সামান্য বৃষ্ঠিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় মহম্মদপুর উপজেলা শহরে। পাশাপাশি শহরের প্রধান দুই প্রবেশদ্বারের সড়ক জরাজীর্ণ এবং জলাবদ্ধতা সৃষ্ঠি হওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শহরে প্রবেশকারী দুরাগত জানবাহন, সাধারন মানুষ, পথচারী, স্কুল-কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। বিশেষ করে হাটের দিনে সাধারন মানুষ, ক্রেতা-বিক্রেতা ও বাজার ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগের আর সীমা থাকেনা। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এবং দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় শহরের দুই প্রবেশদ্বারের সড়ক দুটি খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। তা সংস্কারে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় সাধারন মানুষ ও বাজার ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সরজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, থানা থেকে যে সড়কটি শহরের প্রবেশ করেছে। যার পুরোটাই খানাখন্দে ভরা। অন্যদিকে রাস্তা সংলগ্ন শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামটি মুল রাস্তা থেকে নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি নামলে এখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এই পানি শুকাতে সপ্তাহ কেটে যায়। এ কারণে শহরে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে ৫ মিনিটের পথ গাড়ি করে পুলিশের আসতে আধাঘন্টা সময় পার হয়। ফলে আইনি সেবা থেকে বঞ্চিত হয় সাধারন মানুষ। এ সড়কের কোলঘেষে অবস্থিত, মহম্মদপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও একাধিক স্বাস্থসেবা কেন্দ্র। একটি মাত্র সড়ক দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করতে হয় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারন মানুষকে। চিকিৎসা নিতে আসা গুরুতর অসুস্থ রোগীদের সবচে বেশী বিপাকে পড়তে হয়। বৃহস্পতিবার সারাদিনের বৃষ্ঠিতে এ সড়কটি তলিয়ে যাওয়ায় অসহনীয় ভোগান্তিতে পড়েছে হাজারো মানুষ। অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামটিও তলিয়ে গেয়ে বৃষ্টিতে।
অন্য প্রবেশদ্বার দিয়ে মহম্মদপুর থেকে ফরিদপুর হয়ে ঢাকার সাথে এই সড়কটি সংযুক্ত হয়েছে। এ সড়কের পাশে রয়েছে অফিসপাড়া খ্যাঁত উপজেলা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন, কারিগরি কলেজ, এসআর দাখিল মাদ্রাসা, এতিম খানা ও কেন্দ্রীয় গোরস্থান। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় শহরের প্রবেশদ্বারে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে কয়েক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি থাকে রাস্তাটি। ফলে দুরাগত পণ্য এবং যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচলে এবং সাধারন মানুষের দুর্ভোগ এখানে নিত্ত দিনের। তাই দর্ভোগ পোহাতে মানুষ অভ্যস্থ হয়ে গেছে। উপজেলা চেয়ারম্যানের নিজ বাড়ির সামনে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি থাকলেও তা নিষ্কাশনে কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় অনেকেই গালমন্দ করে থাকেন। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ এই পরিস্থিতি উত্তোরণে কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করলে ড্রেনেজ ব্যবস্থ্যার উদ্যোগ নেয়নি তারা। প্রতিবাদ বা ক্ষোভ প্রকাশে সবার মধ্যে বিরাজমান থাকলে প্ররিস্থিতির প্রতিকারে কর্তৃপক্ষ উদাসীন।
এছাড়া বৃহস্পতিবারের বৃষ্টিতে মুল শহরের জলাবদ্ধতা সৃষ্ঠি হওয়ায় যানবাহন ও পথচারী চলাচলে সারাদিন ব্যপক ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। যা নিয়ে শহরে আগত সবার মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্ঠি হয়। এছাড়া খাদ্যগুদাম সড়ক এবং উপজেলা পরিষদের প্রবেশদ্বার দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় রাস্তার পিজ-পাথর উঠে যাওয়া চলাচলের অনুপোযাগী হয়ে পড়েছে।
স্কুল শিক্ষিকা শিউলি পারভীন বলেন, রাস্তার পানি আমার বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে জলাবদ্ধতার সৃষ্ঠি হয়। বিষয়টি একাধিকবার ইউএনও স্যারকে কে বলেছি। তিনি রাস্তার পাশ দিয়ে ড্রেন করে দিতে চেয়েছেন।
বাজারের মুদি ব্যবসায়ী জাহিদ হোসেন বলেন, আমার দোকানের সামনে এ অবস্থা নিত্য দিনের। বিষয়টি বাজার বণিক সমিতির সভাপতি/সাধারন সম্পাদকে একাধিকবার অবহিত করেছি। কিন্তু তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন না। মহম্মদপুর বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আমিমুল ইসলাম বলেন, বাজার ব্যবসায়ীদের দুরবাস্থার কথা ভেবে আমি কয়েকবার ইউএনও এবং প্রকৌশলী সারে কাছে গিয়ে ড্রেন নির্মাণের কথা বলেছি। কিন্ত কোন কাজ হয় না। উপজেলা প্রকৌশলী সাদ্দাম হুসাইন বলেন, এ দুটি রাস্তা দুটি সংস্কারে বা পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ নির্মাণে আমরা একটি প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছি। অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে টেন্ডার প্রক্রিয়া সমাপন্ন হলে কাজ শুরু করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ মন্ডল বলেন, আমি সবেমাত্র যোগদান করেছি। জনস্বার্থে শিঘ্রই ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।
প্রিন্ট