ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

রসুনের ভালো দাম পেয়ে খেতেই বিক্রি, খরচ বাঁচছে কৃষকের

রাজশাহীর বাঘায় রসুনের ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা। হাটবাজারে বিক্রির ঝুটঝামেলা এড়াতে, খেতেই রসুন বিক্রি করছেন তারা। এতে পরিবহন খরচ ও হাটবাজারের হাসিল বেঁচে যাওয়ার পাশাপাশি ঝক্কিঝামেলা থেকেও রেহাই পাচ্ছেন কৃষকরা।

শুক্রবার(১৫-০৩-২০২৪) উপজেলার চরাঞ্চলের কালিদাশখালি, পলাশিফতেপুর ও গড়গড়িসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শ্রমিক দিয়ে খেত থেকে রসুন তুলে বিক্রি করছেন কৃষক। সেসব রসুন কিনে বস্তায় ভরে খেতেই স্তুপ করে রাখছেন ব্যবসায়ীরা।

চরকালিদাশখালি গ্রামের খেতে কথা হয় দাদপুর গ্রামের জাহের ব্যাপারির সাথে। তিনি জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে রসুন কিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করেন। প্রথমে মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে সেসব এলাকার রসুনের দর জেনে নেন। এরপর কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই দামের চেয়ে কিছুটা কমে খেত থেকেই রসুন কেনেন। পরে তা চাহিদামতো পাঠিয়ে দেন। এতে রসুন পরিবহনের খরচ ও লাভের টাকা উঠে যায়।

কালিদাশখালি গ্রামের কৃষক আলাউদ্দীন বয়াতি বলেন, মৌসুমের শুরুতে রসুনের দাম পড়ে যায়। এতে লোকসানের শঙ্কার মধ্যে পড়েন রসুন চাষিরা। কিন্তু এখন সেই শঙ্কা কেটে গেছে। বাজারে রসুনের দামও ভালো। তাই খেত থেকেই রসুন বিক্রি করছেন। এতে বাজারে নিয়ে যাওয়ার খরচটাও সাশ্রয় হচ্ছে।
মোঃ ইসলাম নামে অপর চাষি বলেন, দুই বছর ধরে এভাবেই খেত থেকে রসুন বিক্রি করছেন। এবার আমরা রসুনের লোকসানের ভয়ে ছিলাম। এখন সেই ভয় কেটে যাচ্ছে।

এসব চাষিরা বলেন, এবার খেত থেকে প্রতি কেজি ১০০ টাকা হিসেবে ১ মণ রসুন বিক্রি হচ্ছে ৪০০০ (চার হাজার)টাকা। হাটবাজারে নিতে প্রতি মণ রসুন পরিবহনে খরচ হতো কমপক্ষে ১৫-২০ টাকা। ইজারাদারদের দিতে হতো মণপ্রতি ১০ টাকা। খেতেই রসুন বিক্রি করায় পরিবহন খরচ ও বাজারের খাজনা বেঁচে যাচ্ছে। ১বিঘা রসুন আবাদে খরচ হয়েছে, সেচ,সার,বীজ ও শ্রমিকসহ ১লাখের বেশি। প্রতি বিঘায় উৎপাদন হচ্ছে ৪০ মণ। পাইকারি ৪হাজার টাকা মণ হিসেবে ১বিঘার রসুন বিক্রি হচ্ছে ১লাখ ৬০ হাজার টাকা। খরচবাদে প্রতি বিঘায় লাভ হচ্ছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। গড়গড়ি গ্রামের মুকুল জানান, ৯কাঠা জমি থেকে ১৮ মণ রসুন উত্তোলন করেছেন। বিক্রি করেছেন ৭২ হাজার টাকা।

হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি রসুন খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা দরে। বাঘা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মোতলেব হোসেন জানান,প্রতিকেজি রসুন পাইকারদের কাছ থেকে কেনেছেন ১৪০ টাকা কেজি দরে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বাঘা উপজেলায় গত বছরের চেয়ে এবার বেশি জমিতে রসুন আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৯৩৪ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। হেক্টর প্রতি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ দশমিক শুন্যে ৪ মেঃটন। গত বছর আবাদ হয়েছিল ৭৮১ হেক্টর জমিতে। উৎপাদ হয়েছিল৮২৫৮ মেঃটন। ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৭৯৮ মেট্রিক টন।

 

 

কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, বাজার উঠা নামার কারণে অনেক সময় কৃষকরা ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। খেত থেকেই ফসল বিক্রি হওয়ায় কৃষকেরা উপকৃত হচ্ছেন। কৃষকদের প্রোণাদনা সহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন। এতে তারা কৃষিকাজে আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবেন।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

রসুনের ভালো দাম পেয়ে খেতেই বিক্রি, খরচ বাঁচছে কৃষকের

আপডেট টাইম : ০৬:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪

রাজশাহীর বাঘায় রসুনের ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা। হাটবাজারে বিক্রির ঝুটঝামেলা এড়াতে, খেতেই রসুন বিক্রি করছেন তারা। এতে পরিবহন খরচ ও হাটবাজারের হাসিল বেঁচে যাওয়ার পাশাপাশি ঝক্কিঝামেলা থেকেও রেহাই পাচ্ছেন কৃষকরা।

শুক্রবার(১৫-০৩-২০২৪) উপজেলার চরাঞ্চলের কালিদাশখালি, পলাশিফতেপুর ও গড়গড়িসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শ্রমিক দিয়ে খেত থেকে রসুন তুলে বিক্রি করছেন কৃষক। সেসব রসুন কিনে বস্তায় ভরে খেতেই স্তুপ করে রাখছেন ব্যবসায়ীরা।

চরকালিদাশখালি গ্রামের খেতে কথা হয় দাদপুর গ্রামের জাহের ব্যাপারির সাথে। তিনি জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে রসুন কিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করেন। প্রথমে মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে সেসব এলাকার রসুনের দর জেনে নেন। এরপর কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই দামের চেয়ে কিছুটা কমে খেত থেকেই রসুন কেনেন। পরে তা চাহিদামতো পাঠিয়ে দেন। এতে রসুন পরিবহনের খরচ ও লাভের টাকা উঠে যায়।

কালিদাশখালি গ্রামের কৃষক আলাউদ্দীন বয়াতি বলেন, মৌসুমের শুরুতে রসুনের দাম পড়ে যায়। এতে লোকসানের শঙ্কার মধ্যে পড়েন রসুন চাষিরা। কিন্তু এখন সেই শঙ্কা কেটে গেছে। বাজারে রসুনের দামও ভালো। তাই খেত থেকেই রসুন বিক্রি করছেন। এতে বাজারে নিয়ে যাওয়ার খরচটাও সাশ্রয় হচ্ছে।
মোঃ ইসলাম নামে অপর চাষি বলেন, দুই বছর ধরে এভাবেই খেত থেকে রসুন বিক্রি করছেন। এবার আমরা রসুনের লোকসানের ভয়ে ছিলাম। এখন সেই ভয় কেটে যাচ্ছে।

এসব চাষিরা বলেন, এবার খেত থেকে প্রতি কেজি ১০০ টাকা হিসেবে ১ মণ রসুন বিক্রি হচ্ছে ৪০০০ (চার হাজার)টাকা। হাটবাজারে নিতে প্রতি মণ রসুন পরিবহনে খরচ হতো কমপক্ষে ১৫-২০ টাকা। ইজারাদারদের দিতে হতো মণপ্রতি ১০ টাকা। খেতেই রসুন বিক্রি করায় পরিবহন খরচ ও বাজারের খাজনা বেঁচে যাচ্ছে। ১বিঘা রসুন আবাদে খরচ হয়েছে, সেচ,সার,বীজ ও শ্রমিকসহ ১লাখের বেশি। প্রতি বিঘায় উৎপাদন হচ্ছে ৪০ মণ। পাইকারি ৪হাজার টাকা মণ হিসেবে ১বিঘার রসুন বিক্রি হচ্ছে ১লাখ ৬০ হাজার টাকা। খরচবাদে প্রতি বিঘায় লাভ হচ্ছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। গড়গড়ি গ্রামের মুকুল জানান, ৯কাঠা জমি থেকে ১৮ মণ রসুন উত্তোলন করেছেন। বিক্রি করেছেন ৭২ হাজার টাকা।

হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি রসুন খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা দরে। বাঘা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মোতলেব হোসেন জানান,প্রতিকেজি রসুন পাইকারদের কাছ থেকে কেনেছেন ১৪০ টাকা কেজি দরে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বাঘা উপজেলায় গত বছরের চেয়ে এবার বেশি জমিতে রসুন আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৯৩৪ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। হেক্টর প্রতি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ দশমিক শুন্যে ৪ মেঃটন। গত বছর আবাদ হয়েছিল ৭৮১ হেক্টর জমিতে। উৎপাদ হয়েছিল৮২৫৮ মেঃটন। ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৭৯৮ মেট্রিক টন।

 

 

কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, বাজার উঠা নামার কারণে অনেক সময় কৃষকরা ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। খেত থেকেই ফসল বিক্রি হওয়ায় কৃষকেরা উপকৃত হচ্ছেন। কৃষকদের প্রোণাদনা সহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন। এতে তারা কৃষিকাজে আরও বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবেন।