ঢাকা , শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বোয়ালমারীতে মৎস্যজীবীদের মাঝে গবাদি পশু বিতরণ অনিয়মের অভিযোগ Logo মামলার পাহাড় কমাতে কলকাতা হাইকোর্টের মিডিয়েশন কমিটির পদক্ষেপ Logo কুষ্টিয়ায় তামাকের গাছ কাটার সময় বজ্রপাতে কলেজ ছাত্র নিহত Logo রূপগঞ্জে ছাত্রদল নেতা পাভেল হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন Logo নাগরপুরে সরকারি বইসহ ট্রাক জব্দ, প্রধান শিক্ষক পলাতক Logo ছাত্রীকে লাইব্রেরিতে ডেকে কুপ্রস্তাব দিলেন প্রধান শিক্ষক Logo চরভদ্রাসনে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে এইচবিবি রাস্তা নির্মাণে এলাকাবাসীর অভিযোগ Logo তানোরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এক পরিবারকে একঘরে Logo সদরপুরে গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ, আসামি গ্রেপ্তার Logo গরমে হাতিয়ায় শ্রেণিকক্ষেই অসুস্থ হয়ে পড়ল ৭ শিক্ষার্থী
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মৎস্য কর্মকর্তার অপসারণ দাবি

বোয়ালমারীতে মৎস্যজীবীদের মাঝে গবাদি পশু বিতরণ অনিয়মের অভিযোগ

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে দরিদ্র জেলে বা মৎস্যজীবীদের মাঝে গবাদিপশু বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গো-ছানা বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম, ব্যবস্থাপনা, দূর্নীতি ও স্বজন প্রীতি অভিযোগ তুলে এর কঠোর সমালোচনা করেছেন স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।

.

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে বুধবার দুপুরে উপজেলার স্বীকৃত ৭৫ মৎস্যজীবীর হাতে একটি করে বকনা বাছুর তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর হাসান চৌধুরী।

.

জানাগেছে, অসহায় জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিতে বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত দেশীয় প্রজাতির মাছ ও শামুক সংরক্ষণ- উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মৎস্যজীবীদের মাঝে এই গবাদিপশু বিতরণ করা হয়। এ সময় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ জসিম উদ্দিন সহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

.

এদিকে, এই গবাদি পশু বিতরণ কর্মসূচিকে ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। গো-ছানা বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম, ব্যবস্থাপনা, দূর্নীতি ও স্বজন প্রীতি অভিযোগ তুলে এর কঠোর সমালোচনা করেছেন স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।

.

অভিযোগ উঠেছে, ময়না ইউনিয়নে অশোক মালো নামের এক ব্যক্তির কার্ড থাকলেও তাকে গরু না দিয়ে তার বরাদ্দের গরু দেওয়া হয়েছে সজল মালো নামে এক ব্যাক্তিকে। এ ঘটনা নিয়ে স্থানীয়ভাবে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

.

নামে প্রকাশে অনিচ্ছুক ময়না ইউনিয়ন একজন মৎসজীবী বলেন, আমার কার্ড আছে। আমি টাকা দিতে পারিনি বলে গরু পাইনি। জানতে পেরেছি যারা ১৫ হাজার করে টাকা দিয়েছে তারা গরু পেয়েছে।

.

বোয়ালমারী পৌর জামাতের আমীর মাওলানা সৈয়দ নিয়ামুল হাসান বলেন, গবাদি পশু বিতরনের মত এত বড় একটা কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলো অথচ আমরা কিছুই জানিনা। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জসীমউদ্দীন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় না করে অতি গোপনে তালিকা করে নিজের পছন্দের লোকদেরকে গরু দিয়েছেন। এই তালিকার অধিকাংশ সুবিধাভোগীই পতিত স্বৈরাচারদের মতানুসারি।

.

বোয়ালমারী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আব্দুস সামাদ খান বলেন, আমার আঁধার কোঠা এলাকায় বেশিরভাগ জনগোষ্ঠীই মৎস্যজীবী পরিবারের। অথচ মৎস্যজীবীদের কল্যাণে নেওয়া কর্মসূচির বিষয়ে কিছুই জানতে পারলাম না। আমার মহল্লার গরিব জেলেদের কেউই একটা গবাদি পশু পায়নি। অসাধু মৎস্য কর্মকর্তা ফ্যাসিস্টদের দোসরদের সঙ্গে আতাত করে মাথা পিছু ৫/৭ হাজার টাকার বিনিময়ে মৎস্যজীবীদের গরু দিয়েছেন বলে অভিযোগ সামাদ খানের।

.

বোয়ালমারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সঞ্জয় কুমার সাহা ও উপজেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক বিশ্বনাথ সরকার বলেন, আমাদের সংগঠনে কার্ডধারী অনেক মৎস্যজীবী রয়েছে। অথচ আমাদের না জানিয়েই মৎস্যজীবীর তালিকা করে গরু বরাদ্দ দেয়া হলো। আমাদের বঞ্চনার দিন কবে শেষ হবে বুঝতে পারছি না। খবর পেয়ে অনুষ্ঠান স্থলে উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ করেও গরু বিতরণ ঠেকানো যায়নি। কাদের সঙ্গে আলোচনা করে মৎস্য কর্মকর্তা মৎস্যজীবীদের তালিকা করলেন সেটি এখন বড় প্রশ্ন হয়ে রইলো।.

.

এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, গবাদি পশু বিতরণে কোন অনিয়ম হয়নি। অনেক আগে তালিকা করা হয়েছিল। আর সে মোতাবেকই পশু বিতরণ করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

.

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে তালিকা ও যাচাই-বাছাই করেছেন। আমি শুধু বিতরণের সময় ছিলাম। এ সময় দশটি তালিকায় অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের বরাদ্দ না দিয়ে দশ জন সঠিক ও প্রকৃত ব্যক্তিদের বরাদ্দ দেওয়া হয়।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

বোয়ালমারীতে মৎস্যজীবীদের মাঝে গবাদি পশু বিতরণ অনিয়মের অভিযোগ

error: Content is protected !!

মৎস্য কর্মকর্তার অপসারণ দাবি

বোয়ালমারীতে মৎস্যজীবীদের মাঝে গবাদি পশু বিতরণ অনিয়মের অভিযোগ

আপডেট টাইম : এক ঘন্টা আগে
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি :

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে দরিদ্র জেলে বা মৎস্যজীবীদের মাঝে গবাদিপশু বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গো-ছানা বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম, ব্যবস্থাপনা, দূর্নীতি ও স্বজন প্রীতি অভিযোগ তুলে এর কঠোর সমালোচনা করেছেন স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।

.

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে বুধবার দুপুরে উপজেলার স্বীকৃত ৭৫ মৎস্যজীবীর হাতে একটি করে বকনা বাছুর তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর হাসান চৌধুরী।

.

জানাগেছে, অসহায় জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিতে বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত দেশীয় প্রজাতির মাছ ও শামুক সংরক্ষণ- উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মৎস্যজীবীদের মাঝে এই গবাদিপশু বিতরণ করা হয়। এ সময় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ জসিম উদ্দিন সহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

.

এদিকে, এই গবাদি পশু বিতরণ কর্মসূচিকে ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। গো-ছানা বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম, ব্যবস্থাপনা, দূর্নীতি ও স্বজন প্রীতি অভিযোগ তুলে এর কঠোর সমালোচনা করেছেন স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।

.

অভিযোগ উঠেছে, ময়না ইউনিয়নে অশোক মালো নামের এক ব্যক্তির কার্ড থাকলেও তাকে গরু না দিয়ে তার বরাদ্দের গরু দেওয়া হয়েছে সজল মালো নামে এক ব্যাক্তিকে। এ ঘটনা নিয়ে স্থানীয়ভাবে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

.

নামে প্রকাশে অনিচ্ছুক ময়না ইউনিয়ন একজন মৎসজীবী বলেন, আমার কার্ড আছে। আমি টাকা দিতে পারিনি বলে গরু পাইনি। জানতে পেরেছি যারা ১৫ হাজার করে টাকা দিয়েছে তারা গরু পেয়েছে।

.

বোয়ালমারী পৌর জামাতের আমীর মাওলানা সৈয়দ নিয়ামুল হাসান বলেন, গবাদি পশু বিতরনের মত এত বড় একটা কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলো অথচ আমরা কিছুই জানিনা। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জসীমউদ্দীন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় না করে অতি গোপনে তালিকা করে নিজের পছন্দের লোকদেরকে গরু দিয়েছেন। এই তালিকার অধিকাংশ সুবিধাভোগীই পতিত স্বৈরাচারদের মতানুসারি।

.

বোয়ালমারী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আব্দুস সামাদ খান বলেন, আমার আঁধার কোঠা এলাকায় বেশিরভাগ জনগোষ্ঠীই মৎস্যজীবী পরিবারের। অথচ মৎস্যজীবীদের কল্যাণে নেওয়া কর্মসূচির বিষয়ে কিছুই জানতে পারলাম না। আমার মহল্লার গরিব জেলেদের কেউই একটা গবাদি পশু পায়নি। অসাধু মৎস্য কর্মকর্তা ফ্যাসিস্টদের দোসরদের সঙ্গে আতাত করে মাথা পিছু ৫/৭ হাজার টাকার বিনিময়ে মৎস্যজীবীদের গরু দিয়েছেন বলে অভিযোগ সামাদ খানের।

.

বোয়ালমারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সঞ্জয় কুমার সাহা ও উপজেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক বিশ্বনাথ সরকার বলেন, আমাদের সংগঠনে কার্ডধারী অনেক মৎস্যজীবী রয়েছে। অথচ আমাদের না জানিয়েই মৎস্যজীবীর তালিকা করে গরু বরাদ্দ দেয়া হলো। আমাদের বঞ্চনার দিন কবে শেষ হবে বুঝতে পারছি না। খবর পেয়ে অনুষ্ঠান স্থলে উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদ করেও গরু বিতরণ ঠেকানো যায়নি। কাদের সঙ্গে আলোচনা করে মৎস্য কর্মকর্তা মৎস্যজীবীদের তালিকা করলেন সেটি এখন বড় প্রশ্ন হয়ে রইলো।.

.

এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, গবাদি পশু বিতরণে কোন অনিয়ম হয়নি। অনেক আগে তালিকা করা হয়েছিল। আর সে মোতাবেকই পশু বিতরণ করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

.

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে তালিকা ও যাচাই-বাছাই করেছেন। আমি শুধু বিতরণের সময় ছিলাম। এ সময় দশটি তালিকায় অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের বরাদ্দ না দিয়ে দশ জন সঠিক ও প্রকৃত ব্যক্তিদের বরাদ্দ দেওয়া হয়।


প্রিন্ট