ঢাকা , শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo তানোরে গ্রামীণ ব্যাংকের গাছ বাণিজ্য Logo চরভদ্রাসনে সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে গামবুট ও ছাতা বিতরন Logo বৃষ্টি হলে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে অসহায় পরিবারটি Logo ফরিদপুরে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে ‌দুই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা Logo কুষ্টিয়ায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড Logo আলফাডাঙ্গায় ইউপি চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচনে ৫ প্রার্থীর মনোনয়ন জমা Logo কালুখালীর গুনি শিক্ষক আফসার উদ্দীন আর নেই Logo আমতলীতে ফেইসবুকে স্টাটাস দিয়ে চায়ের দোকানদারের আত্মহত্যা Logo টানা চতুর্থ দিনের মতো চলছে ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মবিরতি Logo কুষ্টিয়া দৌলতপুরে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল অর্ধকোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া

আগামী রোববারের মধ্যে সমুদয় বকেয়া বিল পরিশোধ না করলে আবারও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল অর্ধকোটি টাকার বেশি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রেখেছে। বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য একাধিকবার চিঠি দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। কর্মকর্তারা গিয়ে বিল পরিশোধের অনুরোধও করেন। তারপরও বিল পরিশোধ না করায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়। দুই ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের আশ্বাস মিললে আবার সংযোগ দেওয়া হয়।

 

আগামী রোববারের মধ্যে সমুদয় বকেয়া বিল পরিশোধ না করা হলে আবারও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

 

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের (কুষ্টিয়া বিভাগ-২) নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম চক্রবর্তী বলেন, নিরুপায় হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। দুই ঘণ্টা পর চালু করা হয়। আগামী রোববারের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধ না হলে আবারও বিচ্ছিন্ন করা হবে।

 

ওজোপাডিকো সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ ও হাসপাতালের পরিচালকের নামে পৃথক দুটি বিদ্যুৎ সংযোগ মিটার রয়েছে। ২০২২ সালের ২২ মে মেডিকেল কলেজের বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হয়। আর ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হাসপাতালে সংযোগ নেওয়া হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ শুরু থেকে প্রতি মাসে তাদের বিল পরিশোধ করে আসছিল। তবে গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত সাত মাসের বিল তারা পরিশোধ করেনি। এতে তাদের বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়ায় ২৪ লাখ ৫৯ হাজার ২৯১ টাকা।

 

অপর দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের মিটার চালু থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিল প্রায় ১০ লাখ টাকা চলতি বছরের মে মাসে পরিশোধ করেছে। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ৫ মাস বিল বকেয়া রাখে। তার পরিমাণ দাঁড়ায় ৩০ লাখ ২২ হাজার ৬৮০ টাকা।

 

বিল পরিশোধের জন্য একাধিকবার দুই কর্তৃপক্ষকে অন্তত তিনবার চিঠি দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা নিজেরা গিয়েও বিল পরিশোধের জন্য তাগাদা দেন। তারপরও মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিল পরিশোধে গড়িমসি করে। সর্বশেষ গত ১৬ মে বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম চক্রবর্তী বিল পরিশোধের জন্য শেষ চিঠি দেন। তাতে বলা হয়, আগামী ১০ দিনের মধ্যে সমুদয় বিল পরিশোধ করা না হলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।

 

গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের হাউজিং সাবস্টেশন থেকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মুঠোফোনে জানিয়ে দেয়। এরপর দুই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের মধ্যে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ ও কথা চলতে থাকে। দুই ঘণ্টা ধরে স্থানীয় ও উচ্চপর্যায়ে কথা চলতে থাকে।

 

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় কলেজের অধ্যক্ষ অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন অভদ্র আচরণ বলে উল্লেখ করেন অধ্যক্ষ। কলেজের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পড়তে পারেনও বলে বলা হয়। এ সময় নির্বাহী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করার পরামর্শ দেন। একপর্যায়ে আগামী রোববার বকেয়া বিল পরিশোধ করার আশ্বাসে সংযোগ দেওয়া হয়।

 

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দ না পাওয়ায় পরিশোধ করা হয়নি। আবারও তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিল পরিশোধ করা হবে।

 

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান বলেন, হাসপাতালের কিছু যন্ত্রপাতি সচল রাখতে কলেজ থেকে লাইন দেওয়া হয়েছিল। তাতে কলেজের মিটারে অতিরিক্ত বিল আসে। এই বিল পরিশোধ করতে একটু সমস্যা হয়েছে। আগামী জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে যত সম্ভব বিল পরিশোধ করা হবে।

 

 

অধ্যক্ষ আরও বলেন, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা নিয়ে কথাবার্তায় যদি কর্মকর্তারা মন খারাপ করে থাকেন, তবে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখা হচ্ছে। দুটি প্রতিষ্ঠানই সেবামূলক ও সরকারি। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করা হবে।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

তানোরে গ্রামীণ ব্যাংকের গাছ বাণিজ্য

error: Content is protected !!

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল অর্ধকোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া

আপডেট টাইম : ০৬:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল অর্ধকোটি টাকার বেশি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রেখেছে। বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য একাধিকবার চিঠি দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। কর্মকর্তারা গিয়ে বিল পরিশোধের অনুরোধও করেন। তারপরও বিল পরিশোধ না করায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়। দুই ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের আশ্বাস মিললে আবার সংযোগ দেওয়া হয়।

 

আগামী রোববারের মধ্যে সমুদয় বকেয়া বিল পরিশোধ না করা হলে আবারও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

 

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের (কুষ্টিয়া বিভাগ-২) নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম চক্রবর্তী বলেন, নিরুপায় হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। দুই ঘণ্টা পর চালু করা হয়। আগামী রোববারের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধ না হলে আবারও বিচ্ছিন্ন করা হবে।

 

ওজোপাডিকো সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ ও হাসপাতালের পরিচালকের নামে পৃথক দুটি বিদ্যুৎ সংযোগ মিটার রয়েছে। ২০২২ সালের ২২ মে মেডিকেল কলেজের বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হয়। আর ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হাসপাতালে সংযোগ নেওয়া হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ শুরু থেকে প্রতি মাসে তাদের বিল পরিশোধ করে আসছিল। তবে গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত সাত মাসের বিল তারা পরিশোধ করেনি। এতে তাদের বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়ায় ২৪ লাখ ৫৯ হাজার ২৯১ টাকা।

 

অপর দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের মিটার চালু থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিল প্রায় ১০ লাখ টাকা চলতি বছরের মে মাসে পরিশোধ করেছে। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ৫ মাস বিল বকেয়া রাখে। তার পরিমাণ দাঁড়ায় ৩০ লাখ ২২ হাজার ৬৮০ টাকা।

 

বিল পরিশোধের জন্য একাধিকবার দুই কর্তৃপক্ষকে অন্তত তিনবার চিঠি দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা নিজেরা গিয়েও বিল পরিশোধের জন্য তাগাদা দেন। তারপরও মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিল পরিশোধে গড়িমসি করে। সর্বশেষ গত ১৬ মে বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম চক্রবর্তী বিল পরিশোধের জন্য শেষ চিঠি দেন। তাতে বলা হয়, আগামী ১০ দিনের মধ্যে সমুদয় বিল পরিশোধ করা না হলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।

 

গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের হাউজিং সাবস্টেশন থেকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মুঠোফোনে জানিয়ে দেয়। এরপর দুই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের মধ্যে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ ও কথা চলতে থাকে। দুই ঘণ্টা ধরে স্থানীয় ও উচ্চপর্যায়ে কথা চলতে থাকে।

 

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় কলেজের অধ্যক্ষ অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন অভদ্র আচরণ বলে উল্লেখ করেন অধ্যক্ষ। কলেজের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পড়তে পারেনও বলে বলা হয়। এ সময় নির্বাহী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করার পরামর্শ দেন। একপর্যায়ে আগামী রোববার বকেয়া বিল পরিশোধ করার আশ্বাসে সংযোগ দেওয়া হয়।

 

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দ না পাওয়ায় পরিশোধ করা হয়নি। আবারও তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিল পরিশোধ করা হবে।

 

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান বলেন, হাসপাতালের কিছু যন্ত্রপাতি সচল রাখতে কলেজ থেকে লাইন দেওয়া হয়েছিল। তাতে কলেজের মিটারে অতিরিক্ত বিল আসে। এই বিল পরিশোধ করতে একটু সমস্যা হয়েছে। আগামী জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে যত সম্ভব বিল পরিশোধ করা হবে।

 

 

অধ্যক্ষ আরও বলেন, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা নিয়ে কথাবার্তায় যদি কর্মকর্তারা মন খারাপ করে থাকেন, তবে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখা হচ্ছে। দুটি প্রতিষ্ঠানই সেবামূলক ও সরকারি। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করা হবে।