ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়ায় বাবার জমি লিখে নিয়েও থামছেন না ছেলে

ইসমাইল হোসেন বাবু:

শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে বাবার অধিকাংশ জমি লিখে নিয়েছেন ছেলে। এতেও ক্ষান্ত হননি। বাড়িছাড়া করেছেন বাবাকে। চিকিৎসা ও নিজের খরচ চালাতে অবশিষ্ট জমির কিছু অংশ বিক্রি করেছেন বৃদ্ধ বাবা। কিন্তু সেই জমি নিবন্ধনে বাধা দিচ্ছেন ছেলে ফিরোজ আলী।

 

বৃহস্পতিবার এর প্রতিবাদে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন বাবা লিয়াকত আলী বিশ্বাস (৭৫)।

 

এই বৃদ্ধের অভিনব প্রতিবাদে শামিল হন দুই বৃদ্ধ বোন নাছিমা ও নাজমা, তিন জামাতা ও প্রতিবেশীরা। লিয়াকত আলী বিশ্বাস উপজেলার গোপগ্রাম ইউনিয়নের সাতপাখিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার ভাষ্য, প্রায় ৩০ বিঘা জমির মালিক ছিলেন। একমাত্র ছেলে ফিরোজ আলী সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিতে তাঁকে চাপ দিতে থাকে। শারীরিক-মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে তিনি থানায় ধরনা দেন। এতেও লাভ হয়নি। অবশেষে গত দুই বছর পৃথক পাঁচটি দলিলে প্রায় ১৬ বিঘা জমি ফিরোজের নামে দিতে বাধ্য হন। পৃথক দুটি দলিলে আরও পাঁচ বিঘা জমি বিক্রি করে বিপুল টাকা আত্মসাৎ করে ফিরোজ। এমনকি কয়েক মাস আগে তার একটি হাত ভেঙে দেয় ছেলে।

 

সম্প্রতি লিয়াকত আলী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি নিজের অবশিষ্ট জমি ও দুই বোনের নামে থাকা জমি থেকে ১৭ শতক জমি বিক্রি করেন। কিন্তু বিক্রেতার নামে ওই জমি নিবন্ধন করতে গেলে বাধা দেন ফিরোজ আলী ও কথিত কয়েকজন সাংবাদিক। বৃহস্পতিবার সরকারি তহবিলে অর্ধলাখ টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধনের লেখা দলিল সাব-রেজিস্ট্রারের দপ্তরে জমা দেন। এ সময় দলিল লেখক আমজাদ হোসেন বাবলুকে দ্বিতীয় দফায় চাপ দেন ফিরোজ। এর প্রতিবাদে দলিল দাতারা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদী অবস্থান নেন। তারা সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলেন।

 

সেখানে উপস্থিত জামাতা এম বারির ভাষ্য, তার বৃদ্ধ শ্বশুরকে শারীরিক নির্যাতন করে পাঁচটি দলিলে প্রায় ১৬ বিঘা জমি লিখে নিয়েছেন শ্যালক ফিরোজ আলী। চিকিৎসার জন্য সামান্য জমি বিক্রি করেছেন। সেই জমির নিবন্ধনেও বাধা দিচ্ছেন। টাকার জন্য চিকিৎসা বন্ধ আছে তার শ্বশুরের।

 

সংবাদ পেয়ে রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি ছেলে ফিরোজ আলীকে। তার মোবাইল ফোনে কল দিলেও ধরেননি। দলিল লেখক আমজাদ হোসেন বাবলুর নম্বরে কল দিলেও তিনি ধরেননি।

 

বাবলুর ছেলে ও সহকারী রাজিব বলেন, সাংবাদিকরা হুমকি দেওয়ায় তারা ভয় পেয়েছেন। তাই জমা দেওয়া দলিলটি প্রত্যাহার করে নেন। সাব-রেজিস্ট্রার মো. রাসেল মল্লিকের দাপ্তরিক ও ব্যক্তিগত নম্বরে কল দিলে তিনিও ধরেননি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই-আগস্টে শহীদদের স্মরণে মহম্মদপুরে বিএনপির মৌন মিছিল

error: Content is protected !!

কুষ্টিয়ায় বাবার জমি লিখে নিয়েও থামছেন না ছেলে

আপডেট টাইম : ৭ ঘন্টা আগে
ইসমাইল হোসেন বাবু, সিনিয়র ষ্টাফ রিপোর্টার :

ইসমাইল হোসেন বাবু:

শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে বাবার অধিকাংশ জমি লিখে নিয়েছেন ছেলে। এতেও ক্ষান্ত হননি। বাড়িছাড়া করেছেন বাবাকে। চিকিৎসা ও নিজের খরচ চালাতে অবশিষ্ট জমির কিছু অংশ বিক্রি করেছেন বৃদ্ধ বাবা। কিন্তু সেই জমি নিবন্ধনে বাধা দিচ্ছেন ছেলে ফিরোজ আলী।

 

বৃহস্পতিবার এর প্রতিবাদে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন বাবা লিয়াকত আলী বিশ্বাস (৭৫)।

 

এই বৃদ্ধের অভিনব প্রতিবাদে শামিল হন দুই বৃদ্ধ বোন নাছিমা ও নাজমা, তিন জামাতা ও প্রতিবেশীরা। লিয়াকত আলী বিশ্বাস উপজেলার গোপগ্রাম ইউনিয়নের সাতপাখিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার ভাষ্য, প্রায় ৩০ বিঘা জমির মালিক ছিলেন। একমাত্র ছেলে ফিরোজ আলী সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিতে তাঁকে চাপ দিতে থাকে। শারীরিক-মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে তিনি থানায় ধরনা দেন। এতেও লাভ হয়নি। অবশেষে গত দুই বছর পৃথক পাঁচটি দলিলে প্রায় ১৬ বিঘা জমি ফিরোজের নামে দিতে বাধ্য হন। পৃথক দুটি দলিলে আরও পাঁচ বিঘা জমি বিক্রি করে বিপুল টাকা আত্মসাৎ করে ফিরোজ। এমনকি কয়েক মাস আগে তার একটি হাত ভেঙে দেয় ছেলে।

 

সম্প্রতি লিয়াকত আলী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি নিজের অবশিষ্ট জমি ও দুই বোনের নামে থাকা জমি থেকে ১৭ শতক জমি বিক্রি করেন। কিন্তু বিক্রেতার নামে ওই জমি নিবন্ধন করতে গেলে বাধা দেন ফিরোজ আলী ও কথিত কয়েকজন সাংবাদিক। বৃহস্পতিবার সরকারি তহবিলে অর্ধলাখ টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধনের লেখা দলিল সাব-রেজিস্ট্রারের দপ্তরে জমা দেন। এ সময় দলিল লেখক আমজাদ হোসেন বাবলুকে দ্বিতীয় দফায় চাপ দেন ফিরোজ। এর প্রতিবাদে দলিল দাতারা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদী অবস্থান নেন। তারা সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলেন।

 

সেখানে উপস্থিত জামাতা এম বারির ভাষ্য, তার বৃদ্ধ শ্বশুরকে শারীরিক নির্যাতন করে পাঁচটি দলিলে প্রায় ১৬ বিঘা জমি লিখে নিয়েছেন শ্যালক ফিরোজ আলী। চিকিৎসার জন্য সামান্য জমি বিক্রি করেছেন। সেই জমির নিবন্ধনেও বাধা দিচ্ছেন। টাকার জন্য চিকিৎসা বন্ধ আছে তার শ্বশুরের।

 

সংবাদ পেয়ে রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি ছেলে ফিরোজ আলীকে। তার মোবাইল ফোনে কল দিলেও ধরেননি। দলিল লেখক আমজাদ হোসেন বাবলুর নম্বরে কল দিলেও তিনি ধরেননি।

 

বাবলুর ছেলে ও সহকারী রাজিব বলেন, সাংবাদিকরা হুমকি দেওয়ায় তারা ভয় পেয়েছেন। তাই জমা দেওয়া দলিলটি প্রত্যাহার করে নেন। সাব-রেজিস্ট্রার মো. রাসেল মল্লিকের দাপ্তরিক ও ব্যক্তিগত নম্বরে কল দিলে তিনিও ধরেননি।


প্রিন্ট