নেশার টাকা যোগাড় করতে সন্তানকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন এক পাষণ্ড বাবা। পরে থানা পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত খোঁজ নিতে শুরু করে। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারী) বিকেলের দিকে শিশুকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে তুলে দিয়েছে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে শিশুটিকে দত্তক নিয়েছিলেন বলে জানান এ স্বজনেরা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায় কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ডাকঘরের অন্তর্গত সাওতা গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর হোসেন। গত ২ ফেব্র“য়ারী সে তার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্ত্রীর কাছ থেকে শিশুটিকে নিয়ে কৌশলে বের হয়ে যায়।
পরে ৯ মাসের শিশু আয়াতকে মাত্র ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন সদর উপজেলার কমলাপুর ডাকঘর অর্ন্তগত মেটন গ্রামের রুবেল হোসেনের স্ত্রী নিঃসন্তান সাথীর কাছে। সন্তান না পেয়ে শিশুর মা ছকিনা খাতুন ও আর আত্মীয়স্বজন কুমারখালী থানায় এসে পুলিশকে অবহিত করেন।
পরে থানার ওসি আকিবুল ইসলামের নির্দেশে বাঁধ বাজার পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ইমদাদুল হক ও সঙ্গীয় ফোর্স অভিযান চালিয়ে সদর উপজেলার কমলাপুর ডাকঘর অর্ন্তগত মেটন গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা বলছেন শিশুটির পিতা আলমগীর নেশাখোর। সে তার নেশার টাকা যোগাড় করতে না পেরে অবুঝ শিশুটিকে বিক্রি করে দেয়। যদিও এই ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে। এছাড়াও স্ত্রী-সন্তানের তেমন খোঁজ খবর রাখেন না। দত্তক নেওয়া রুবেলের বড় ভাই বলেন কোন টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে কেনন নাই বলে জানান তার বড় ভাই। ১০৫ টাকার স্ট্যাম্পের মাধ্যমে এ শিশুটিকে দত্তক নেওয়া হয়।
শিশুটির মা (বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী) বলেন তাকে কিছু না বলে শিশুটিকে নিয়ে যায় তার স্বামী বিনিময়ে কিছু টাকা ও সাবান পেয়েছেন। শিশুটির নানা বলেন শিশুটি বিক্রি করার আগে আলমগীর হোসেন ও রুবেল হোসেন এক সঙ্গে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। নেশা করার টাকা না পেয়ে তার কন্যা সন্তানকে ১০ হাজার টাকা বিক্রি করেছে বলে অভিযোগ করেন। স্থানীয় যুবক বলেন রুবেল হোসেনের স্ত্রী নিঃসন্তান হওয়ায় শিশুটিকে টাকার বিনিময় হোক বা অন্য কিছুর বিনিময় শিশুটিকে তার সন্তান হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।
এখন শিশুটিকে তার প্রকৃত মা ও আত্মীয় স্বজনের কাছে তুলে দিয়েছেন। কুমারখালী বাঁধ বাজার ইনচার্জ ইমদাদুল হক বলেন শিশুটির মা ও অভিভাবকগণ কুমারখালী থানায় একটি জিডি দায়ের করেন। উর্দ্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশনা ঘটনাস্থলে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রকৃত মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
প্রিন্ট