ভোরের সামান্য বৃষ্টিতে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বেশ কয়েকটি পাঁকা সড়ক এখন কাদামাটির রাস্তায় পরিণত হয়েয়েছে। গত কয়েকমাস ধরে ইটভাটার মাটি রাস্তায় পড়ে সেগুলো বৃষ্টিতে ভিজে পিচ্ছিল হয়ে মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়া গেছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যানবাহনের চালক, যাত্রী ও সাধারণ মানুষ। চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ।
উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের সড়কের চিত্রই এখন এমন। দীর্ঘদিন ধরে জেলায় শতাধিক ইটভাটার মাটি ট্রাকে পরিবহন করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ইটভাটার মালিকেরা জনদুর্ভোগকে পাত্তা না দিয়ে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সোমবার ভোরে বালিয়াকান্দিতে সামান্য বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় বালিয়াকান্দি-নারুয়া, বালিয়াকান্দি-সোনাপুর, বালিয়াকান্দি-রাজবাড়ী সড়কে কাঁদার সৃষ্টি হয়। এতে রাস্তায় চলাচলকারী মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, অটোভ্যান, ইজিবাইকসহ পথচারীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। প্রতিটি ইটভাটার সমানে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত রাস্তা পানিতে ভিজে পিচ্ছিল মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বেশিরভাগ ইটভাটার মালিকরা ক্ষমতাসীন দলের লোক। তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে চাঁদা দেন। সরকারি অনেক অনুষ্ঠানে তাদের টাকায় হয়ে থাকে। যে কারণে জমির শ্রেণি পরিবর্তন থেকে শুরু করে রাস্তায় দুর্ভোগ সৃষ্টিতে তাদের কোন সমস্যা হয় না। বালিয়াকান্দির বেশিরভাগ ইটভাটায় প্রকাশ্যে কাট পুড়িয়ে ইট তৈরি করা হয়। এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি স্থানীয়দের।
শিক্ষক উত্তম কুমার গোস্বামী বলেন, বালিয়াকান্দিতে ১২টি ইটভাটার সামনের সড়কগুলো বর্তমানে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে ভাটার মালিক দেখলাম নিজ উদ্যোগে মাটি অপসারণের কাজ করছে। তিনি বলেন ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ।
বালিয়াকান্দি টিএমবি ব্রিকস ইটভাটার মালিক মোফাজ্জেল হোসেন মিঠু বলেন, ভোরের বৃষ্টিতে ইটভাটায় কাঁদা জমে যায়। সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। আমি নিজ উদ্যোগে আমার নিজস্ব শ্রমিক দিয়ে রাস্তায় কাঁদা অপসারণ করে বালু দিয়েছি। সবাই এমন কাজ করছেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না।
বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বলেন, বালিয়াকান্দির বিভিন্ন রাস্তা এখন ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন তিনি। এছাড়া জনসাধারনের ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় সতর্ক হয়ে চলার দাবি তাঁর।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ইটভাটার মালিকদের অনেকবার সতর্ক করেছি। দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
প্রিন্ট