ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

চাঁদা তুলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিজয় দিবস উদযাপন হবে!

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে এবার বিজয় দিবস বর্ণাঢ্যভাবে পালন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে অভিযোগ উঠেছে, পৌরসদরে অবস্থিত ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকদের নিকট থেকে আদায়কৃত টাকায় এই জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন।

জানা গেছে, মহান বিজয় দিবস পালন এবং বিজয় দিবস ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান উপলক্ষে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স এবং ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের জন্য বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। খেলাধুলার মধ্যে ছিলো ব্যাডমিন্টন, ক্যারম, টেবিল টেনিস, দাবা ও লুডু।

 

গত ১৩ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে এসব খেলা অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিজয় দিবসের দিন বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হবে। মহান বিজয় দিবসের দিন দিবসটি উপলক্ষে নানা পদের ভোজনেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

 

অভিযোগ উঠেছে, গত ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম এম নাহিদ আল রাকিব তার অফিস কক্ষে বোয়ালমারী পৌর সদরে অবস্থিত ক্লিনিক ও ডায়াগস্টিক সেন্টারের মালিকদের ডেকে আনেন। এ সময় প্রত্যেক ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা ধরা হয়। আর যেসব ক্লিনিকে ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে তাদের ৭ হাজার টাকা করে ধরা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ক্লিনিক ও প্যাথলজি সেন্টারের মালিক এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। বোয়ালমারী প্রাইভেট ক্লিনিক অনার্স এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ওই ধার্যকৃত চাঁদার টাকা আদায় করা হচ্ছে।
মালিকপক্ষের দাবি, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারসমূহ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার তদারকিতে থাকায় তারা বাধ্য হয়ে চাঁদা পরিশোধ করেছেন কিংবা করছেন।

 

সূত্র জানায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সড়কে অবস্থিত আল-আমিন ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড সার্জিক্যাল ক্লিনিককে ৭ হাজার, বোয়ালমারী ডিজিটাল ল্যাবকে ৫হাজার, সেবা সার্জিক্যাল ক্লিনিককে ১০ হাজার, রেজিস্ট্রি অফিসের পাশে অবস্থিত ডা. এ হালিম হাসপাতালকে ৭ হাজার টাকা চাঁদা ধরা হয়েছে। পৌর সদরে ৮টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ৭টি ক্লিনিক চালু রয়েছে।

এ ব্যাপারে বোয়ালমারী প্রাইভেট ক্লিনিক অনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মাসুদ মিয়া বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের খরচ বাবদ ক্লিনিক ও প্যাথলজি প্রতি গড়ে হাজার পাঁচেক টাকা পড়েছে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজা মিয়াও টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করে বলেন, টিএইচও সব ক্লিনিক মালিকদের ডেকে জানান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। এজন্য অনেক খরচ হবে, আপনারা সহযোগিতা করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম এম নাহিদ আল রাকিব বলেন, আমি এ বছর জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করার উদ্যোগ নিয়েছি। বোয়ালমারীতে সেবা দানরত ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো আমার স্বাস্থ্য সেবার অংশ। বিজয় দিবস উদযাপন প্রস্তুতি সভায় তাঁদেরকে আমি ডেকেছিলাম। তাঁদেরকে আহ্বান জানিয়েছি,আপনারা ইচ্ছা করলে এই অনুষ্ঠানে শরীক হতে পারেন। তাঁদের অনেকেই স্বেচ্ছায় অংশগ্রহনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কাউকে চাঁদার পরিমাণ নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি। কারো উপর কোন জোরজবরদস্তি নেই। আমরা মহান বিজয দিবসের অনুষ্ঠানে সাংবাদিক সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোককে আমন্ত্রণ জানাবো।

 

 

জানতে চাইলে ফরিদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, আপনার মাধ্যমেই আমি এটা প্রথম শুনলাম। বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা যদি এমনটি করে থাকেন তবে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

চাঁদা তুলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিজয় দিবস উদযাপন হবে!

আপডেট টাইম : ০৬:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩
বিশেষ প্রতিনিধি :

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে এবার বিজয় দিবস বর্ণাঢ্যভাবে পালন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে অভিযোগ উঠেছে, পৌরসদরে অবস্থিত ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকদের নিকট থেকে আদায়কৃত টাকায় এই জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন।

জানা গেছে, মহান বিজয় দিবস পালন এবং বিজয় দিবস ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান উপলক্ষে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স এবং ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের জন্য বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। খেলাধুলার মধ্যে ছিলো ব্যাডমিন্টন, ক্যারম, টেবিল টেনিস, দাবা ও লুডু।

 

গত ১৩ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে এসব খেলা অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিজয় দিবসের দিন বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হবে। মহান বিজয় দিবসের দিন দিবসটি উপলক্ষে নানা পদের ভোজনেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

 

অভিযোগ উঠেছে, গত ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম এম নাহিদ আল রাকিব তার অফিস কক্ষে বোয়ালমারী পৌর সদরে অবস্থিত ক্লিনিক ও ডায়াগস্টিক সেন্টারের মালিকদের ডেকে আনেন। এ সময় প্রত্যেক ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা ধরা হয়। আর যেসব ক্লিনিকে ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে তাদের ৭ হাজার টাকা করে ধরা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ক্লিনিক ও প্যাথলজি সেন্টারের মালিক এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। বোয়ালমারী প্রাইভেট ক্লিনিক অনার্স এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ওই ধার্যকৃত চাঁদার টাকা আদায় করা হচ্ছে।
মালিকপক্ষের দাবি, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারসমূহ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার তদারকিতে থাকায় তারা বাধ্য হয়ে চাঁদা পরিশোধ করেছেন কিংবা করছেন।

 

সূত্র জানায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সড়কে অবস্থিত আল-আমিন ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড সার্জিক্যাল ক্লিনিককে ৭ হাজার, বোয়ালমারী ডিজিটাল ল্যাবকে ৫হাজার, সেবা সার্জিক্যাল ক্লিনিককে ১০ হাজার, রেজিস্ট্রি অফিসের পাশে অবস্থিত ডা. এ হালিম হাসপাতালকে ৭ হাজার টাকা চাঁদা ধরা হয়েছে। পৌর সদরে ৮টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ৭টি ক্লিনিক চালু রয়েছে।

এ ব্যাপারে বোয়ালমারী প্রাইভেট ক্লিনিক অনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মাসুদ মিয়া বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের খরচ বাবদ ক্লিনিক ও প্যাথলজি প্রতি গড়ে হাজার পাঁচেক টাকা পড়েছে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজা মিয়াও টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করে বলেন, টিএইচও সব ক্লিনিক মালিকদের ডেকে জানান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। এজন্য অনেক খরচ হবে, আপনারা সহযোগিতা করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম এম নাহিদ আল রাকিব বলেন, আমি এ বছর জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করার উদ্যোগ নিয়েছি। বোয়ালমারীতে সেবা দানরত ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো আমার স্বাস্থ্য সেবার অংশ। বিজয় দিবস উদযাপন প্রস্তুতি সভায় তাঁদেরকে আমি ডেকেছিলাম। তাঁদেরকে আহ্বান জানিয়েছি,আপনারা ইচ্ছা করলে এই অনুষ্ঠানে শরীক হতে পারেন। তাঁদের অনেকেই স্বেচ্ছায় অংশগ্রহনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কাউকে চাঁদার পরিমাণ নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি। কারো উপর কোন জোরজবরদস্তি নেই। আমরা মহান বিজয দিবসের অনুষ্ঠানে সাংবাদিক সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোককে আমন্ত্রণ জানাবো।

 

 

জানতে চাইলে ফরিদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, আপনার মাধ্যমেই আমি এটা প্রথম শুনলাম। বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা যদি এমনটি করে থাকেন তবে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।


প্রিন্ট