ঢাকা , শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ভেড়ামারায় তাপদাহে তালপাতার হাত পাখা বানানোর ধুম Logo শ্রীপুরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা Logo নাটোরের নলডাঙ্গায় গভীর রাতে ৮ খড়ের গাদায় আগুন Logo চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণের আশ্বাস দিলেন মাহমুদা বেগম কৃক Logo নাটোরের লালপুরে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত Logo আলতাব আলী ফাউন্ডেশন প্রবাসী বাঙালিদের অবদানের স্বীকৃতি দাবি করেছে Logo বাসায় ফেরার পথে অরক্ষিত রেল ক্রচিং ট্রেনে কাটা পড়ে এসআই নিহত Logo বোয়ালমারীতে ওয়েসিস বেকারী এন্ড পেস্ট্রি শপের শাখার উদ্বোধন Logo চাটমোহরে বিভিন্ন নদীতে অবৈধভাবে মাটি ও বালি কাটার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন Logo ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের উদ্যোগে কবি মিনতি দত্ত মিশ্রর সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ভুরুঙ্গামারী দারুল উলুম আশরাফিয়া মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীকে অমানবিক নির্যাতন

ভুরুঙ্গামারীতে দারুল উলুম আশরাফিয়া মাদ্রাসার পরিচালক প্রধান শিক্ষক কর্তৃক এক ছাত্রকে মধ্যযুগীয় কায়দার অমানুষিক নির্যাতন ও সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার ঘটনায় উত্তেজিত জনতার মাদ্রাসা ঘেরাও করে শাস্তির দাবী।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দেওয়ানের খামার পুর্ব কলেজ মোড় দারুল উলুম আশরাফিয়া মাদ্রাসায়।
জানাগেছে কয়েক বছর পুর্বে দেওয়ানের খামার গ্রামের সোহরাব হোসেনের পুত্র মুফতী মতিউর রহমান একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দারুল উলুম আশরাফিয়া মাদ্রাসা নামে একটি আবাসিক মাদ্রাসা চালু করে। সেখানে পড়াশোনা করতে আসা ছাত্রদের প্রায় সময়ই সামান্য ভুলভ্রান্তির কারনে ছাত্রদের মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক নির্যাতন করে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে কাউকে জানালে মাদ্রাসা থেকে বহিঃস্কারের ভয়ভীতি প্রদর্শন করতো।
এদিকে গত ৮ অক্টোবর রবিবার ভুরুঙ্গামারী পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ভুরুঙ্গামারী ক্বওমী ওলামা পরিষদের ইসলামী মহাসম্মেলনে বক্তাদের ওয়াজ ভিডিও করতে মাদ্রাসার উর্দু ফার্সী কিতাবখানা বিভাগের ছাত্র একই উপজেলার জয়মনিরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ শিংঝাড় গ্রামের হতদরিদ্র কাঠমিস্ত্রী আনোয়ার হোসেনের পুত্র শামীম হোসেন (১৭) বাড়ি থেকে মোবাইল ফোন আনে।
১০ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকাল আনুমানিক ৩টার সময় শামীম হোসেন মোবাইল ফোনে ওয়াজ শোনার অপরাধে মাদ্রাসার পরিচালক প্রধান শিক্ষক মুফতী মতিউর রহমান ছাত্র শামীমকে তার খাস কামরায় ডেকে নিয়ে তার আরেক সহয়োগী মুফতী সাইফুল্লাহর উপস্থিতিতে মধ্যযুগীয় কায়দায় বাঁশের বাকলা দিয়ে এলোপাথারী মারপীট করে রক্তাক্ত জখম করায় শরীরের বিভিন্ন স্থান ফেটে রক্ত ঝড়তে থাকে।
এ সময় নির্যাতনের শিকার শামীমের আর্তচিৎকারেও মারপীট করতে থাকে ঐ প্রধান শিক্ষক মুফতী মতিউর রহমান। শুধু তাই নয় মারপীটের পর রক্তাক্ত শামীমের নিকট স্ট্যাম্প কেনার টাকা দাবী করলে টাকা দিতে না পারায় আবারও মারপীট চালায় নরপিশাচ মুফতী মতিউর রহমান। পরে নিজেই একটা সাদা স্ট্যাম্প এনে জোর করে স্বাক্ষর নেয় এবং ঘটনা কাউকে বললে মাদ্রাসা থেকে বহিঃস্কারের ভয়ভীতি দেখিয়ে নজরদারীতে রাখেন।
এদিকে শামীম হোসেন রক্তাক্ত অবস্থায় সকলের অজান্তে তার এক খালার বাড়িতে গিয়ে রক্তাক্ত শরীর দেখান এবং বাড়িতে সংবাদ দিতে বলেন। তার খালা বাড়িতে সংবাদ দিলে তার পিতামাতা এসে শামীমকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রকে অমানুষিক মারপীট করে রক্তাক্ত করার ঘটনায় উপস্থিত শত শত জনতা মাদ্রাসা ঘেরাও করে ঐ নরপিশাচ মুফতী মতিউর রহমানের শাস্তি দাবী করে মাদ্রাসার মেইনগেটে অবস্থান নেয়ার সময় পিছনের গেট দিয়ে মুফতী মতিউর রহমান পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে ।
পরে নির্যাতনের শিকার শামীম হোসেনের পিতা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মাদ্রাসার পরিচালক প্রধান শিক্ষক মুফতী মতিউর রহমান ও তার সহযোগী মুফতী সাইফুল্লাহর নামে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
শামীম আরও জানায় প্রায় সময়ই উক্ত প্রধান শিক্ষক ছাত্রদের কারনে অকারনে মারপীট করে এবং সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে রাখে। আজকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঈশ্বরবরুয়া গ্রামের হেফজখানা বিভাগের শামীম ও নাগেশ্বরী উপজেলার সাপখাওয়া গ্রামের ইমরান হোসেনকে মোবাইলে ওয়াজ দেখার কারনে বাঁশের বাকলা দিয়ে মারপীট করেছে।
ভুরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ রুহুল আমিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে।
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ভেড়ামারায় তাপদাহে তালপাতার হাত পাখা বানানোর ধুম

error: Content is protected !!

ভুরুঙ্গামারী দারুল উলুম আশরাফিয়া মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীকে অমানবিক নির্যাতন

আপডেট টাইম : ০৩:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩
ভুরুঙ্গামারীতে দারুল উলুম আশরাফিয়া মাদ্রাসার পরিচালক প্রধান শিক্ষক কর্তৃক এক ছাত্রকে মধ্যযুগীয় কায়দার অমানুষিক নির্যাতন ও সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার ঘটনায় উত্তেজিত জনতার মাদ্রাসা ঘেরাও করে শাস্তির দাবী।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দেওয়ানের খামার পুর্ব কলেজ মোড় দারুল উলুম আশরাফিয়া মাদ্রাসায়।
জানাগেছে কয়েক বছর পুর্বে দেওয়ানের খামার গ্রামের সোহরাব হোসেনের পুত্র মুফতী মতিউর রহমান একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দারুল উলুম আশরাফিয়া মাদ্রাসা নামে একটি আবাসিক মাদ্রাসা চালু করে। সেখানে পড়াশোনা করতে আসা ছাত্রদের প্রায় সময়ই সামান্য ভুলভ্রান্তির কারনে ছাত্রদের মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক নির্যাতন করে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে কাউকে জানালে মাদ্রাসা থেকে বহিঃস্কারের ভয়ভীতি প্রদর্শন করতো।
এদিকে গত ৮ অক্টোবর রবিবার ভুরুঙ্গামারী পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ভুরুঙ্গামারী ক্বওমী ওলামা পরিষদের ইসলামী মহাসম্মেলনে বক্তাদের ওয়াজ ভিডিও করতে মাদ্রাসার উর্দু ফার্সী কিতাবখানা বিভাগের ছাত্র একই উপজেলার জয়মনিরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ শিংঝাড় গ্রামের হতদরিদ্র কাঠমিস্ত্রী আনোয়ার হোসেনের পুত্র শামীম হোসেন (১৭) বাড়ি থেকে মোবাইল ফোন আনে।
১০ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকাল আনুমানিক ৩টার সময় শামীম হোসেন মোবাইল ফোনে ওয়াজ শোনার অপরাধে মাদ্রাসার পরিচালক প্রধান শিক্ষক মুফতী মতিউর রহমান ছাত্র শামীমকে তার খাস কামরায় ডেকে নিয়ে তার আরেক সহয়োগী মুফতী সাইফুল্লাহর উপস্থিতিতে মধ্যযুগীয় কায়দায় বাঁশের বাকলা দিয়ে এলোপাথারী মারপীট করে রক্তাক্ত জখম করায় শরীরের বিভিন্ন স্থান ফেটে রক্ত ঝড়তে থাকে।
এ সময় নির্যাতনের শিকার শামীমের আর্তচিৎকারেও মারপীট করতে থাকে ঐ প্রধান শিক্ষক মুফতী মতিউর রহমান। শুধু তাই নয় মারপীটের পর রক্তাক্ত শামীমের নিকট স্ট্যাম্প কেনার টাকা দাবী করলে টাকা দিতে না পারায় আবারও মারপীট চালায় নরপিশাচ মুফতী মতিউর রহমান। পরে নিজেই একটা সাদা স্ট্যাম্প এনে জোর করে স্বাক্ষর নেয় এবং ঘটনা কাউকে বললে মাদ্রাসা থেকে বহিঃস্কারের ভয়ভীতি দেখিয়ে নজরদারীতে রাখেন।
এদিকে শামীম হোসেন রক্তাক্ত অবস্থায় সকলের অজান্তে তার এক খালার বাড়িতে গিয়ে রক্তাক্ত শরীর দেখান এবং বাড়িতে সংবাদ দিতে বলেন। তার খালা বাড়িতে সংবাদ দিলে তার পিতামাতা এসে শামীমকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ভুরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রকে অমানুষিক মারপীট করে রক্তাক্ত করার ঘটনায় উপস্থিত শত শত জনতা মাদ্রাসা ঘেরাও করে ঐ নরপিশাচ মুফতী মতিউর রহমানের শাস্তি দাবী করে মাদ্রাসার মেইনগেটে অবস্থান নেয়ার সময় পিছনের গেট দিয়ে মুফতী মতিউর রহমান পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে ।
পরে নির্যাতনের শিকার শামীম হোসেনের পিতা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মাদ্রাসার পরিচালক প্রধান শিক্ষক মুফতী মতিউর রহমান ও তার সহযোগী মুফতী সাইফুল্লাহর নামে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
শামীম আরও জানায় প্রায় সময়ই উক্ত প্রধান শিক্ষক ছাত্রদের কারনে অকারনে মারপীট করে এবং সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে রাখে। আজকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঈশ্বরবরুয়া গ্রামের হেফজখানা বিভাগের শামীম ও নাগেশ্বরী উপজেলার সাপখাওয়া গ্রামের ইমরান হোসেনকে মোবাইলে ওয়াজ দেখার কারনে বাঁশের বাকলা দিয়ে মারপীট করেছে।
ভুরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ রুহুল আমিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে।