ইসমাইল হােসেন বাবুঃ
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে উপবৃত্তির প্রলোভন দেখিয়ে এক ছাত্রীকে লাইব্রেরিতে ডেকে নিয়ে অশালীন আচরণ ও কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষক রেজাউল করিম মিলন, যিনি চৌরঙ্গী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ভুক্তভোগী ছাত্রী একই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
.
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেল ৩টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ছাত্রীর মা। অভিযোগপত্রে ছাত্রীর মা উল্লেখ করেন, গত ১২ মে, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইংরেজি ক্লাস চলাকালে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক উম্মত আলী উপবৃত্তি দেওয়ার কথা বলে তাঁর মেয়েকে লাইব্রেরিতে ডেকে নিয়ে যান এবং প্রধান শিক্ষকের কাছে রেখে আসেন।
.
সেখানে প্রধান শিক্ষক প্রথমে উপবৃত্তি ও মোবাইল ফোন কিনে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর তিনি ছাত্রীর হাত ধরে, মুখে ও হাতে চুমু দেন এবং বুকে জড়িয়ে ধরেন। এ সময় তিনি প্রশ্ন করেন, ‘তোমার মাসিক শুরু হয়েছে কি না?’ এরপর প্রধান শিক্ষক মেয়েটিকে বলেন, প্রস্রাব একটি কৌটায় করে পরদিন (১৩ মে) সকাল ৮টায় বিদ্যালয়ের ওয়াশরুমে রাখতে। ঘটনার পর থেকে ছাত্রীটি আতঙ্কে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়।
.
ছাত্রীর মা জানান, সেদিন মেয়ে বাসায় ফিরে কান্নায় ভেঙে পড়ে। জিজ্ঞাসা করলে সব ঘটনা খুলে বলে এবং জানায়, প্রধান শিক্ষক বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য হুমকি দিয়েছেন। পরবর্তীতে শিক্ষক মোবাইল ফোনে হুমকি দিতে থাকেন এবং বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি লোকজন পাঠিয়ে আপস-মীমাংসার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীর মা।
.
ছাত্রীর চাচা জানান, প্রধান শিক্ষক বারবার ফোন করে হুমকি দিচ্ছেন এবং মাফ চাচ্ছেন। এসব কথাবার্তার রেকর্ড রয়েছে। ভুক্তভোগী ছাত্রী জানায়, উপবৃত্তির কথা বলে উম্মত স্যার ডেকে নিয়ে যান। এরপর মিলন স্যার আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। ভয় পেয়ে আমি কয়েকদিন ধরে স্কুলে যাচ্ছি না। আমি বিচার চাই। ওনার বিরুদ্ধে অন্য মেয়েদের সঙ্গেও এমন আচরণের অভিযোগ আছে।
.
অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম মিলন বলেন, ‘একটি অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ছাত্রীকে শাসনের জন্য ডাকা হয়েছিল। কোনো খারাপ কিছু করিনি। ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
.
তিনি আরও জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে লিখিত অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
প্রিন্ট