কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আবারোও পানের বরজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন টানা ৩ ঘণ্টা দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৫০ বিঘা পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ৩৫ জন কৃষকের প্রায় ৪ হাজার পিলি পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ভুক্তভোগী কৃষকরা দাবী করছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ২ কোটি টাকা।
ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের পাটুয়াকান্দি খুশিরপাড়া নামক জায়গায় অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটেছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আকাশ কুমার কুন্ডু ও ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ জহুরুল ইসলাম ঘটনার কথা জানিয়েছেন।
তারা আরো জানান, প্রায় ৩ ঘন্টার প্রচেষ্টায় ফায়ার সার্ভিসের ৩ টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২ টার সময় আগুনের সূত্রপাত ঘটে।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের পাটুয়াকান্দির ফরজ আলী ফরাজির পানের বরজে অগ্নিকাণ্ডের প্রথম সূত্রপাত হয়। তীব্র দাবদাহের কারণে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যেই আগুন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সাথে এলাকাবাসী চেষ্টা করে ৩ ঘন্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে প্রায় ৫০ বিঘা বরজের ৪ হাজার পিলি পান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ভুক্তভোগী কৃষকরা দাবী করছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ২ কোটি টাকা।
ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘ধারনা করা হচ্ছে শ্রমিকদের অসাবধানতা ও তীব্র দাবদাহের কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে। তবে ফায়ার সার্ভিস ও বিশেষজ্ঞ টিম এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবে।
এ ব্যাপারে ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শরীফুল ইসলাম বলেন, সংবাদ শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে ৩টি ইউনিট কাজ করে। প্রায় ৩ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পান বরজে আগুন লাগার ঘটনা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। পারে বিষয়টি তদন্ত করে বলা যাবে।
উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের পান চাষি পাটুয়াকান্দি গ্রামের ফরজ আলী বলেন, অগ্নিকাণ্ডে আমার সব স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সন্তানের মতো করে পানের বরজের যত্ন করেছিলাম। সবকিছু পুড়ে গেছে। আগুনে প্রায় ৫০ বিঘা বরজের ৪ হাজার পিলি পান পুড়েছে। আগুনে পুড়ে প্রায় ২কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। সরকারের কাছে আমি সাহায্য চাচ্ছি।
ধরমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামসুল হক ও ঐ এলাকার আওয়ামী যুবলীগের নেতা আজিজ বলেন, পান বরজে আকস্মিকভাবে একের পর এক পান বরজে আগুন লাগতে দেখে হতভম্ব হয়ে পড়ি। কেন বা বার বার এমন ঘটছে ঘটছে ? স্বানীয় প্রশাসনের লোকজনের প্রতি আকুল আবেদন বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করছি।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুন্ডু বলেছেন, বেলা সাড়ে ১২ টার সময় আগুনের সূত্রপাত হয়েছে শুনেই আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছেলাম। এলাকাবাসী সূত্রে শুনেছি ৪০-৫০ বিঘা পান বরজপুরে একেবারে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করার জন্য। আমরা সরকারের তরফ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার ব্যবস্থা করব।
প্রিন্ট