ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

হত্যাকাণ্ডের ২৭ বছর পর যশোর আদালতে দুইজনের ৪২ বছরের কারাদণ্ড

যশোর সদরের দাইতলা গ্রামের আনোয়ার হোসেন হত্যাকাণ্ডের ২৭ বছর পর দুই আসামিকে ৪২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার বিশেষ দায়রা জজ ও বিশেষ জজ (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক এক রায়ে এ আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো, যশোর সদরের রায়মানিক গ্রামের মৃত মকবুল সরদারের ছেলে মোস্তফা সরদার ও বাক্কার সরদারের ছেলে আলীম সরদার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ মুস্তাফা রাজা। সাজাপ্রাপ্ত আসামি মোস্তফা সরদার ও আলীম সরদার পলাতক রয়েছে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, রায়মানিক গ্রামের মোস্তফা সরদার একটি মামলায় কারাগারে আটক ছিল। এর মধ্যে আনোয়ার হোসেন মোস্তার অনুপস্থিতিতে তার স্ত্রী জাহেদা বেগমের সাথে সম্পর্ক করে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এক বছর পর মোস্তফা সরদার মামলা থেকে খালাস পেয়ে বাড়ি ফিরে আনোয়ার হোসেনকে মারার পরিকল্পনা করতে থাকে। আনোয়ার হোসেন বিষয়টি বুঝতে পেরে পালিয়ে বেড়াতে থাকে। পরে তার কয়েকজনের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে আনোয়ার বাড়িতে ফিরে আসে। ১৯৯৬ সালের ৩১ জুলাই বিকেলে আনোয়ার হোসেন বাড়ি থেকে তার গ্যারেজে যাচ্ছিল।
এ সময় মোস্তফা, আলিম, হাসানসহ ৮ জন রাইফেল ও ছোরা নিয়ে আনোয়ারকে ধরে নিয়ে যায়। এ সময় তার পিতা ও প্রথম স্ত্রী বাধা দিলে তাদের ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে আনোয়ারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজি করে আনোয়ারকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয় স্বজনরা। পরদিন সকালে পাগলার বিলের হামিদপুর-কচুয়া রাস্তায় আনোয়ারের ক্ষত- বিক্ষত লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় ১ আগস্ট নিহত আনোয়ার হোসেন মোড়লের স্ত্রী রিজিয়া বেগম বাদী হয়ে মোস্তফা, আলিম, হাসান, আছাদ ও মফজেলসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসমি করে কোতয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের ২৫ জুন এজাহারনামীয় ৫ জনসহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলাম।
দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামি মোস্তফা সরদার ও আলীম সরদারের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ১ বছর করে কারাদণ্ড ও অপহরণের দায়ে প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম করে কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। এ মামলার অপর আসামি জাহেদা বেগম ও মোশারফ হোসেন মুসার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিচার চলাকালিন সময়ে হাসান, আছাদ মুন্সি ও মফজেলের মৃত্যু হওয়ায় পূর্বেই তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। রায়ে সাজা একই সাথে চলবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

হত্যাকাণ্ডের ২৭ বছর পর যশোর আদালতে দুইজনের ৪২ বছরের কারাদণ্ড

আপডেট টাইম : ০৯:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০২৪
যশোর সদরের দাইতলা গ্রামের আনোয়ার হোসেন হত্যাকাণ্ডের ২৭ বছর পর দুই আসামিকে ৪২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার বিশেষ দায়রা জজ ও বিশেষ জজ (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক এক রায়ে এ আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো, যশোর সদরের রায়মানিক গ্রামের মৃত মকবুল সরদারের ছেলে মোস্তফা সরদার ও বাক্কার সরদারের ছেলে আলীম সরদার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ মুস্তাফা রাজা। সাজাপ্রাপ্ত আসামি মোস্তফা সরদার ও আলীম সরদার পলাতক রয়েছে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, রায়মানিক গ্রামের মোস্তফা সরদার একটি মামলায় কারাগারে আটক ছিল। এর মধ্যে আনোয়ার হোসেন মোস্তার অনুপস্থিতিতে তার স্ত্রী জাহেদা বেগমের সাথে সম্পর্ক করে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এক বছর পর মোস্তফা সরদার মামলা থেকে খালাস পেয়ে বাড়ি ফিরে আনোয়ার হোসেনকে মারার পরিকল্পনা করতে থাকে। আনোয়ার হোসেন বিষয়টি বুঝতে পেরে পালিয়ে বেড়াতে থাকে। পরে তার কয়েকজনের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে আনোয়ার বাড়িতে ফিরে আসে। ১৯৯৬ সালের ৩১ জুলাই বিকেলে আনোয়ার হোসেন বাড়ি থেকে তার গ্যারেজে যাচ্ছিল।
এ সময় মোস্তফা, আলিম, হাসানসহ ৮ জন রাইফেল ও ছোরা নিয়ে আনোয়ারকে ধরে নিয়ে যায়। এ সময় তার পিতা ও প্রথম স্ত্রী বাধা দিলে তাদের ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে আনোয়ারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজি করে আনোয়ারকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয় স্বজনরা। পরদিন সকালে পাগলার বিলের হামিদপুর-কচুয়া রাস্তায় আনোয়ারের ক্ষত- বিক্ষত লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় ১ আগস্ট নিহত আনোয়ার হোসেন মোড়লের স্ত্রী রিজিয়া বেগম বাদী হয়ে মোস্তফা, আলিম, হাসান, আছাদ ও মফজেলসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসমি করে কোতয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের ২৫ জুন এজাহারনামীয় ৫ জনসহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলাম।
দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামি মোস্তফা সরদার ও আলীম সরদারের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ১ বছর করে কারাদণ্ড ও অপহরণের দায়ে প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম করে কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। এ মামলার অপর আসামি জাহেদা বেগম ও মোশারফ হোসেন মুসার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিচার চলাকালিন সময়ে হাসান, আছাদ মুন্সি ও মফজেলের মৃত্যু হওয়ায় পূর্বেই তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। রায়ে সাজা একই সাথে চলবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।