ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর তান্ডবে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার বেশিরভাগ ইউনিয়নে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ো বাতাস আর অস্বাভাবিক জোয়ারে বসতি হারিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছে প্রায় ৩৩ হাজার পরিবার। জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে গৃহপালিত অনেক প্রাণী ও মাছের ঘের। এখনও অনেক এলাকায় পানি না নামায় খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে গৃহ ও সম্বলহারা অনেক মানুষ। যেমন চরঘাসিয়া, ডালচর ও নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন সহ হাতিয়ার ১১ টি ইউনিয়ন কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নিঝুমদ্বীপে ঘরবাড়ি হারা কয়েক’শ পরিবার মানবেতর জীবন করছেন। কেউ নিজের বিধ্বস্ত ঘরে আবার কেউ অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। নতুন করে ঘর তোলা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন এসব পরিবার। স্থানীয়রা জানান, ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জোয়ারের লবনাক্ত পানি ডুকে ফসলের ক্ষেত ও পুকুরের মাছ মারা যাচ্ছে। ঝড়ের প্রভাব কেটে গেলেও ক্ষত চিহ্ন রয়ে গেছে নিঝুম দ্বীপে ৷
ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে একমাত্র আশ্রয়স্থল ঘরটি হারিয়ে নিঃস্ব দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপের মোল্লা গ্রামের তাসলিমা বেগমের পরিবার। দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া ঘরের চাল বেড়া পড়ে আছে ভিটির ওপর। ঘরের মালামাল ও ভিটির মাটি নিয়ে গেছে মেঘনা নদীর তীব্র জোয়ারের পানি। ঝড় থেমে গেলেও দুর্ভোগ থামেনি তাসলিমা বেগমের পরিবারের। বসবাসের অনুপোযোগী ঘরটি ছেড়ে ৪ সন্তান নিয়ে চারদিন ধরে পাশের গ্রামে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তাসলিমা বেগম।
একই গ্রামের লুবনা বেগমের বসত ঘরটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়। ভেসে যায় আসবাবপত্র সহ হাড়ি পাতিল। নিরুপায় হয়ে লুবনা অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। তাসলিমা, লুবনা ও বেল্লাল উদ্দিনের মতো নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের অর্ধ শতাধিক পরিবারের একই অবস্থা।
হাতিয়া উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, হাতিয়া উপজেলায় মোট ৩ হাজার ৪ শত ৯৮টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০১৩ গবাদিপশু, ৬৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
হাতিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশীক আলী অমি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের আস্বাস দিয়ে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে ৮০ শতাংশ রাস্তা নষ্ট হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে।
প্রিন্ট