গুজরাট রাজ্য সরকারের নির্দেশক্রমে ২০২২ সালে আগস্টে ওই ১১ জন অপরাধীকে মুক্তি দেওয়া হয়। হিন্দুত্ববাদীরা আসামিদের মুক্তির পর উল্লাস প্রকাশ করে যা নিয়ে বেশ সমালোচনা হয় বিশ্ব জুড়ে।
আসামিদের মুক্তির নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করেন বিলকিস বানো। এ সংক্রান্ত আবেদনে আদালতে বিলকিস বলেন, ওইসব অপরাধীদের মুক্তির মধ্য দিয়ে ‘সমাজের বিবেক লজ্জিত হয়েছে’। এভাবে মুক্তিদানকে দেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়ংকর অপরাধ হিসেবে দাবি করেন তিনি।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের দুই সদস্যের বেঞ্চ বলেন, ‘প্রতিবেশী রাজ্য মহারাষ্ট্রের আদালতে ওইসব অপরাধী ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় গুজরাট রাজ্য সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মুক্তিদানের ব্যাপারে যোগ্য কর্তৃপক্ষ নয়।’ এ সময় বিচার ও আইনের শাসনের মর্যাদা ঊর্ধ্বে তুলে ধরাকে ‘প্রাথমিক কর্তব্য’ আখ্যা দিয়ে আদালত জানায়, বিচারপ্রক্রিয়া দোষী সাব্যস্তদের অধিকারই শুধু আমলে নেয় না, বরং ভুক্তভোগীর অধিকারও বিবেচনায় নেয়।
ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন এই দাঙ্গা ছড়ায়। বিজেপি এবং দলটির সহযোগী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে দাঙ্গা ছড়াতে উসকানি দেওয়া ও ভূমিকা রাখার অভিযোগ রয়েছে। মোদির বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, তার সরকার দাঙ্গা প্রতিরোধে কোনো ভূমিকা গ্রহণ করেনি।
সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীরা ২০০৮ সালে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন। তারা ১৪ বছরের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন। বয়স এবং ভালো ব্যবহার বিবেচনায় নিয়ে তাদের মুক্তি দেয় গুজরাট সরকার। মুক্তির আদেশটি কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন করে। অপরাধীদের মুক্তির পর মিষ্টিমুখ করে তাদের বরণ করে নেওয়া হয়।
২০০২ সালে গুজরাটের গোধরা এলাকায় হিন্দু তীর্থযাত্রীদের ওপর হামলায় ৬০ জন নিহত হওয়ার পর মুসলিম গ্রামগুলোতে শুরু হয় নির্বিচারে আক্রমণ। তিন দিনে প্রায় এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়, যার বেশিরভাগই ছিলেন মুসলিম। একদিন সকালে ওই সময়কার ১৯ বছর বয়সী গৃহবধূ বিলকিস অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ধর্ষণের শিকার হন। ওই ঘটনায় হওয়া মামলায় সাজা পান আসামিরা।