্ত্ত মেম্বার তার অনুসারীদের পাঠিয়ে উপস্থিতদেরসহ গ্রাম প্রধানকে গালমন্দ করে ও রেজুলেশন খাতা ছিড়ে ফেলসহ নানা ধরনের হুমকি ধামকি দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সুত্র জানায় ইউপি চেয়ারম্যানের যোগসাজশে লুৎফর মেম্বার এসব টাকা তুলে ইউপি কার্যালয়ে একটি এসি দান করে বাঁকি টাকা হজম করেছে। সুত্র বলেন, চেয়ারম্যানের মদদ ব্যতিত সরকারি অনুদানের টাকা আত্মসাতের কোনো সুযোগ নাই।
এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন আগামী রোববার গ্রামে বসে মিমাংসা করা হবে। এ বিষয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেম্বার লুৎফর রহমান বলেন, মসজিদের টাকা আত্মসাত করা হয়নি। তার পরেও আমি মসজিদে দেড় লাখ টাকা দিতে চেয়েছি। আপনি হিসাব নিকাশে উপস্থিত না হয়ে পালিয়ে যান জানতে চাইলে তিনি জানান আমি পালাইনি যে অভিযোগ করেছে তারাই পালিয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী আব্দুস সাত্তার বলেন, গ্রামের লোকজন ভোট দিয়ে মেম্বার বানিয়েছেন, মেম্বার হয়ে মসজিদের টাকা আত্মসাত করছেন। এর চেয়ে লজ্জার আর কি হতে পারে। আমিসহ গ্রামবাসীর দাবি অভিযোগটি আমলে নিয়ে মেম্বারসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। যাতে মসজিদ বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাত করতে কেউ সাহস না পায়।
এ বিষয়ে তানোর থানার এসআই মজিবুর রহমান জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে গিয়ে মেম্বারসহ গ্রামের লোকজন বসে মিমাংসা করবে বলেছে এবং আগামী রবিবার ও সোমবার পর্যন্ত সময় নিয়েছেন।
প্রিন্ট