ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের চরগয়েশপুর গ্রামের মাগুরা জেলা সংলগ্ন গ্রামের মৃত দলিল উদ্দিন শেখের পুত্র মোঃ বিল্লাল হোসেন শেখ (৫৯) ও তার পুত্র জামিরুল শেখ (২৫) মধুখালী থানায় এজাহার দায়ের করেন, মধুখালী থানার মামলা নং- ০৩, গত ২০২৪ সালের ৪ জানুয়ারি তারিখে ১৮৬০ সালের পেনাল কোড অনুযায়ী ধারা ৩০২, ২০১ ও ৩৪ অনুযায়ী, এই মামলার তদন্ত করবেন সাব ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) সান্টু কুমার দেব।
মধুখালী থানার এজাহার বা মামলা সূত্রে জানা যায়, চর গয়েশপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেন শেখের পুত্র মোঃ আকাশ শেখ (১৫) ইটের ভাটায় শ্রমিকের কাজ করে। গত ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর তারিখে রাত অনুমান ৮.৩০ টার সময় আকাশ শেখ চর গয়েশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এলাকার অন্যান্য ছেলেদের সাথে পিকনিক করার কথা বলে বাড়ি হতে বের হয়ে যায়৷ কিন্তু সে পিকনিক করে বাড়িতে ফিরে না আসলে বাড়ির সবাই নিকট আত্মীয় স্বজনদের বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে খোজাখুজি শুরু করে।
এরপর গত ৩ জানুয়ারি ২০২৪ সালে মধুখালী থানায় গিয়ে নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি করে, যার জিডি নং- ১১৯, তারপর দিন ৪ জানুয়ারি সকাল অনুমান ৬.৩০ টার স্থানীয় লোকজনের নিকট হতে সংবাদ পাই বিল্লাল শেখের বাড়ি হতে ৭০০ বা ৮০০ শত গজ পশ্চিম পাশে মধুমতী নদীর চরের ঢালে আকাশ শেখের মৃতদেহ ভাসছে। মৃতদেহ আকাশ শেখের মাথার ডান পাশে কানের উপর ধারালো অস্ত্রের ৩টি কাটা জখম এবং মাথার পিছনের নিচের দিকে একটা কাটাজখম দেখা যায়। বিল্লাল শেখের ধারণা গত ৩১ ডিসেম্বর রাত অনুমান ৮.৩০ টার সময় হতে ৪ জানুয়ারি সকাল অনুমান ৬.৩০ টার সময়ের মধ্যে যে কোন সময় অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী বা দুষ্কৃতকারীরা আকাশ শেখকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা মাথায় কোপ মেরে হত্যা করে মৃতদেহ মধুমতী নদীতে ফেলে দেয়।
পরবর্তীতে মধুখালী থানার পুলিশ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করে আকাশ শেখের লাশটি পোস্ট মর্টাম বা ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মর্গে প্রেরণ করে। বিল্লাল হোসেন শেখ এজাহারে উল্লেখ করেন যে, এই আকাশ শেখ হত্যা ঘটনার সাথে আমাদের চর গয়েশপুর গ্রামের আক্কাস শেখের পুত্র জাকির শেখ (৫৪) জড়িত থাকতে পারে মর্মে সন্দেহ করা হচ্ছে।
উক্ত জাকির শেখ একজন ধুরন্দর লোক, তিনি বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে এলাকায় ব্যাপক জনশ্রুতি রয়েছে। রবিবার ২১ মার্চ ২০২১ সালের তারিখে ফরিদপুর থেকে প্রকাশিত প্রথম দৈনিক গণসংহতি পত্রিকায় কামারখালী প্রতিনিধি লতিফা বেগম ও জাকির শেখকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদের হেডলাইন ছিলো, ছোট ভাই বউয়ের ঘরে ভাসুরের ঢোকার অভিযোগ।
- আরও পড়ুনঃ নড়াইলে পাঁচ ইটভাটাকে ১২ লাখ টাকা জরিমানা
পিকনিকের দিন চরগয়েশপুর গ্রামের যুবক ছেলেদের মধ্যে আলমগীর হোসেনের পুত্র শাওন, শরিফুল শেখের পুত্র নয়ন, মৃত চাঁদ আলীর পুত্র সাজ্জাদ শেখ, মৃত রাজ্জাক শেখের পুত্র শাহবুর, নায়েব আলীর পুত্র ইকরাম মন্ডল, মৃত সেলিমের পুত্র সৈয়দ শেখ, মিজানুর জোয়ার্দ্দারের পুত্র বোরহান, মৃত মোহাম্মদ আলীর পুত্র মুন্না, মোক্তার শেখের পুত্র তামিম, ওদুদ মুন্সির পুত্র এরশাদ, পান্নু শেখের পুত্র রনি এবং মাহফুজ, পারভেজ, নাসিম, রায়হান ও বাপ্পি জানায় আকাশ শেখ পিকনিকে এসে পানি টেনে দিয়ে ছিলো, তবে রাতে কোথায় কার সাথে গিয়ে ছিলো এটা আমাদের কারোর জানা নেই। জাকিরের মুঠোফোনের ৪ টি গ্রামীণ ফোন নম্বরে ফোন দিলে বন্ধ পাওয়া যায় তবে শুক্রবার ২ ফেব্রুয়ারী দুপুর ১.১৭ টার সময় একটা সীম ০১৭০৪ কোডের নম্বর রিসিভ হলে মেয়ে কন্ঠ পাওয়া যায় তবে তিনি জানান জাকির নামে কাউকে চিনেন না তিনি।
প্রিন্ট