রাজশাহীর তানোরে বিএনপির একাংশের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের ধাওয়ায় উপজেলা ও পৌর কৃষক দলের উদ্যোগে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান পন্ড হয়ে গেছে। স্থানীয়রা জানান, তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র এবং পরিক্ষিত, আদর্শিক, ত্যাগী ও তৃণমুলের নেতৃত্ব মিজানুর মিজানকে উপেক্ষা করে কর্মসুচি দেয়া হয়।।
এখবর ছড়িয়ে পড়লে বিএনপির মুলধারার আদর্শিক নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তাদের ধাওয়ায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল (অব) শরিফ উদ্দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতেই পারেনি। তানোর পৌরসভার সুমাসপুর মহল্লা থেকেই ফিরে যেতে বাধ্য হয়। এঘটনায় বিএনপির দুগ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ওদিকে পৌর বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক নেতাকর্মী বলেন, তানোর বিএনপির রাজনীতিতে মিজানকে উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নাই, তানোর বিএনপির রাজনীতি করলে মিজানের নেতৃত্ব মেনে নিয়েই রাজনীতি করতে হবে। মিজান তো উড়ে এসে জুড়ে বসা নেতৃত্ব নয, তিনি তৃণমুল থেকে তিলে তিলে গড়ে উঠা নেতৃত্ব।
এদিন যার একটি ট্রেলার দেখানো হয়েছে মাত্র। উপজেলা বিএনপির এক জৈষ্ঠ নেতা বলেন, শরিফ সাহেবের রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে, যেখানে দলের চেইন অব কমান্ড বা নেতৃত্বই ঠিক নাই, সেখানে কেনো তিনি এমন কর্মসূচি দিলেন। আবার কর্মসূচি যখন দিলেন তখন সেটা অবশ্যই পালন করবেন রাজনীতিতে তো বাধা আসবেই। তিনি তা না করে কৌশলে সটকে পড়লেন, কিন্ত্ত বিএনপির তৃণমুলে তিনি যে কোন্দলের বিঁষবাস্প ছড়িয়ে গেলেন এর দায় নিবে কে ?
জানা গেছে, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মনোনীত হয়েছেন মেজর জেনারেল (অব) শরিফ উদ্দিন। তিনি বেগম জিয়ার সামরিক সচিবও ছিলেন।
এদিকে গত ২৪ জুন সোমবার তানোর উপজেলা ও পৌরসভা কৃষক দলের উদ্যোগে গোকুল মহল্লার বাদলের বাড়ির উঠানে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল মেজর জেনারেল (অব) শরিফ উদ্দিনের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিন শরিফ উদ্দিনের আগমন ঠেকাতে দুপুর থেকেই বিএনপির একাংশের বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেন। এমনতাবস্থায় বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শরিফ উদ্দিনের আগমণের খবরে বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা তালন্দ বাজারে শরিফ উদ্দিনের অনুসারিদের ধাওয়া করে। অন্যদিকে মঞ্চ ভাঙচুর ও ব্যানার ছিড়ে মঞ্চে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এছাড়াও মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাস ভাঙচুর করা হয়।
এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। তা না হলে বড় ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো। ওদিকে পরিস্থিতি প্রতিকুল বুঝতে পেরেই মেজর জেনারেল অব শরিফ উদ্দিন সুমাসপুর মহল্লা থেকেই ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে।এবিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিম বলেন, কর্মসুচির কোনো অনুমতি ছিলো না। তিনি বলেন, উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
তবে এবিষয়ে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। এবিষয়ে সাবেক মেযর মিজানুর রহমান মিজান বলেন, তিনি ব্যবসার কাজে ঢাকায় আছেন। এবিষয়ে উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজান আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে ভাড়াটিয়া লোকজন দিয়ে মঞ্চ ভাঙচুর ও গাড়ি ভাঙচুর করে আয়োজন পন্ড করেছে। তারা এঘটনার তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি মিজানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন।
প্রিন্ট