ঢাকা , শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‌ স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন Logo সদরপুরে পাটের ফলন ভাল হওয়ায় ক্ষেত পরিচর্যা করছে কৃষকেরা Logo তানোরে রাস্তায় নিম্নমানের বিটুমিন ও ইটের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ Logo দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে গোসল করতে গিয়ে কিশোর নিখোঁজ Logo শেখ হাসিনাকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন Logo আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন লেখক হোসেনউদ্দীন হোসেনের জীবন সংকটাপন্ন Logo নাগরপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী বিএনপি নেতা দুলাল বহিষ্কার Logo তানোরে পলিনেট হাউস প্রকল্পে অনিয়ম! Logo মাগুরায় বোরো ধানে সমলয় চাষাবাদে পানি সাশ্রয়ী সেচ প্রযুক্তি মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo মাগুরায় হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সুষ্ঠ তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ভেড়ামারায় বাঙ্গির বাম্পার ফলন, ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা

ভেড়ামারায় স্থানীয় ভাষায় কাকর নামে সবাই চিনলেও স্থান ভেদে এর অপর নাম বাঙ্গি, খরমুজ, কাঁকুড় ইত্যাদি। নাম যাই হোক বাঙ্গি একটি স্বাস্থ্যকর ফল। পুষ্টিগুনে ভরপুর এবং অনেক উপকোরী ফল এটি। কাকর বা বাঙ্গি এক রকমের শশা জাতীয় ফল। তবে বাঙ্গি শশার চেয়ে বেশ বড় হয়। কাঁচা বাঙ্গি সবুজ, পাকলে হলুদ রঙের হয়। এর বাইরের দিকটা মিষ্টি কুমড়ার মত হালকা ডোরাকাট খাজযুক্ত এবং ভেতরের দিকটা ফাকা।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলন ভাল হয়েছে বলে জানান কৃষকেরা।

বাঙ্গি চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা বাঙ্গি চাষে ঝুকছে। গত বছরের এ উপজেলায় কৃষি বিভাগের তথ্য মতে ৫০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ হয়েছে। উপজেলার বার মাইল, কুচিয়ামােড়া, গােলাপ নগর চর গ্রামে দিগন্তজোড়া মাঠে শুধু সবুজ আর সবুজের সমারোহ। এই সবুজের মাঝে থরে থরে সাজানো আছে বড় বড় বাঙ্গি।

দেখলে শুধু চোখ নয়, মনও জুড়িয়ে যায়। গতকাল সকালে উপজেলা চর মােকািরমপুর গ্রামে বাঙ্গি ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে কৃষকের কর্মব্যস্ততা। কেহ বিক্রীর জন্য ক্ষেত থেকে বাঙ্গি তুলছে কেহ আবার বাঙ্গি গাছে পানি দিচ্ছে।

বাঙ্গি চাষি আলীম হোসেন জানান, তিনি, বাহার ও নাসির মিলে এবার ২৪ বিঘা (১৮ একর) জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছেন। এতে তাদের ৪ লক্ষ টাকার মত খরচ হয়েছে। গত বছর একই পরিমান জমির বাঙ্গি ৮ লাখ টাকায় বিক্রী করেছেন। এবার তারা ৮ হাজার গর্তে ৩২ হাজার (প্রতি গর্তে ৪টি) চারা লাগিয়েছেন। এক্ষেত্রে একটি গর্তে ৩টি করে বাঙ্গি হলেও ২৪ হাজার বাঙ্গি বিক্রীর আশা করছেন তিনি।

কৃষক সলিম হােসেন বলেন, রমজানের কারনে বাঙ্গির দাম ভাল থাকায় এবার ৩ লাখ টাকার বেশি বিক্রীর আশা করছেন। বর্তমানে ক্ষেত থেকে প্রতিটি বাঙ্গি পাইকারিরা গড়ে ৭৫ টাকা দরে কিনে নিয়েছেন।

 

চাষী বাহার শেখ জানান, আগে যে বাঙ্গি তারা ৪০ টাকা দরে বেচত এবার তা ৭০/৮০ টাকা দরে বিক্রী হচ্ছে। এভাবে দাম থাকলে ভাল লাভ হবে বলে জানান তিনি।

কৃষক সালেক হোসেন দুঃখ করে বলেন ভেড়ামারায় চাষীদের বাঙ্গি চাষে আগ্রহ বাড়ছে। বাঙ্গি কিনতে আসা বেপারী আব্দুল লতিফ বলেন ভেড়ামারা অঞ্চলের ভাঙ্গি মানে ভাল। তাই তিনি এখানে বাঙ্গি কিনতে এসেছেন।

লতিফ বেপারী জানান, তিনি কৃষকের ক্ষেত থেকে ৭৫/৮০ টাকা দরে প্রতিটি ভাঙ্গি কিনেছেন। ক্ষেত থেকে এনে গাড়ীতে উঠানো এবং গাড়ী ভাড়া দিয়ে ঢাকায় আড়ত পর্যন্ত পৌছাতে বাঙ্গি প্রতি আরো প্রায় ১৩/১৪ টাকা খরচ হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা সুলতানা বলেন, উপজেলার মাটি বাঙ্গি চাষের উপযোগী। উপজেলায় এ বছর ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৩০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ হয়েছে। গত বছর এখানে ২৫ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ হলেও ফলন ভাল এবং লাভ বেশি হওয়ায় চাষীরা বাঙ্গি চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এ বছর আমাদেরর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। আগামীতে আরো বেশি পরিমান জমিতে বাঙ্গি চাষের আশা করছি।

 

 

বাঙ্গি অনেক রোগের উপকারী একটি ফল। বাঙ্গিতে প্রচুর ক্যালরি রয়েছে। এতে খাদ্য উপাদান হিসাবে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-এ, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম প্রচুর পরিমানে আছে। তাই গ্রীষ্মকালে এবং ইফতারিতে বাঙ্গি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, অ্যাসিডিটি, আলসার, নিদ্রাহীনতা, ক্ষুধা মন্দাসহ অনেক রোগের প্রতিকার করে থাকে। বাঙ্গি দেহের ওজন কমাতে ও ত্বকের নানা রকমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‌ স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন

error: Content is protected !!

ভেড়ামারায় বাঙ্গির বাম্পার ফলন, ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা

আপডেট টাইম : ০৩:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০২৪

ভেড়ামারায় স্থানীয় ভাষায় কাকর নামে সবাই চিনলেও স্থান ভেদে এর অপর নাম বাঙ্গি, খরমুজ, কাঁকুড় ইত্যাদি। নাম যাই হোক বাঙ্গি একটি স্বাস্থ্যকর ফল। পুষ্টিগুনে ভরপুর এবং অনেক উপকোরী ফল এটি। কাকর বা বাঙ্গি এক রকমের শশা জাতীয় ফল। তবে বাঙ্গি শশার চেয়ে বেশ বড় হয়। কাঁচা বাঙ্গি সবুজ, পাকলে হলুদ রঙের হয়। এর বাইরের দিকটা মিষ্টি কুমড়ার মত হালকা ডোরাকাট খাজযুক্ত এবং ভেতরের দিকটা ফাকা।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলন ভাল হয়েছে বলে জানান কৃষকেরা।

বাঙ্গি চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা বাঙ্গি চাষে ঝুকছে। গত বছরের এ উপজেলায় কৃষি বিভাগের তথ্য মতে ৫০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ হয়েছে। উপজেলার বার মাইল, কুচিয়ামােড়া, গােলাপ নগর চর গ্রামে দিগন্তজোড়া মাঠে শুধু সবুজ আর সবুজের সমারোহ। এই সবুজের মাঝে থরে থরে সাজানো আছে বড় বড় বাঙ্গি।

দেখলে শুধু চোখ নয়, মনও জুড়িয়ে যায়। গতকাল সকালে উপজেলা চর মােকািরমপুর গ্রামে বাঙ্গি ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে কৃষকের কর্মব্যস্ততা। কেহ বিক্রীর জন্য ক্ষেত থেকে বাঙ্গি তুলছে কেহ আবার বাঙ্গি গাছে পানি দিচ্ছে।

বাঙ্গি চাষি আলীম হোসেন জানান, তিনি, বাহার ও নাসির মিলে এবার ২৪ বিঘা (১৮ একর) জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছেন। এতে তাদের ৪ লক্ষ টাকার মত খরচ হয়েছে। গত বছর একই পরিমান জমির বাঙ্গি ৮ লাখ টাকায় বিক্রী করেছেন। এবার তারা ৮ হাজার গর্তে ৩২ হাজার (প্রতি গর্তে ৪টি) চারা লাগিয়েছেন। এক্ষেত্রে একটি গর্তে ৩টি করে বাঙ্গি হলেও ২৪ হাজার বাঙ্গি বিক্রীর আশা করছেন তিনি।

কৃষক সলিম হােসেন বলেন, রমজানের কারনে বাঙ্গির দাম ভাল থাকায় এবার ৩ লাখ টাকার বেশি বিক্রীর আশা করছেন। বর্তমানে ক্ষেত থেকে প্রতিটি বাঙ্গি পাইকারিরা গড়ে ৭৫ টাকা দরে কিনে নিয়েছেন।

 

চাষী বাহার শেখ জানান, আগে যে বাঙ্গি তারা ৪০ টাকা দরে বেচত এবার তা ৭০/৮০ টাকা দরে বিক্রী হচ্ছে। এভাবে দাম থাকলে ভাল লাভ হবে বলে জানান তিনি।

কৃষক সালেক হোসেন দুঃখ করে বলেন ভেড়ামারায় চাষীদের বাঙ্গি চাষে আগ্রহ বাড়ছে। বাঙ্গি কিনতে আসা বেপারী আব্দুল লতিফ বলেন ভেড়ামারা অঞ্চলের ভাঙ্গি মানে ভাল। তাই তিনি এখানে বাঙ্গি কিনতে এসেছেন।

লতিফ বেপারী জানান, তিনি কৃষকের ক্ষেত থেকে ৭৫/৮০ টাকা দরে প্রতিটি ভাঙ্গি কিনেছেন। ক্ষেত থেকে এনে গাড়ীতে উঠানো এবং গাড়ী ভাড়া দিয়ে ঢাকায় আড়ত পর্যন্ত পৌছাতে বাঙ্গি প্রতি আরো প্রায় ১৩/১৪ টাকা খরচ হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা সুলতানা বলেন, উপজেলার মাটি বাঙ্গি চাষের উপযোগী। উপজেলায় এ বছর ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৩০ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ হয়েছে। গত বছর এখানে ২৫ হেক্টর জমিতে বাঙ্গি চাষ হলেও ফলন ভাল এবং লাভ বেশি হওয়ায় চাষীরা বাঙ্গি চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এ বছর আমাদেরর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। আগামীতে আরো বেশি পরিমান জমিতে বাঙ্গি চাষের আশা করছি।

 

 

বাঙ্গি অনেক রোগের উপকারী একটি ফল। বাঙ্গিতে প্রচুর ক্যালরি রয়েছে। এতে খাদ্য উপাদান হিসাবে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-এ, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম প্রচুর পরিমানে আছে। তাই গ্রীষ্মকালে এবং ইফতারিতে বাঙ্গি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, অ্যাসিডিটি, আলসার, নিদ্রাহীনতা, ক্ষুধা মন্দাসহ অনেক রোগের প্রতিকার করে থাকে। বাঙ্গি দেহের ওজন কমাতে ও ত্বকের নানা রকমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।