ঢাকা , মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo লালপুরের পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৫ Logo ফরিদপুরে আ.লীগের ব্যানারে মিছিল দেওয়ার প্রস্তুতিকালে বিএনপি নেতার ছেলেসহ আটক ৮ Logo বহলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সম্মেলন Logo শ্রমিকদল নেতাদের সহযোগীতায় জোরপূর্বক জমি দখলে শসস্ত্র হামলা Logo ডিপ্লোমা ইন্টার্ন নার্সদের একদফা দাবিতে দেশব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত Logo ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল Logo সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা Logo আলফাডাঙ্গায় শিক্ষকদের সংবর্ধনা ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করলেন জেলা প্রশাসক Logo মুকসুদপুর উপজেলা পরিষদের ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ Logo ভূরুঙ্গামারীতে নাশকতা বিরোধী বিশেষ অভিযানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৫ নেতা গ্রেফতার
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়ায় পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা নিজেদের মনমতো দাম বাড়াচ্ছেন

কুষ্টিয়ার বাজারে দুই দিনে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ৩০-৪০ টাকা বেড়ে গেছে। এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে। যা গত বৃহস্পতিবার ছিল ৯০ টাকা। হঠাৎ করে এত বেশি দাম বাড়ার ঘটনাকে খুবই অস্বাভাবিক বলছেন ক্রেতারা।

 

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) কুষ্টিয়া পৌর কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। অকারণে ভরা মৌসুমে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি ঠেকাতে বাজারে নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন ভোক্তারা।

 

লিংকন নামে এক ক্রেতা বলেন, কুষ্টিয়ার বাজারেই গতকাল শনিবার ৯০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনেছি। আজ ১২৫ টাকায় কিনলাম। ব্যবসায়ীরা অকারণে নিজেদের মনমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। মনিটরিং না করার কারণে এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

 

কুষ্টিয়া পৌর বাজারে খুচরা পেঁয়াজ ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত বৃহস্পতিবার আড়তদারের কাছে থেকে পাইকারি কিনেছি ৮৫ টাকায় আর বিক্রি করেছি ৯০ টাকায়। শুক্রবার পাইকারি কিনেছি ১০৫ টাকায় আর বিক্রি করেছি ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। আজ কিনেছি ১১৫ টাকায় আর বিক্রি করছি ১২০ টাকায়। তবে আজ কেউ কেউ ১২০ টাকাতেও পাইকারি কিনেছে, তারা ১২৫ টাকা বা ১৩০ টাকায় বিক্রি করছে। আমদানি কম হওয়ায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

 

আলী ভান্ডার পেঁয়াজের আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ী তফেজ উদ্দিন বলেন, দাম বাড়ার পেছনে আমাদের কোনো হাত নেই। পেঁয়াজের আমদানি কম, চাহিদা বেশি। আমদানি কম হওয়ায় পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে দাম কমে যাবে।

 

পাইকারি বাজারে দর বাড়ার কারণে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর বাজার ও কিছু কিছু দোকানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ শেষের দিকে হওয়ায় বাজারে এই পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে। তাই এই দাম বাড়তি আরও কয়েক দিন থাকতে পারে, এরপর হালি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলে দাম কমে যাবে বলে জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

 

খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, পাইকারি ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণেই মূলত পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খুচরা বাজারেও এসব দ্রব্যের দাম বেড়েছে। খুচরা ব্যাবসায়ীদের পক্ষে দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না।

 

দিনমজুর কবির বলেন, যেভাবে দাম বাড়ছে, পেঁয়াজ খাওয়া ছেড়ে দেব। কারণ আমি দিনমজুর, গরিব মানুষ। প্রতিদিন কাজও জোটে না। অভাবের মধ্যে আছি। এদিকে জিনিসপত্রের দাম বেশি। সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়। পেঁয়াজ খাওয়া বাদ দেওয়া ছাড়া উপায় নাই।

 

বেসরকারি চাকরিজীবী হুমায়ুন কবির বলেন, ৬ জনের সংসার আমার একার আয়ে চালাতে হয়। আমি যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি তারা বেতন বাড়ায়নি গত দুই বছর। অথচ জিনিসপত্রের দাম দফায় দফায় বেড়েছে। ২ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ৪০ টাকা। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে অথচ বাজার নিয়ন্ত্রণে কোনো উদ্যোগ দেখতে পাওয়া যায় না। মানুষ অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি, প্রশাসন নীরব।

 

 

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক সুচন্দন মণ্ডলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন ধরেননি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

লালপুরের পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৫

error: Content is protected !!

কুষ্টিয়ায় পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা নিজেদের মনমতো দাম বাড়াচ্ছেন

আপডেট টাইম : ০১:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
ইসমাইল হোসেন বাবু, স্টাফ রিপোর্টার :

কুষ্টিয়ার বাজারে দুই দিনে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ৩০-৪০ টাকা বেড়ে গেছে। এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে। যা গত বৃহস্পতিবার ছিল ৯০ টাকা। হঠাৎ করে এত বেশি দাম বাড়ার ঘটনাকে খুবই অস্বাভাবিক বলছেন ক্রেতারা।

 

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) কুষ্টিয়া পৌর কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। অকারণে ভরা মৌসুমে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি ঠেকাতে বাজারে নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন ভোক্তারা।

 

লিংকন নামে এক ক্রেতা বলেন, কুষ্টিয়ার বাজারেই গতকাল শনিবার ৯০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনেছি। আজ ১২৫ টাকায় কিনলাম। ব্যবসায়ীরা অকারণে নিজেদের মনমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। মনিটরিং না করার কারণে এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

 

কুষ্টিয়া পৌর বাজারে খুচরা পেঁয়াজ ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত বৃহস্পতিবার আড়তদারের কাছে থেকে পাইকারি কিনেছি ৮৫ টাকায় আর বিক্রি করেছি ৯০ টাকায়। শুক্রবার পাইকারি কিনেছি ১০৫ টাকায় আর বিক্রি করেছি ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। আজ কিনেছি ১১৫ টাকায় আর বিক্রি করছি ১২০ টাকায়। তবে আজ কেউ কেউ ১২০ টাকাতেও পাইকারি কিনেছে, তারা ১২৫ টাকা বা ১৩০ টাকায় বিক্রি করছে। আমদানি কম হওয়ায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

 

আলী ভান্ডার পেঁয়াজের আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ী তফেজ উদ্দিন বলেন, দাম বাড়ার পেছনে আমাদের কোনো হাত নেই। পেঁয়াজের আমদানি কম, চাহিদা বেশি। আমদানি কম হওয়ায় পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে দাম কমে যাবে।

 

পাইকারি বাজারে দর বাড়ার কারণে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর বাজার ও কিছু কিছু দোকানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ শেষের দিকে হওয়ায় বাজারে এই পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে। তাই এই দাম বাড়তি আরও কয়েক দিন থাকতে পারে, এরপর হালি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলে দাম কমে যাবে বলে জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

 

খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, পাইকারি ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণেই মূলত পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খুচরা বাজারেও এসব দ্রব্যের দাম বেড়েছে। খুচরা ব্যাবসায়ীদের পক্ষে দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না।

 

দিনমজুর কবির বলেন, যেভাবে দাম বাড়ছে, পেঁয়াজ খাওয়া ছেড়ে দেব। কারণ আমি দিনমজুর, গরিব মানুষ। প্রতিদিন কাজও জোটে না। অভাবের মধ্যে আছি। এদিকে জিনিসপত্রের দাম বেশি। সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়। পেঁয়াজ খাওয়া বাদ দেওয়া ছাড়া উপায় নাই।

 

বেসরকারি চাকরিজীবী হুমায়ুন কবির বলেন, ৬ জনের সংসার আমার একার আয়ে চালাতে হয়। আমি যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি তারা বেতন বাড়ায়নি গত দুই বছর। অথচ জিনিসপত্রের দাম দফায় দফায় বেড়েছে। ২ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ৪০ টাকা। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে অথচ বাজার নিয়ন্ত্রণে কোনো উদ্যোগ দেখতে পাওয়া যায় না। মানুষ অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি, প্রশাসন নীরব।

 

 

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কুষ্টিয়ার সহকারী পরিচালক সুচন্দন মণ্ডলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন ধরেননি।


প্রিন্ট