ঢাকা , শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ইরানের খামেনির কাছে সৌদি বাদশাহর ‘গোপন’ চিঠি Logo আ.লীগ একটি বাজে দল, প্রত্যেক লিডারশিপের হাতে রক্তঃ -প্রেস সচিব শফিকুল আলম Logo দৌলতপুর সীমান্তে মাদকসহ ৩ ভারতীয় আটক Logo লালপুরে মারধর ও প্রকাশ্যে গুলি চালিয়েছে মাদক ব্যবসায়ী, আহত ১ Logo বাঘায় পুকুরে গোসল করতে নেমে বয়স্ক নারীর মৃত্যু Logo সদরপুর থানায় নবাগত ওসি নাজমুল হাসানের যোগদান Logo রূপগঞ্জে বালুনদীর উপর চনপাড়া সেতু যেন মরনফাঁদ! Logo ইমাম কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত Logo কাঁফনের কাপড় মাথায় বেঁধে ফরিদপুর পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের গণমিছিল Logo সরকারি খাল দখল করে তিনতলা ভবন নির্মাণ, বোয়ালমারীতে কৃষকদের মানববন্ধন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

শরিকদের সঙ্গে বৈঠক

আসন সমঝোতায় যথাযথ মূল্যায়নের আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর

-গণভবনে ১৪ দলের শরিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

আগামী নির্বাচনে আসন বণ্টন প্রশ্নে ১৪ দলের শরিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সোমবার শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে এই বৈঠকে আসন সমঝোতার ক্ষেত্রে জোটসঙ্গীদের যথাযথ মূল্যায়নের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

 

সোমবার তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে ১৪ দলের শরিক নেতাদের এই বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সন্ধ্যা ৬টায় শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকটি শুরু হয়।

 

বৈঠকে আওয়ামী লীগ বাদে জোটের অন্য ১২টি শরিক দলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক-সদস্য সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। ১৪ দলের সমন্বয়ক-মুখপাত্র আমু ছাড়াও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলটির নীতিনির্ধারক কয়েকজন নেতাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

 

বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, আগামী নির্বাচনে শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয়টিই বৈঠকের মূল এজেন্ডা ছিল। শরিক দলগুলোর নেতারা নিজ নিজ দলের পক্ষে কাঙ্ক্ষিত আসনের ‘সংক্ষিপ্ত তালিকা’ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর হাতে। এ সময় ভোটের মাঠের জনপ্রিয়তা ও জয়লাভের সক্ষমতার বিষয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে শরিকদের কাকে কোন আসনে ছাড় দেওয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

 

আসন সমঝোতার আলোচনার লক্ষ্যে শরিকরা এর আগেই স্ব-স্ব দলের ‘সংক্ষিপ্ত প্রার্থী তালিকা’ ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমুর কাছে জমা দিয়ে রেখেছিল। এ ক্ষেত্রে মূলত বর্তমান সংসদে এমপি আছেন– ১৪ দলের এমন শরিক চার দলকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এই চার দলের মধ্যে একাদশ সংসদে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির তিনজন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) তিনজন, জাতীয় পার্টির (জেপি) একজন এবং তরীকত ফেডারেশনের একজনসহ মোট আটজন এমপি রয়েছেন। এর বাইরে অন্য শরিক দলগুলোকেও যথাযথ মূল্যায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।

 

১৪ দলের সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ ছাড়া ১৪ দলের অন্য ১২টি শরিক দল মিলিয়ে কমপক্ষে ৪৪টি আসনে ছাড় দাবি করা হয়েছে। তবে ২৪টি আসনে সমঝোতার জন্য ‘দরকষাকষি’ করার প্রস্তুতিও নিয়েছে তারা। আগামী নির্বাচনে জোটকে জয়ী করার স্বার্থে ‘সর্বোচ্চ ছাড়’ দিতেও প্রস্তুত তারা।

 

অন্যদিকে, সমঝোতা হলে ছাড় পাওয়া আসনগুলোতে নৌকা প্রতীকে লড়বেন শরিক দলের প্রার্থীরা। তবে সমঝোতার বাইরে অন্য অনেক আসনে দলীয়ভাবে ও দলীয় প্রতীকেও নির্বাচনের প্রস্তুতি রয়েছে দলগুলোর। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন থাকা প্রতিটি শরিক দল কমবেশি আসনে দলীয় প্রার্থী দিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করে রেখেছে। এ ছাড়া সোমবারের বৈঠকে নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে শরিকদের প্রতি চলে আসা ‘অবহেলা’ ও ‘অবমূল্যায়ন’-এর কথাও তুলে ধরেন কয়েকজন নেতা।

 

এর আগে আসন সমঝোতার প্রশ্নে আলোচনার জন্য বেশ কয়েক দিন ধরেই প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের অপেক্ষায় ছিল ১৪ দলের শরিকরা। কিন্তু তৃণমূল বিএনপি এবং ছোট ছোট ইসলামী দলের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সুযোগ পেলেও ১৪ দলকে ডাকা হয়নি। অবশ্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াকে দিয়ে ফোন করে শরিক দলগুলোর নেতাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের জন্য প্রস্তুত থাকার কথা জানানো হয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত বৈঠকটি হয়নি।

 

এ অবস্থায় ক্ষুব্ধ শরিক দলগুলো আলাদা বৈঠক করে নিজেদের করণীয় নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ১৪ দল সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু শরিকদের ক্ষোভ নিরসনের উদ্যোগ নেন। পরে শনিবার আমুর বাসায় গিয়ে শরিক দলগুলোর নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের জন্য পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান তাঁকে। একই সঙ্গে আসন সমঝোতার প্রত্যাশায় নিজ নিজ ‘সংক্ষিপ্ত তালিকা’ লিখিত বা মৌখিকভাবে তাঁর কাছে দিয়ে আসেন তারা। ১৪ দলের সমন্বয়ক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে দু-একদিনের মধ্যে বৈঠক এবং শরিকদের দেওয়া তালিকা উপস্থাপনের আশ্বাস দেন। অবশেষে সোমবার শেখ হাসিনার সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত সেই বৈঠকের সুযোগ পায় শরিকরা।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ইরানের খামেনির কাছে সৌদি বাদশাহর ‘গোপন’ চিঠি

error: Content is protected !!

শরিকদের সঙ্গে বৈঠক

আসন সমঝোতায় যথাযথ মূল্যায়নের আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর

আপডেট টাইম : ১১:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩
সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক : :

আগামী নির্বাচনে আসন বণ্টন প্রশ্নে ১৪ দলের শরিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সোমবার শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে এই বৈঠকে আসন সমঝোতার ক্ষেত্রে জোটসঙ্গীদের যথাযথ মূল্যায়নের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

 

সোমবার তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে ১৪ দলের শরিক নেতাদের এই বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সন্ধ্যা ৬টায় শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকটি শুরু হয়।

 

বৈঠকে আওয়ামী লীগ বাদে জোটের অন্য ১২টি শরিক দলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক-সদস্য সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। ১৪ দলের সমন্বয়ক-মুখপাত্র আমু ছাড়াও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলটির নীতিনির্ধারক কয়েকজন নেতাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

 

বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, আগামী নির্বাচনে শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয়টিই বৈঠকের মূল এজেন্ডা ছিল। শরিক দলগুলোর নেতারা নিজ নিজ দলের পক্ষে কাঙ্ক্ষিত আসনের ‘সংক্ষিপ্ত তালিকা’ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর হাতে। এ সময় ভোটের মাঠের জনপ্রিয়তা ও জয়লাভের সক্ষমতার বিষয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে শরিকদের কাকে কোন আসনে ছাড় দেওয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

 

আসন সমঝোতার আলোচনার লক্ষ্যে শরিকরা এর আগেই স্ব-স্ব দলের ‘সংক্ষিপ্ত প্রার্থী তালিকা’ ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমুর কাছে জমা দিয়ে রেখেছিল। এ ক্ষেত্রে মূলত বর্তমান সংসদে এমপি আছেন– ১৪ দলের এমন শরিক চার দলকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এই চার দলের মধ্যে একাদশ সংসদে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির তিনজন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) তিনজন, জাতীয় পার্টির (জেপি) একজন এবং তরীকত ফেডারেশনের একজনসহ মোট আটজন এমপি রয়েছেন। এর বাইরে অন্য শরিক দলগুলোকেও যথাযথ মূল্যায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।

 

১৪ দলের সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ ছাড়া ১৪ দলের অন্য ১২টি শরিক দল মিলিয়ে কমপক্ষে ৪৪টি আসনে ছাড় দাবি করা হয়েছে। তবে ২৪টি আসনে সমঝোতার জন্য ‘দরকষাকষি’ করার প্রস্তুতিও নিয়েছে তারা। আগামী নির্বাচনে জোটকে জয়ী করার স্বার্থে ‘সর্বোচ্চ ছাড়’ দিতেও প্রস্তুত তারা।

 

অন্যদিকে, সমঝোতা হলে ছাড় পাওয়া আসনগুলোতে নৌকা প্রতীকে লড়বেন শরিক দলের প্রার্থীরা। তবে সমঝোতার বাইরে অন্য অনেক আসনে দলীয়ভাবে ও দলীয় প্রতীকেও নির্বাচনের প্রস্তুতি রয়েছে দলগুলোর। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন থাকা প্রতিটি শরিক দল কমবেশি আসনে দলীয় প্রার্থী দিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করে রেখেছে। এ ছাড়া সোমবারের বৈঠকে নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে শরিকদের প্রতি চলে আসা ‘অবহেলা’ ও ‘অবমূল্যায়ন’-এর কথাও তুলে ধরেন কয়েকজন নেতা।

 

এর আগে আসন সমঝোতার প্রশ্নে আলোচনার জন্য বেশ কয়েক দিন ধরেই প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের অপেক্ষায় ছিল ১৪ দলের শরিকরা। কিন্তু তৃণমূল বিএনপি এবং ছোট ছোট ইসলামী দলের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সুযোগ পেলেও ১৪ দলকে ডাকা হয়নি। অবশ্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াকে দিয়ে ফোন করে শরিক দলগুলোর নেতাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের জন্য প্রস্তুত থাকার কথা জানানো হয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত বৈঠকটি হয়নি।

 

এ অবস্থায় ক্ষুব্ধ শরিক দলগুলো আলাদা বৈঠক করে নিজেদের করণীয় নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ১৪ দল সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু শরিকদের ক্ষোভ নিরসনের উদ্যোগ নেন। পরে শনিবার আমুর বাসায় গিয়ে শরিক দলগুলোর নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের জন্য পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান তাঁকে। একই সঙ্গে আসন সমঝোতার প্রত্যাশায় নিজ নিজ ‘সংক্ষিপ্ত তালিকা’ লিখিত বা মৌখিকভাবে তাঁর কাছে দিয়ে আসেন তারা। ১৪ দলের সমন্বয়ক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে দু-একদিনের মধ্যে বৈঠক এবং শরিকদের দেওয়া তালিকা উপস্থাপনের আশ্বাস দেন। অবশেষে সোমবার শেখ হাসিনার সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত সেই বৈঠকের সুযোগ পায় শরিকরা।


প্রিন্ট