খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। ইতি মধ্যেই খেজুর গাছের বাকল তুলে চেঁছে ছুলে খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছ উপযুক্ত করতে ব্যস্ত হয়ে পরেছেন স্থানীয় গাছিরা।
প্রতি বছর শীতের আগাম বার্তা আসার সাথে সাথেই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত হয়ে পরেন গাছিরা তারই ধারাবাহিকতায় খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছ তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পরেছেন গাছীরা। এ জন্য গাছ থেকে বাকল তুলা, নালি লাগানো, গাছে হাড়ি পাতা সহ আনুশঙ্গীক কাজ করছেন তাঁরা।
প্রতি বছর শীত মৌসুমে খেজুরের রসের পিঠা পুলি, পায়েশ ও বিভিন্ন প্রকার পিঠা খাওয়ার ধুম পরে যায়। এ ছারাও মুরি দিয়ে খেজুর রস খাওয়ার মজাটাই জেন আলাদা। তাছারা ফরিদপুর জেলার খেজুরের রসের সুনাম দীর্ঘদিন যাবৎ।
এব্যাপারে কথা হয় উপজেলার শৌলডুবী গ্রামের মিলন গাছির সাথে। তিনি বলেন এবছর ৪০ টির মত গাছ রেডি করেছি। রস সংগ্রহের জন্য ইতিমধ্যেই গাছ তৈরি করতে কাজ করছি। খুব শিগরি গাছে হাড়ি লাগানো হবে। তিনি আরো বলেন এখন ভেজালের যুগে আর ফ্রেস খেজুরের গুর পাওয়া খুব দুরহ ব্যাপার। সবাই এখন চিনির মিশ্রনে গুড় তৈরি করেন। কারন প্রকৃত পক্ষে ফ্রেস এক কেজি খেজুর গুরের দাম পরবে কমপক্ষে ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা। অথচ ক্রেতারা ২০০ টাকার বেসি দিয়ে খেজুরের গুর কিনতে অনাগ্রহীর কারনে গুরের মধ্যে গাছিরা ভেজাল দিতে অনেকটা বাধ্য হচ্ছেন। তবে আমি কোন প্রকার ভ্যাজাল ছারাই ফ্রেস গুর তৈরী করি। কতটাকা দরে কেজি বিক্রি করেন জানতে চাইলে বলেন আমার নিকট প্রতি বছর ঢাকা সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে কিছু সৌখিন ব্যক্তিরা আমার কাছে আগাম খেজুরের গুরের অর্ডার দিয়ে থাকেন। তাদের জন্য প্রতি বছর আমি ফ্রেস গুর তৈরী করি এবং তাদের কাছে প্রতি কেজি ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করেন বলে জানান তিনি।
অপর গাছি সুমন মিয়া বলেন, আমি এবার ২৫ টি খেজুর গাছ রস সংগ্রহের জন্য তৈরি করছি। রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছ তৈরির কাজ প্রায় শেষের পথে। অল্প কয়েক দিন পরেই রস সংগ্রহের জন্য গাছে হাড়ি লাগানো হবে।
ভ্যাজাল গুর তৈরী সম্পর্কে তিনি জানান যদি চিনির দাম আরো বেসি হলে কেউ খেজুরের গুরের মধ্যে চিনি মিশাতে পারতোনা। গুরের পরিবর্তে আমি প্রতি বছর কাঁচা রস প্রতি লিটার ১০০ টাকায় বিক্রি করি। বর্তমানে খাটি খেজুর গুর কেনার লোকের অভাব,তাই কাঁচা রস বিক্রিতে ঝামেলা যেমন কম আবার ক্রেতাও বেসি। তাই এখন আর গুর তৈরীর ঝামেলায় যাননা বলে জানান তিনি।
- আরও পড়ুনঃ ইসির নির্দেশে ৪৭ ইউএনও বদলি
প্রতি শীত মৌসুম ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় গাছিরা খেজুর রস সংগ্রহ করে পাটালিগুর, ঝোলাগুর সহ বিভিন্ন প্রকার গুর তৈরী করেন। অপর একটি চক্র প্রতি বছর ভ্যাজাল গুর তৈরী করে বাজারজাত করেন। মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করে অনেককে জেল জরিমানা করেন। তারপরও থেমে নেই ভ্যাজাল গুর তৈরীর প্রতিযোগিতা। এই ভ্যাজাল গুর খেয়ে অনেকে বিভিন্ন প্রকার রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। থেকে যাচ্ছে সাস্থ ঝুকি। তাই ভ্যাজাল গুর তৈরী বন্ধ করতে প্রশাসন সু-দৃষ্টি দেবেন এমুনটাই প্রত্যাসা সদরপুর উপজেলা বাসীর।
প্রিন্ট