ক্ষমতা বলে নিজের প্রতিষ্ঠানে ছেলেকে সিকিউরিটি গার্ডে নিয়োগের চেষ্টা ও অসুস্থ না হয়ে চিকিৎসা জনিত ছুটি ভোগ করাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার শিয়ালদী আদর্শ আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো.আনিচুর রহমানের বিরুদ্ধে।
অনিয়মের ঘটনায় বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর পহেলা জুন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি সানোয়ার আহমেদ।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৬ জুন উক্ত প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগকে কেন্দ্র করে তৎকালীন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আনিচুর রহমান অনিয়ম করে নিজ ছেলেকে নিয়োগের চেষ্টাসহ সুনির্দিষ্ট ৫টি অভিযোগসহ ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বরগর্ভনিং বডির মিটিংয়ে গৃহিত সিধান্ত মোতাবেক ১০ দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। বেধে দেওয়া সময়ের মধ্য নোটিশের জবাব না দিয়ে পরবর্তীতে দুই ধাপে ২৮ দিনের চিকিৎসা জনিত ছুটির আবেদন করেন এবং অফিস থেকে দপ্তরিক অনেক ফাইল নিয়ে নিজ জিম্মায় বাড়িতে রেখে ব্যক্তিগত কাজের মধ্যে সময় পার করেন।
২০২৪ সালের জানুয়ারী মাসে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সিধান্ত মোতাবেক প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান খানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে অফিসের কার্যক্রম চলমান রাখা হয়। সাবেক অধ্যক্ষর ২১ দিনের ছুটি মঞ্জুর করিয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দপ্তর বুঝাইয়া দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
সাবেক অধ্যক্ষ আনিচুর রহমান ১৪ জানুয়ারী ২০২৪ পর্যন্ত অসুস্থ না থেকেও চাতুরতা ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে রেজিষ্ট্রার ডাক্তারের ভূয়া চিকিৎসা পরমর্শ মোতাবেক ছুটি ভোগ করেন।
মাদ্রাসা পরিচানলা কমিটি ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি তদন্ত পূর্বক ৫ দিনের সময় দিয়ে মাদ্রসায় যোগদান করার জন্য নির্দেশ প্রদান করার পরেও তিনি যোগদান করেন নি। বরং ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ সালে আবারও মেডিকেল ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। এসময়ের মধ্যে তার চাকুরীর মেয়াদ উর্ত্তীণ হওয়ায় তিনি ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ সালে অবসরে চলে যান।
সাবেক অধ্যক্ষ দপ্তরিক কাগজপত্র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর নিকট বুঝিয়া না দেওয়ায় আলফাডাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গত ৭মার্চ ২০২৪ সালে স্বাক্ষতির নোর্টিশে মাদ্রাসার দাপ্তরিক কার্য্য নথিপত্র, ব্যাংক চেক, জমার বহি, এফডিআর স্লিপ ও আর্থিক একাডেমিক সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র সিজার লিষ্ট করে লিখিত ভাবে বুঝে দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্ত সাবেক অধ্যক্ষ আনিচুর রহমান শিক্ষা অফিসারের নির্দেশ উপেক্ষা করে কোনো কাগজপত্র বুঝে দেননি বলে অভিযোগ উঠে।
এ নিয়ে সাবেক অধ্যক্ষ আনিচুর রহমান জানান, আমি সরকারি বিধি মোতাবেক ছুটি নিয়ে অবসরে গিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোজ্জামেল হক বলেন, সাবেক অধ্যক্ষকে উক্ত প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র বুঝিয়া দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করার পরেও বুঝিয়া দেননি। বিষয়টি লিখিত ভাবে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে অবগত করেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমীন ইয়াসমীন বলেন, মাদ্রাসার দুই পক্ষের লোকজনের সাথে কথা বলেছি। এ ঘটনায় একজন অফিসারকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রিন্ট