রাজশাহীর বাঘায় আওয়ামী লীগের দুই গ্ৰুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ইট পাটকেল, ককটেল নিক্ষেপ এর ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে পৌণে এক ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল, বাঘা পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আক্কাস আলী, আড়ানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউর রহমান শফি, আব্দুল খালেক, জার্মান আলীসহ অন্তত অর্ধ শতাধিক আহত হয়েছে।
গুরুতর আহত আশরাফুল ইসলাম বাবুল ও রফিকুল ইসলামকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া সহ ভর্তি করা হয়েছে । তাৎক্ষণিক অপর আহতদের নাম জানা যায়নি। এছাড়াও পুলিশের ছোড়া টিয়ারসেলে পথচারী উজ্জ্বল আহত হয়।
শনিবার (২২জুন) উপজেলা পরিষদের সামনে এই ঘটনা ঘটে। জানা যায়, শনিবার বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে, বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাস আলীর সীমাহীন দুর্নীতি, স্বজন প্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে ।
অপরদিকে একই দিন সকাল দশটায় বাঘা উপজেলা সচেতন নাগরিকদের ব্যানারে, বাঘা সাব রেজিস্ট্রার অফিসের কতিপয় ব্যক্তি দলিল লেখক সমিতির নামে ক্রেতার কাছে জোর পূর্বক অতিরিক্ত টাকা আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। সকাল সাড়ে দশটায় উপজেলা পরিষদের সামনে আওয়ামী লীগের ব্যানারে আশরাফুল ইসলাম এর নেতৃত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য চলছিল। সেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াইজ সাদিক কবিরের সঞ্চালনায় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস সরকার বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় বাঘা উপজেলা সচেতন নাগরিকের ব্যানারে বাঘা পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আক্কাস আলী ও পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যাচ্ছিল।
এ সময় দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে দেশীয় অস্ত্র হাতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পৌণে এক ঘন্টা ব্যাপি সংঘর্ষ চলাকালীন সময় পুলিশ মাঝে মাঝে টিয়ারশেল ছুড়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
রফিকুল ইসলাম জানান, আমি বন্ধন কর্মসূচি তে সময় আমার উপর হামলা করে এবং মোটরসাইকেলের ট্যাংকি ভাঙচুর করে। পুলিশ জানায়, এমপি পক্ষ ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দীন পৌর মেয়র আক্কাস আলী গ্ৰুপের মধ্যে পূর্ব জের ধরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বাঘা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, কত রাউন্ড টিয়ারশেল ছুড়া হয়েছে, সেই হিসাব পরে জানানো যাবে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে ঘটনার পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাদিক কবীর জানান, প্রশাসনকে অবগত করে উপজেলা পরিষদের সামনে দলীয় লোকজন নিয়ে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বন্ধ কর্মসূচি পালন করছিলাম। এ সময় বাঘা পৌর মেয়র আক্কাস আলীর নেতৃত্বে অতর্কি হামলা চালানো হয়। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ অনেক নেতা কর্মী আহত হয়।
পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম মেরাজ জানান, বাঘা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কতিপয় ব্যক্তি দলিল লেখক সমিতির নামে ক্রেতার কাছে জোর পূর্বক অতিরিক্ত টাকা আদায়ের প্রতিবাদে সচেতন নাগরিকের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। সহমত পোষণ করে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তাদের উপর হামলা করে। এর আগে কর্মসূচি থেকে উস্কানি মূলক বক্তব্যে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন মেরাজ।
প্রিন্ট