ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo মশক নিধনে আলফাডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিচ্ছন্নতা অভিযান Logo নরসিংদী পৌরসভা মোড়ে এনসিপির দেশব্যাপী “দেশ গড়তে জুলাই পথযাত্রা” সমাবেশ Logo বড়াইগ্রামে বিএনপি কর্মী দ্বারা অধ্যক্ষকে অপদস্থ করার প্রতিবাদে মানববন্ধন Logo দৌলতপুরে গলায় ফাঁস নিয়ে যুবকের আত্মহত্যা Logo দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক ২ জেলা প্রশাসকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান Logo হাতিয়ায় আকবর হোসেন স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত Logo প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে রূপগঞ্জে বিক্ষোভ Logo মাত্র ৩৪ ঘণ্টার মধ্যে চোরাই ১০ লাখ ৯৫ হাজার টাকা উদ্ধার, চোর গ্রেপ্তার Logo চাঁদা আদায়ের অভিযোগে বেনাপোল বন্দরের ৬০ জন আনসার সদস্যকে বদলী Logo লন্ডনে গবেষণা স্মারক কালের অভিজ্ঞানের মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠিত
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

তানোরে ভুয়া প্রতিবন্ধী দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ

আলিফ হোসেনঃ

 

রাজশাহীর তানোরে সরকারি ভাতা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে সুস্থ মানুষকে ‘প্রতিবন্ধী’ সাজিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া সনদ বানানোর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে।স্থানীয় বাসিন্দা সাদিউর রহমান এ বিষয়ে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।জালিয়াতির মূলহোতা হিসেবে বাধাইড় ইউনিয়নের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) ও কৃষক লীগের ওয়ার্ড সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এবং তার স্ত্রী পলি আক্তারের নাম এসেছে। এদিকে একজন প্রতিবন্ধী যখন বছরের পর বছর ঘুরেও একটা কার্ড পাচ্ছে না, তখন সুস্থ মানুষকে প্রতিবন্ধী দেখিয়ে কার্ড দেয়ার ঘটনায় এলাকাবাসি বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।তারা এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।

 

এদিকে লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম নিজের সুস্থ-সবল পিতা নুরুল ইসলাম, মা জাহানারা বেগম এবং স্ত্রী পলি আক্তারকে দৃষ্টি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী সাজিয়ে ভুয়া সনদ তৈরি করিয়ে দেন এবং সরকারের প্রদত্ত ভাতা উত্তোলন করেন।

 

এছাড়া শিবরামপুর গ্রামের আরো ১৭ জন সুস্থ ব্যক্তি ও ১০-১৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি একইভাবে ভুয়া সনদ নিয়ে প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণ করছেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ভুয়া সনদ পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন। এতে প্রকৃত প্রতিবন্ধীরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এক নজিরবিহীন তথ্য উঠে এসেছে দরিদ্র দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সুশীল নামের এক ব্যক্তিকে ঘিরে। তাকে একটি সনদের জন্য তার কাছে ৫ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়া হয়। তিনি ৪ হাজার টাকা দেওয়ার পরেও এখনো পর্যন্ত সনদ পাননি।

 

এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেন জানান, “অভিযোগটি গুরুত্বসহকারে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রমাণ মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী পলি আক্তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সব কিছু নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে, কোনো ঘুষ নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত সালমান বলেন, “বিষয়টি তদন্তাধীন। প্রমাণ মিললে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

স্থানীয়দের প্রশ্ন, “নিয়ম অনুযায়ী হলে একজন সুস্থ মানুষ কীভাবে প্রতিবন্ধী সনদ পান ? আর প্রকৃত প্রতিবন্ধী টাকা দিয়েও কেন বঞ্চিত হন?” এই প্রতারণা ও দুর্নীতির ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর দাবি, এ ধরনের জঘন্য অপরাধের দ্রুত তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর অসহায় জনগণের প্রাপ্য সুবিধা ছিনিয়ে নিতে না পারে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মশক নিধনে আলফাডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিচ্ছন্নতা অভিযান

error: Content is protected !!

তানোরে ভুয়া প্রতিবন্ধী দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ

আপডেট টাইম : ২৩ ঘন্টা আগে
আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি :

আলিফ হোসেনঃ

 

রাজশাহীর তানোরে সরকারি ভাতা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে সুস্থ মানুষকে ‘প্রতিবন্ধী’ সাজিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া সনদ বানানোর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে।স্থানীয় বাসিন্দা সাদিউর রহমান এ বিষয়ে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।জালিয়াতির মূলহোতা হিসেবে বাধাইড় ইউনিয়নের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) ও কৃষক লীগের ওয়ার্ড সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এবং তার স্ত্রী পলি আক্তারের নাম এসেছে। এদিকে একজন প্রতিবন্ধী যখন বছরের পর বছর ঘুরেও একটা কার্ড পাচ্ছে না, তখন সুস্থ মানুষকে প্রতিবন্ধী দেখিয়ে কার্ড দেয়ার ঘটনায় এলাকাবাসি বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।তারা এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।

 

এদিকে লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম নিজের সুস্থ-সবল পিতা নুরুল ইসলাম, মা জাহানারা বেগম এবং স্ত্রী পলি আক্তারকে দৃষ্টি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী সাজিয়ে ভুয়া সনদ তৈরি করিয়ে দেন এবং সরকারের প্রদত্ত ভাতা উত্তোলন করেন।

 

এছাড়া শিবরামপুর গ্রামের আরো ১৭ জন সুস্থ ব্যক্তি ও ১০-১৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি একইভাবে ভুয়া সনদ নিয়ে প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণ করছেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ভুয়া সনদ পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন। এতে প্রকৃত প্রতিবন্ধীরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এক নজিরবিহীন তথ্য উঠে এসেছে দরিদ্র দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সুশীল নামের এক ব্যক্তিকে ঘিরে। তাকে একটি সনদের জন্য তার কাছে ৫ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়া হয়। তিনি ৪ হাজার টাকা দেওয়ার পরেও এখনো পর্যন্ত সনদ পাননি।

 

এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেন জানান, “অভিযোগটি গুরুত্বসহকারে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রমাণ মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী পলি আক্তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সব কিছু নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে, কোনো ঘুষ নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত সালমান বলেন, “বিষয়টি তদন্তাধীন। প্রমাণ মিললে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

স্থানীয়দের প্রশ্ন, “নিয়ম অনুযায়ী হলে একজন সুস্থ মানুষ কীভাবে প্রতিবন্ধী সনদ পান ? আর প্রকৃত প্রতিবন্ধী টাকা দিয়েও কেন বঞ্চিত হন?” এই প্রতারণা ও দুর্নীতির ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর দাবি, এ ধরনের জঘন্য অপরাধের দ্রুত তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর অসহায় জনগণের প্রাপ্য সুবিধা ছিনিয়ে নিতে না পারে।


প্রিন্ট