ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নে পদ্মা নদীর অপর পারের দুর্গম চরের রমেশ বালার ডাঙ্গী গ্রামে ভাইয়ের আশ্রয়ে বসবাসরত অসহায় বীরঙ্গনা চারুবালা (৬৭) এর খুপড়ী ঘর সরিয়ে চারচালা টিনের ঘর তুলে দিচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশ। ফরিদপুর পুলিশ সুপার মোঃ আলীমুজ্জামান বিপিএম এর নির্দেশনায় চরভদ্রাসন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জাকারিয়া হোসেন বীরঙ্গনার বসতঘর নির্মান কাজ বাস্তবায়ন করে চলেছেন।
গত শুক্রবার থেকে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সরেজমিনে উপস্থিত থেকে উক্ত বীরঙ্গনার বসতভিটেয় ঘর নির্মান কাজ শুরু করেন। এ সময় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চরভদ্রাসন থানার সেকেন্ড অফিসার মোঃ ফিরোজ আলী মোল্যা, এসআই আওলাদ হোসেন, এএসআই মোঃ রেজাউল করিম ও ওমর আলী প্রমূখ। ঘরটি নির্মান শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে বীরঙ্গনাকে হস্তান্তর করা হবে বলে জানা যায়।
এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানা জানান, “ মহান মুক্তিযুদ্ধে চারুবালার উপর নির্যাতন ও তার স্বামী, সন্তান হত্যাকান্ডের বিষয়টি তদন্ত করে আমি সত্যতা পাই। পরে জেলা প্রশাসনের কাছে আমি লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছি। জেলা প্রশাসক মহোদয় নারী মুক্তিযোদ্ধা (বীরঙ্গনা) স্বিকৃতির জন্য সুপারিশ করে উক্ত প্রতিবেদনটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে পাঠিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, “ চারুবালাকে আমরা যাবতীয় সরকারি সুবিধা প্রদান করা সহ প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক একটি থাকার ঘরও তার নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অচিরেই প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর নির্মান কাজ শুরু হবে”।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৭ মে দুপুরে ২০/২৫ জন পকিস্থানী সেনা চারুবালার পরিবারে ঢুকে তার স্বামী চন্দ্র কান্ত বিশ্বাসকে গুলি করে হত্যা করে এবং চারুবালার কোলে থাকা শিশু কন্য পার্বতীকে আছড়িয়ে মেরে ফেলার পর তাকে গণধর্ষণ করে পাকবাহিনী।
স্বাধীনতার ৫০ বছরকাল অসহায় বীরঙ্গনা চারুবালা নিঃস্ব জীবনযাপন করে চলছিল এবং বিভিন্ন নেতাকর্মীর পিছনে ছুটাছুটি করার পরও রাষ্ট্রিয় স্বিকৃতি পায় নাই। সম্প্রতী ফরিদপুর জেলা শহীদ স্মৃতি সংরক্ষন কমিটির সভাপতি সাজ্জাদুল হক সাজ্জাদ ও জেলা সদস্য মোঃ নুরুল ইসলাম মিন্টু চরাঞ্চলের পড়ে থাকা উক্ত বীরঙ্গনাকে খুজে বের করে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অবগত করার পর তোলপাড় শুরু হয়।
প্রিন্ট