কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার শাকদহচরের কিশোর জাহাবুল হত্যা মামলায় সামসুল আলম নামে এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো ১০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করেন আদালত।
সোমবার (২০ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কুষ্টিয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রুহুল আমিন এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় মামলার একমাত্র আসামি সামসুল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কড়া পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামি সামসুল আলম মিরপুর উপজেলার তালবাড়িয়া গ্রামের ফরমান আলীর ছেলে। কুষ্টিয়া জজ আদালতের কৌঁসুলি আ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ এবং আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকালে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার হালসা শাকদহচরের সাইফুল ইসলামের ছেলে জাহাবুল) স্যালোইঞ্জিন চালিত স্টারিং গাড়ি নিয়ে ভাদালিয়ার একটি ইটভাটার উদ্দেশ্যে বের হয়। তার পর থেকে তিনি নিখোঁজ হন। এরপর থেকে জাহাবুলের পরিবার বিভিন্ন খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান না পেয়ে পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করেন।
নিখোঁজের ১০ দিন পর ২৯ জানুয়ারির সকালে তালবাড়ীয়া পুরাতন বালুর ঘাটের বালুর স্তুপের নীনিচ থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে স্বজনরা গিয়ে লাশটি জাহাবুলের বলে শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় নিহত জাহাবুলের ভাই বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর কিছুদিন পর মামলার তদন্তভার যায় কুষ্টিয়ার পিআইবি’র হাতে। মামলার তদন্তভার পাওয়ার পর মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে সামসুলকে আটক করে পিআইবি। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জাহাবুলকে হত্যার দায় স্বীকার করে সামসুল।
সামসুল পুলিশকে জানান, জাহাবুলের গাড়িটিকে হাতিয়ে নেয়ার জন্য তার গাড়িটি ভাড়া করেন। বালুঘাটে নিয়ে পেছন থেকে গাড়ির হ্যান্ডেল দিয়ে মাথায় আঘাত করে জাহাবুলকে হত্যা করে বালুর নিচে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। তার দেখানো জায়গা থেকে জাহাবুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন জাহাবুল।