রাজবাড়ী জেলার পাংশা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের পরপর ৪বার নির্বাচিত কাউন্সিলর ও ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বাদশা মন্ডলের বাড়ীতে প্রতিপক্ষের লোকজন ভাংচুর-লুটপাট করে ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে।
রবিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে প্রতিপক্ষের লোকজন নারায়নপুর রেললাইনের দক্ষিণে বৈরাগী ও নিকেরি পাড়ায় বাদশা মন্ডলের বাড়ীতে তান্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন এবং পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
পূর্বের (১০মে) সংঘটিত গোলযোগের ঘটনায় প্রতিপক্ষ কোরবান চৌধুরীর দায়েরকৃত মামলার আসামী হয়ে কাউন্সিলর বাদশা মন্ডল ও তার দুইপুত্র রাকিবুল ও মিজানসহ তাদের সমর্থিত একই এলাকার ২৩/২৪ জন পলাতক থাকার সুযোগে তান্ডবের ঘটনায় পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন।
খবর পেয়ে রবিবার ১৬মে সকাল সাড়ে ৯টায় পাংশা মডেল থানার এসআই আমজাদ হোসেনের নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের নারায়নপুর রেললাইনের দক্ষিণে বৈরাগী ও নিকেরি পাড়ায় বাদশা মন্ডলের নিজবাড়ীর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এছাড়া সকাল ১০টার দিকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজনের শান্তনা ও অভয় দেন।
প্রতিনিধিদলে ছিলেন- পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও পাংশা সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ, পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাছপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান খোন্দকার সাইফুল ইসলাম (বুড়ো), পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পাংশা পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল আল মাসুদ বিশ্বাস, পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও অবসরপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. এএফএম শফীউদ্দিন (পাতা), পাংশা পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের পরপর ৫বার নির্বাচিত কাউন্সিলর ওদুদ সরদার, পাংশা উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক ফজলুল হক ফরহাদ, পাংশা উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও পাংশা উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জালাল বিশ্বাস, পাংশা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহিদুল ইসলাম মারুফ, পাংশা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সরদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা ও সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান প্রমূখ।
ক্ষতিগ্রস্ত কাউন্সিলর বাদশা মন্ডলের পুত্রবধূ মৌসুমী খাতুন জানান, প্রতিপক্ষ কোরবান চৌধুরীর দায়েরকৃত মামলার আসামী হওয়ার কারণে তাদের পরিবারের পুরুষ লোকজন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বাড়ীতে শুধুমাত্র আমি (মৌসুমী) ও আমার ননদ রেশমা আছি। আমাদের বাড়ীতে ঈদের আনন্দ নেই। শুধু আমাদের বাড়ীতেই না, আমার শ্বশুর বাদশা মন্ডলের সাথে আসামী হওয়া ২৩/২৪ টি পরিবারে ঈদ আনন্দ নেই। সবাই পালিয়ে আছে।
প্রতিপক্ষের পুরুষ-মহিলারা উস্কানীমূলক নানা কথা বলছে। মৌসুমী খাতুন জানান, বাড়ীর ৪টি কক্ষের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাংচুর-তছনছ করে। দুর্বৃত্তরা নগদ দেড়-দুই লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুণ্ঠন করে নিয়ে গেছে। ঘটনার পর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন আতংকের মধ্যে রয়েছে।
এদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও অবসরপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. এএফএম শফীউদ্দিন (পাতা) ঘটনার জন্য সরাসরি কোরবান চৌধুরীকে দায়ী করেন। ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান তিনি।
প্রসঙ্গতঃ চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত পাংশা পৌরসভা নির্বাচনে ৬নং ওয়ার্ডের প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন কোরবান চৌধুরী। বিগত পৌরসভা নির্বাচনে বাদশা মন্ডলের কাছে ৪৮৬ ভোটে পরাজিত হন কোরবান চৌধুরী। বাদশা মন্ডল পাঞ্জাবি প্রতীকে ১ হাজার ৮৫ ভোট পান। প্রতিদ্ব›দ্বী কোরবান চৌধুরী ডালিম প্রতীকে ৫৯৯ ভোট পান। নির্বাচনের শুরু থেকেই উভয় গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত লেগেই আছে।
প্রিন্ট