ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বাংলাদেশের গতানুগতিক রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে তুলবঃ-হান্নান মাসউদ Logo অবৈধ সম্পদঃ হানিফ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা Logo বিএনপিতে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলবাজদের স্থান নেইঃ -রুহুল কবির রিজভী Logo এবছর উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ হয়েছে কেশবপুর উপজেলা Logo ঝালকাঠিতে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য ফরম বিতরণ কার্যক্রমে গতি আনতে জেলা সমন্বয়ক টিম গঠন Logo কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুরে জেলা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল‌ অনুষ্ঠিত Logo লালপুরে অগ্নিকাণ্ডে পুড়লো খামারির স্বপ্ন Logo কালুখালীতে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত Logo নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে শিক্ষিকার দীর্ঘ অনুপস্থিতিঃ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে Logo ফরিদপুরে ২৭টি “ভূমি সেবা সহায়তা কেন্দ্র” উদ্বোধন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

গোমস্তাপুরে পেঁয়াজের বীজ চাষ করে সফলতার সম্ভাবনা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কুজিন মৌজায় কুজিন এলাকার দিগন্ত জোড়া মাঠে দেখা মেলে সাদা রংয়ের ফুলে ভরা পেঁয়াজ বীজের ক্ষেত। এসব ক্ষেত থেকে শুধু কৃষকেরাই লাভবান হননি। পাশাপাশি স্থানীয় বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে। মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে পেঁয়াজ বীজের সাদা ফুল আর এই সাদা ফুলের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। পেঁয়াজ বীজ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন এলাকার কৃষকরা।

পেঁয়াজের বীজ চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখে আশায় বুক বেধেছেন গ্রামটির কৃষক মোঃ মাসুদ হোসেন । এ বছর তিনি প্রায় ৩ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করেছেন। তার উৎপাদিত পেঁয়াজ বীজ সরবরাহ করা হয় দেশের বিভিন্ন জেলায়। ফলন ভালো হওয়ায় প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা মুনাফার আশা করছেন তিনি। মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের জন্য উপযোগী হওয়ায় এ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন উপজেলার অনেক কৃষক।

পিয়াজ ক্ষেতে দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মজুরিতে কাজ করেন স্থানীয় যুবকেরা। তারা উপার্জিত অর্থ দিয়ে পরিবারকে সহয়তা করছেন।

গোমস্তাপুর উপজেলার বিয়ানা গ্রামে মাসুদের মতো আরও অনেক কৃষক শত বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনের জন্য চাষ করেছেন। এলাকার ফসলি মাঠগুলোর দিকে তাকালে চোখে পড়ে শুধু কদম ফুল আকৃতির সবুজ সাদা শুভ্র ফুল আর ফুল। চোখ ও মন জুড়ানো সবুজ ও সাদা ফুল থেকে এক-দুটো মৌমাছির মধু আহরণ প্রকৃতিতে এনে দিয়েছে এক অনন্য মনোরম দৃশ্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

দেখা যায়, সকাল হলেই এসব বীজ ক্ষেতের পরিচর্যায় সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কেউ সেচ দিতে, কেউ আবার পোকা দমনের কীটনাশক স্প্রে নিয়ে, কেউ হাতের আলতো ছোঁয়ায় পরাগায়ন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এতে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ ও পড়াশোনার পাশাপাশি অনেক কিশোর-কিশোরীরাও এসব কাজ করছেন।

তবে কয়েকজন চাষি জানালেন, সাধারণত নভেম্বর মাস বীজতলায় বা জমিতে পেঁয়াজ বীজ বপনের সময়। বীজ পরিপক্ব হতে সময় লাগে ১৩০ থেকে ১৪০ দিন। পরাগায়ন না হলে পেঁয়াজ ফুলে পরিপক্বতা আসে না। আর এসব ফুলে পরাগায়নের প্রধান মাধ্যম হলো মৌমাছি। পোকার আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচাতে কৃষকেরা খেতে কীটনাশক ছেটান। কিন্তু সেই কীটনাশকে মারা পড়ছে উপকারী পোকা ও মৌমাছি। এ কারণে পেঁয়াজ বীজের ক্ষেতে দিন দিন মৌমাছির আনাগোনা কমে যাচ্ছে। তাই ঝাড়ু ও হাতের স্পর্শে কৃত্রিমভাবে পরাগায়নের চেষ্টা চলছে।

 

গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তানভীর আহমেদ সরকার জানান, উপজেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজ আবাদ হয়েছে। এসব পেঁয়াজ বীজের মধ্যে রয়েছে লাল তীর কিং, তাহেরপুড়িসহ বিভিন্ন জাত। যা গত বছরের তুলনায় ৪০ বিঘা বেশী। প্রতি হেক্টরে ৯০০ থেকে ১০০০ কেজি বীজ উৎপাদনের আশা রয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশের গতানুগতিক রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে তুলবঃ-হান্নান মাসউদ

error: Content is protected !!

গোমস্তাপুরে পেঁয়াজের বীজ চাষ করে সফলতার সম্ভাবনা

আপডেট টাইম : ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪
মোঃ আবদুস সালাম তালুকদার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কুজিন মৌজায় কুজিন এলাকার দিগন্ত জোড়া মাঠে দেখা মেলে সাদা রংয়ের ফুলে ভরা পেঁয়াজ বীজের ক্ষেত। এসব ক্ষেত থেকে শুধু কৃষকেরাই লাভবান হননি। পাশাপাশি স্থানীয় বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে। মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে পেঁয়াজ বীজের সাদা ফুল আর এই সাদা ফুলের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। পেঁয়াজ বীজ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন এলাকার কৃষকরা।

পেঁয়াজের বীজ চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখে আশায় বুক বেধেছেন গ্রামটির কৃষক মোঃ মাসুদ হোসেন । এ বছর তিনি প্রায় ৩ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করেছেন। তার উৎপাদিত পেঁয়াজ বীজ সরবরাহ করা হয় দেশের বিভিন্ন জেলায়। ফলন ভালো হওয়ায় প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা মুনাফার আশা করছেন তিনি। মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের জন্য উপযোগী হওয়ায় এ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন উপজেলার অনেক কৃষক।

পিয়াজ ক্ষেতে দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মজুরিতে কাজ করেন স্থানীয় যুবকেরা। তারা উপার্জিত অর্থ দিয়ে পরিবারকে সহয়তা করছেন।

গোমস্তাপুর উপজেলার বিয়ানা গ্রামে মাসুদের মতো আরও অনেক কৃষক শত বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনের জন্য চাষ করেছেন। এলাকার ফসলি মাঠগুলোর দিকে তাকালে চোখে পড়ে শুধু কদম ফুল আকৃতির সবুজ সাদা শুভ্র ফুল আর ফুল। চোখ ও মন জুড়ানো সবুজ ও সাদা ফুল থেকে এক-দুটো মৌমাছির মধু আহরণ প্রকৃতিতে এনে দিয়েছে এক অনন্য মনোরম দৃশ্য এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

দেখা যায়, সকাল হলেই এসব বীজ ক্ষেতের পরিচর্যায় সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কেউ সেচ দিতে, কেউ আবার পোকা দমনের কীটনাশক স্প্রে নিয়ে, কেউ হাতের আলতো ছোঁয়ায় পরাগায়ন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এতে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ ও পড়াশোনার পাশাপাশি অনেক কিশোর-কিশোরীরাও এসব কাজ করছেন।

তবে কয়েকজন চাষি জানালেন, সাধারণত নভেম্বর মাস বীজতলায় বা জমিতে পেঁয়াজ বীজ বপনের সময়। বীজ পরিপক্ব হতে সময় লাগে ১৩০ থেকে ১৪০ দিন। পরাগায়ন না হলে পেঁয়াজ ফুলে পরিপক্বতা আসে না। আর এসব ফুলে পরাগায়নের প্রধান মাধ্যম হলো মৌমাছি। পোকার আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচাতে কৃষকেরা খেতে কীটনাশক ছেটান। কিন্তু সেই কীটনাশকে মারা পড়ছে উপকারী পোকা ও মৌমাছি। এ কারণে পেঁয়াজ বীজের ক্ষেতে দিন দিন মৌমাছির আনাগোনা কমে যাচ্ছে। তাই ঝাড়ু ও হাতের স্পর্শে কৃত্রিমভাবে পরাগায়নের চেষ্টা চলছে।

 

গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তানভীর আহমেদ সরকার জানান, উপজেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজ আবাদ হয়েছে। এসব পেঁয়াজ বীজের মধ্যে রয়েছে লাল তীর কিং, তাহেরপুড়িসহ বিভিন্ন জাত। যা গত বছরের তুলনায় ৪০ বিঘা বেশী। প্রতি হেক্টরে ৯০০ থেকে ১০০০ কেজি বীজ উৎপাদনের আশা রয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা।


প্রিন্ট