ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ডাবলিনে গ্রেটার মৌলভীবাজার অ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ডের বার্ষিক সভা Logo নোয়াখালী চাটখিলে চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীকে হত্যার হুমকি Logo খোকসায় ১ম হওয়া শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান ও সকল এ+ কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা Logo সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী’র ৪ শত কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক Logo বেনাপোলে যুবদলের যৌথ কর্মীসভা Logo পাংশা সরকারী কলেজে জুলাই শহিদ দিবস পালিত Logo যশোরের কেশবপুরে সমাজসেবক বদরুন্নাহার রেশমা চিরনিদ্রায় শায়িত Logo ‘জুলাই শহীদ দিবস–২৫’ উপলক্ষে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণ সভা Logo কৃষি বিজ্ঞানী ড. আলী আফজাল ফুটবল টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে মহম্মদপুর Logo কুষ্টিয়া চাঁদা তোলা নিয়ে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

প্রতারকের ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত এক পুলিশ কর্মকর্তা ও তার ভাই

  • স্টাফ রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম : ০৮:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩
  • ৩২০ বার পঠিত

যশোর পুলিশ লাইনের রিজার্ভ অফিসে কর্মরত এক সহকারী উপ পুলিশ পরিদর্শক ও তার ভাই প্রতারকের ফাঁদে পড়ে কয়েক লাখ টাকা খুইয়ে এখন সর্বস্বান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যাংক থেকে ঋণ, বাবার ব্যবসার টাকা এবং ছোট ভাইয়ের চাকরি থেকে জমানো বেতনের টাকাসহ মোট তেত্রিশ লাখ টাকা খুইয়ে সর্বস্বান্ত হওয়া ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম আশিষ কুমার সাহা (৩৫)। তিনি এ ঘটনায় যশোর জেলার কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি (সাধারণ ডায়েরিভূক্ত) করেছেন।

 

জানা যায়, ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার শিরগ্রামের বাসিন্দা কুমারেশ চন্দ্র সাহার ছেলে আশিষ কুমার সাহা বর্তমানে এএসআই (নিরস্ত্র) হিসেবে যশোর পুলিশ লাইনের রিজার্ভ অফিসে কর্মরত। তার বাবা পাট ও ভূষি মালের ব্যবসা এবং তার একমাত্র ভাই রনি সাহা একটি পল্লী প্রগতী সহায়ক সমিতি নামের একটি এনজিওতে হিসাব রক্ষক হিসেবে চাকরি করতেন। বাবার বয়স হয়ে যাওয়ায় তার ব্যবসা করতে কষ্ট হতো। সঠিক সময়ে কিস্তি আদায় করতে না পারলে ভাই রনি সাহার বেতন হতে টাকা এনজিওটি টাকা কেটে নিতো। এ কারণে কয়েক মাস আগে রনি সাহা তার এনজিওর চাকরিটি ছেড়ে দেয়। চাকরি ছেড়ে সে গ্রাচুইটি হিসেব থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা পায়।

 

ঘটনাচক্রে এ সময় পূর্বপরিচিত নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানার কালু বিশ্বাসের ছেলে উজ্জল বিশ্বাস (৩৪) তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে টাকা বিনিয়োগ করার আহবান জানান। যশোর কোতয়ালী মডেল থানাধীন খয়েরতলা পালবাড়ী ট্রাফিক মোড়ের জনৈক আবুল কালাম এর বাসার নীচতলায় অবস্থিত উজ্জ্বল বিশ্বাসের ‘ওয়েব ভিশন ইলেকট্রনিকস’ নামের একটি ইলেকট্রনিকসের দোকান। তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে টাকা বিনিয়োগ করলে মোটা অংকের লভ্যাংশ (বিনিয়োগযোগ্য টাকার ২৭ শতাংশ) দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

 

এ সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তার বাবার ব্যবসায়িক, এনজিও থেকে ভাইয়ের গ্রাচুইটি হতে প্রাপ্ত এবং কমিউনিটি ব্যংক থেকে ঋণ করে নেয়া মোট ৩৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা উজ্জ্বল বিশ্বাসকে প্রদান করা হয় পুলিশ কর্মকর্তার ভাই রনি সাহাকে ব্যবসায়িক অংশীদার করার জন্য। এর মধ্যে উজ্জল বিশ্বাস ব্যবসায়িক লাভের ১ লাখ ৭০ হাজার ৫শ টাকা রনি সাহাকে প্রদানও করে। কিন্তু এরপর থেকেই মাঝে মধ্যেই তার ইলেকট্রনিকসের শোরুম বন্ধ থাকতো।

 

এক পর্যায়ে জানা যায় জনৈক মীর তহুরুল ইসলামের নিকট থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা, আব্দুল কাদেরের নিকট থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং অজয় কুমার সানার নিকট থেকে ৬ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। উজ্জল বিশ্বাস নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলায় অবস্থিত নিজ বাড়িতে বহুতল ভবনও নির্মাণ করছেন। পরে ওই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ২০২৩ সালের জুন ক্লোজিং এর হিসাব করে দেখা যায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার গরমিল রয়েছে।

 

অভিযোগ উঠেছে, উজ্জল বিশ্বাস একজন নিয়মিত মাদক সেবনকারী। ইতোপূর্বে তার বিরুদ্ধে একটি অস্ত্র মামলা ছিল এবং মিনিস্টার ইলেকট্রনিকসের সার্ভিস সেন্টার হতে নগদ অর্থ ও পার্টস বাবদ প্রায় ৮ লাখ টাকা চুরির দায়ে তাকে চাকরি হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এক পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তা আশীষ সাহা ও তার ভাই রনি সাহা তাদের বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরত চাইলে টাকা ফেরত দিতে নানান টালবাহানা করেন।

 

 

উজ্জ্বল বিশ্বাস উল্টো সহকারী উপ পুলিশ পরিদর্শক আশীষ কুমার সাহাকে মিথ্যেভাবে ফাঁসানোর জন্য ভয়ভীতি প্রদান করছে। এজন্য ওই সহকারী উপ পুলিশ পরিদর্শক আশীষ কুমার সাহা গত ২৬ সেপ্টেম্বর যশোর জেলার কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি (সাধারণ ডায়েরিভূক্ত) করেছেন।

এ ব্যাপারে উজ্জ্বল বিশ্বাসের বক্তব্য জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ডাবলিনে গ্রেটার মৌলভীবাজার অ্যাসোসিয়েশন অফ আয়ারল্যান্ডের বার্ষিক সভা

error: Content is protected !!

প্রতারকের ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত এক পুলিশ কর্মকর্তা ও তার ভাই

আপডেট টাইম : ০৮:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩
স্টাফ রিপোর্ট :

যশোর পুলিশ লাইনের রিজার্ভ অফিসে কর্মরত এক সহকারী উপ পুলিশ পরিদর্শক ও তার ভাই প্রতারকের ফাঁদে পড়ে কয়েক লাখ টাকা খুইয়ে এখন সর্বস্বান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যাংক থেকে ঋণ, বাবার ব্যবসার টাকা এবং ছোট ভাইয়ের চাকরি থেকে জমানো বেতনের টাকাসহ মোট তেত্রিশ লাখ টাকা খুইয়ে সর্বস্বান্ত হওয়া ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম আশিষ কুমার সাহা (৩৫)। তিনি এ ঘটনায় যশোর জেলার কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি (সাধারণ ডায়েরিভূক্ত) করেছেন।

 

জানা যায়, ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার শিরগ্রামের বাসিন্দা কুমারেশ চন্দ্র সাহার ছেলে আশিষ কুমার সাহা বর্তমানে এএসআই (নিরস্ত্র) হিসেবে যশোর পুলিশ লাইনের রিজার্ভ অফিসে কর্মরত। তার বাবা পাট ও ভূষি মালের ব্যবসা এবং তার একমাত্র ভাই রনি সাহা একটি পল্লী প্রগতী সহায়ক সমিতি নামের একটি এনজিওতে হিসাব রক্ষক হিসেবে চাকরি করতেন। বাবার বয়স হয়ে যাওয়ায় তার ব্যবসা করতে কষ্ট হতো। সঠিক সময়ে কিস্তি আদায় করতে না পারলে ভাই রনি সাহার বেতন হতে টাকা এনজিওটি টাকা কেটে নিতো। এ কারণে কয়েক মাস আগে রনি সাহা তার এনজিওর চাকরিটি ছেড়ে দেয়। চাকরি ছেড়ে সে গ্রাচুইটি হিসেব থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা পায়।

 

ঘটনাচক্রে এ সময় পূর্বপরিচিত নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানার কালু বিশ্বাসের ছেলে উজ্জল বিশ্বাস (৩৪) তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে টাকা বিনিয়োগ করার আহবান জানান। যশোর কোতয়ালী মডেল থানাধীন খয়েরতলা পালবাড়ী ট্রাফিক মোড়ের জনৈক আবুল কালাম এর বাসার নীচতলায় অবস্থিত উজ্জ্বল বিশ্বাসের ‘ওয়েব ভিশন ইলেকট্রনিকস’ নামের একটি ইলেকট্রনিকসের দোকান। তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে টাকা বিনিয়োগ করলে মোটা অংকের লভ্যাংশ (বিনিয়োগযোগ্য টাকার ২৭ শতাংশ) দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

 

এ সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তার বাবার ব্যবসায়িক, এনজিও থেকে ভাইয়ের গ্রাচুইটি হতে প্রাপ্ত এবং কমিউনিটি ব্যংক থেকে ঋণ করে নেয়া মোট ৩৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা উজ্জ্বল বিশ্বাসকে প্রদান করা হয় পুলিশ কর্মকর্তার ভাই রনি সাহাকে ব্যবসায়িক অংশীদার করার জন্য। এর মধ্যে উজ্জল বিশ্বাস ব্যবসায়িক লাভের ১ লাখ ৭০ হাজার ৫শ টাকা রনি সাহাকে প্রদানও করে। কিন্তু এরপর থেকেই মাঝে মধ্যেই তার ইলেকট্রনিকসের শোরুম বন্ধ থাকতো।

 

এক পর্যায়ে জানা যায় জনৈক মীর তহুরুল ইসলামের নিকট থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা, আব্দুল কাদেরের নিকট থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং অজয় কুমার সানার নিকট থেকে ৬ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। উজ্জল বিশ্বাস নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলায় অবস্থিত নিজ বাড়িতে বহুতল ভবনও নির্মাণ করছেন। পরে ওই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ২০২৩ সালের জুন ক্লোজিং এর হিসাব করে দেখা যায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার গরমিল রয়েছে।

 

অভিযোগ উঠেছে, উজ্জল বিশ্বাস একজন নিয়মিত মাদক সেবনকারী। ইতোপূর্বে তার বিরুদ্ধে একটি অস্ত্র মামলা ছিল এবং মিনিস্টার ইলেকট্রনিকসের সার্ভিস সেন্টার হতে নগদ অর্থ ও পার্টস বাবদ প্রায় ৮ লাখ টাকা চুরির দায়ে তাকে চাকরি হতে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এক পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তা আশীষ সাহা ও তার ভাই রনি সাহা তাদের বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরত চাইলে টাকা ফেরত দিতে নানান টালবাহানা করেন।

 

 

উজ্জ্বল বিশ্বাস উল্টো সহকারী উপ পুলিশ পরিদর্শক আশীষ কুমার সাহাকে মিথ্যেভাবে ফাঁসানোর জন্য ভয়ভীতি প্রদান করছে। এজন্য ওই সহকারী উপ পুলিশ পরিদর্শক আশীষ কুমার সাহা গত ২৬ সেপ্টেম্বর যশোর জেলার কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি (সাধারণ ডায়েরিভূক্ত) করেছেন।

এ ব্যাপারে উজ্জ্বল বিশ্বাসের বক্তব্য জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।


প্রিন্ট