আত্রাই হানাদার মুক্ত দিবস আজ। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর আত্রাই বাসির জন্য একটি স্মরণীয় দিন। এই দিনে আত্রাই উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়।
স্বাধীনতা সংগ্রামে সাড়া দিয়ে সারাদেশে ন্যায় এই উপজেলার (থানার) মুক্তি গামী মানুষ কামার, কুমার, তাঁতি, সর্ণকার, কৃষক, মজুর, ছাত্র, জনতা সর্বস্তরের মানুষ মাতৃভূমিকে শত্রু মুক্ত করার জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ৯ মাস যাবৎ রক্তক্ষয় লড়াইয়ের পড় আত্রাই উপজেলা বাসী আজকের এই দিনে শত্রু মুক্ত হয়ে বিজয়ের উল্লাস ও জয় বাংলার জয়ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তুলেছিলো উপজেলার আকাশ বাতাস।
আত্রাইকে পাক হানাদার মুক্ত করতে অসংখ্য জীবন বলিদান এবং কত অসহায় মা- বোনের ইজ্জত লন্ঠিত হয়েছিল তার সঠিক পরিসংখ্যান কেউ জানে না।
এছাড়া ও পুঙ্গুত্বের অভিসাপ আর মা – বাবা, স্বামী স্ত্রী, ভাই বোন হারানো অসংখ্য যন্ত্রনা নিয়ে এখনো অনেক নারী পুরুষ বেঁচে আছে। স্বাধীনতার এতো বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ তাদের খোঁজ খবর রাখেনি।
সাবেক এমপি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আঞ্চলিক কমান্ডার অহিদুর রহমান জানান সেই সময় চলাচলের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্হা তেমন ভালো ছিল না। রেল পথ ও নৌকা পথই ছিলো যোগাযোগের এক মাত্র পথ। তাই আমরা পরিকল্পনা করে ১৯৭১ সালের ৬ ই সেপ্টেম্বর আত্রাই সান্তাহার অংশে শাহাগোলা নামক স্হানে শাহাগোলা রেলওয়ে ব্রিজটি ধ্বংস করে দিয়।
এসময় নাটোর থেকে পাক সেনা ভর্তি একটি স্পেশাল ট্রেন রাতে লাইট বন্ধ করে ওই ভাঙ্গা ব্রিজ অতিক্রম কালে ট্রেনটি বিকট শব্দে ওই ব্রিজের নিচে পড়ে যায়।এতে করে পানিতে ডুবে অনেক পাক বাহিনী মারা যায় এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় জয় ছিল।
এছাড়া ১৯৭১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আত্রাই কাম্প থেকে পাক সেনারা নৌকা যোগে বান্দাইখারা হিন্দু পাড়া গণহত্যা অগ্নি সংয়োগ করে আত্রাই কাম্পে ফেরার পথে বাউল্লা তারানগর নামক স্থানে মুক্তি বাহিনীর সাথে পাক বাহিনীর তুমল সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে পাক বাহিনীদের ব্যবহৃত সাতটি নৌকা নদীতে ডুবিয়ে দেয় মুক্তিযোদ্ধারা। এতে অনেক পাক বাহিনী ও রাজাকাররা হতাহতো হয়।
- আরও পড়ুনঃ ভোটবিরোধী রাজনৈতিক সমাবেশ বন্ধের নির্দেশ
শাহাগোলা ও বাউল্লা তারানগর যুদ্ধ ছিলো সেই সময়ের অত্র এলাকার মুক্তি বাহিনীদের বড় বিজয়। এরপর পাক বাহিনী রা যুদ্ধে পরাজিত হয়ে নাটোর অভিমুখে পালিয়ে যায়। পড়ে মুজিব বাহিনী মুক্তি বাহিনী ও জনতা রাত ২ টায় প্রথম আত্রাই থানায় পদার্পণ করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে। আর আমার এভাবেই ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর আত্রাইকে হানাদার মুক্ত করি।
প্রিন্ট