ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ১৩ গ্রামের মুসলমানরা সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন।
বুধবার (১০ এপ্রিল) এসব গ্রামের মানুষ সকালে ঈদের জামাত আদায় করেন। একদিন আগে ঈদুল ফিতর উদযাপন করা এরা সবাই চট্রগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার মাহমুদাবাদ মির্জাখিল দরবার শরিফের অনুসারী।
জানা গেছে, বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ও রূপাপাত ইউনিয়নের ১৩ গ্রামের ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে পবিত্র রোজা পালন শুরু করেন। এজন্য একদিন আগে ওই ১৩ গ্রামের মুসলমানরা ঈদ উদযাপন করে থাকেন।
বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ও রূপাপাত ইউনিয়নের সহস্রাইল, দড়ি সহস্রাইল, ভুলবাড়িয়া, বারাংকুলা, বড়গাঁ, মাইটকুমড়া, গঙ্গানন্দপুর, রাখালতলী, কাটাগড়, কলিমাঝি, বন্ডপাশা, জয়দেবপুর ও দিঘীরপাড় গ্রামের কয়েক হাজার মুসলমান আগাম ঈদ পালন করেন। এদের মধ্যে সহস্রাইল, মাইটকুমড়া, ও রাখালতলী গ্রামের মোট তিনটি স্থানে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
আলফাডাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও বোয়ালমারীর কাঁটাগড় গ্রামের বাসিন্দা মো. মাহিদুল হক বলেন, চট্টগ্রামের মির্জাখিল শরিফের অনুসারীরা সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সাথে মিল রেখে ঈদ পালন করেন। এখানে ঈদের নামাজ পড়তে মুহম্মদপুর, মুকসুদপুর, আলফাডাঙ্গাসহ বিভিন্ন উপজেলার মুসলমানরা উপস্থিত হন। এদের মধ্যে সহস্রাইল গ্রামে ঈদুল ফিতরের সব চেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে নামাজের ইমামতি করেন মুফতি সাইফুল্লাহ।
সহস্রাইল গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মীর বলেন, দুইশত বছর ধরে সহস্রাইল উত্তরপাড়া জামে মসজিদে, রাখালতলি ও মাইটকুমরা মসজিদে এসব মুসলমানরা জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কয়েক দফায় জামাত হয়। তিনি আরও বলেন, এটা শুরু করেন কোলকাতার আলীগড় মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শামসুল আরেফীন।
দিল্লুর রহমান বলেন, আমাদের বাপ-দাদাদের আমল থেকে আমরা সৌদির সাথে মিল রেখে একদিন আগে রোজা শুরু করি। এজন্য তাদের সাথে ঈদের নামাজ আদায় করে থাকি।
এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ বলেন, শেখর ও রুপাপাত ইউনিয়নের প্রায় ১৩টি গ্রামের আংশিক মানুষ সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে আগাম রোজা ও দুইটি ঈদ উদযাপন করে আসছেন। সে অনুযায়ী তারা আগাম ঈদ পালন করেন। গ্রামের অন্য সবাই আগামীকাল পবিত্র ঈদের নামাজ আদায় ও ঈদ পালন করবেন।
বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো.শহিদুল ইসলাম বলেন, সৌদির সাথে মিল রেখে উপজেলার তিনটি স্থানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। শান্তিপূর্ণ ভাবে তারা নামাজ আদায় করেছেন।
বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বোয়ালমারী উপজেলার কয়েকটি গ্রামে ঈদ পালিত হচ্ছে বলে আমি শুনেছি। তবে, কয়টা গ্রামে ঈদ পালিত হচ্ছে তা সুনির্দিষ্ট করে এখন বলতে পারছি না। চাইলে প্রয়োজনে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কথা বলে সঠিকটা জানাতে পারব।
প্রিন্ট