১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিদেশের মাটিতে প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলনকারী এবং প্রথম কুটনীতিক যিনি পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে ৬৫ জন সহকর্মী নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন, তিনি হলেন পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার কৃতি সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রদূত এম. হোসেন আলী।
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার মুজিব নগরে প্রবাসী সরকারের শপথ গ্রহনের পরেরদিন ১৮ এপ্রিল কলকাতায় অবস্থিত পাকিস্তানের উপ দুতাবাসের ডিপুটি হাইকমিশনার এম. হোসেন আলী তাঁর অফিস থেকে পাকিস্তানী পতাকা নামিয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। তাঁর অধীনস্থ ৬৫ জন বাঙালী কর্মকর্তা কর্মচারী বাংলাদেশের পক্ষ অবলম্বন করেন। এই ঘটনাটি তৎকালীন সময়ে আন্তর্জাতিক বিশ্বে আলোচিত ঘটনা হয়। ঠিক তেমনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে এ ঘটনাটি দারুনভাবে আলোড়িত হয়।
উল্লেখিত ঘটনার পর প্রবাসী মুজিবনগর সরকার কলকাতার হাই কমিশনকে বাংলাদেশ মিশন নামকরন করে এম. হোসেন আলীকে জৈষ্ঠ কুটনীতিক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িতরা সবাই জানেন, মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অসামান্য অবদানের কথা। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ মিশন ছিল প্রবাসী সরকারের প্রধান কেন্দ্রস্থল। এখান থেকেই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করা হতো। বাংলাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ শরনার্থীর আশ্রয় খাদ্যে সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহে ব্যবস্থা গ্রহন করা এবং পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র প্রদানের ব্যবস্থা করা সহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমর্থন, সহযোগীতা এবং কুটনৈতিক তৎপরতার সব কিছু পরিচালিত হতো কলকাতার পার্ক ষ্ট্রীটে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন থেকে। আর এই সকল কর্মকান্ডের নেপথ্য কারিগর ছিলেন, মিশন প্রধান এম. হোসেন আলী।
প্রিন্ট