ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মাগুরার কাদিরপাড়ায় দীর্ঘ ২৭ বছরের জমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ, আদালতে আপীল চলমান

মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার কাদিরপাড়া ইউনিয়নের কাদিরপাড়া গ্রামের আবু জাফর মন্ডলের দীর্ঘ ২৭ বছরের ভোগদখলীয় জমিতে ধানের চাতাল ও ঘরবাড়ি দখলের অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার ৪ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫ টার সময়  সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কাদিরপাড়া গ্রামের মোহন মন্ডলের পুত্র আবু জাফর মন্ডলের জমি দখল করে আব্দুল বারিক বিশ্বাস পাঁচিল-ইমারত স্থাপন ও নির্মাণ কাজ করছেন।
আবু জাফর মন্ডলের বড় আপন ভাই মোঃ আজিজার রহমান মন্ডল জানান, আজ থেকে দীর্ঘ ২৬ থেকে ২৭ বছর পূর্বে কাদিরপাড়া ৫৫ নং মৌজার ৩ টি দাগ নং- ২৬৩০, ২৬৪০ ও ২৬৪১ জমির পরিমাণ ২ একর ৬২ শতাংশ তার মধ্যে থেকে দক্ষিণ পাশের ১ একর ৩১ শতাংশ জমির মধ্যে আবুল হোসেন বিশ্বাসের পিতা জব্বার বিশ্বাস মৃত্যুর পর ওয়ারেশগণ আমাদেরকে ৩০ শতাংশ জমি ১০ জনের নামে ১০ শতাংশ এবং আমাদের ৩ জনের নামে ২০ শতক জমি বায়নানামে মূলে স্ট্যাম্প করে নেয়। তারপর আরেকটি জমি আবুল হোসেনের আপন বোন সুফিয়া খাতুনের কাছে থেকে রেজিস্ট্রি কবলা দলিল মূলে ২০ শতক জমি খরিদ করি এবং সেখানে ধান ছাঁটাইকরণের চাতাল ও বসতবাড়ি নির্মাণ করি। এই ধানের চাতাল জমিতে শরিকানা অংশে মৃত শুকলাল বিশ্বাসের পুত্র মোঃ আবু বক্কার বিশ্বাস বাদী হয়ে বিবাদী ছলেমান মোল্লার ওয়ারেশগণ গোলাম ছরোয়ার, আবুল হোসেন বিশ্বাস, সুফিয়া খাতুন, আফছার মোল্লা, আবু জাফর মন্ডল, আজিজার রহমান মন্ডল সহ ৩২ জনের নামে গত ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১১ সালে মোকাম মাগুরা শ্রীপুর সহকারী জজ আদালতে ৭৪/২০০৪ দেং মামলা দায়ের করে। এখানে আবুল হোসেন বিশ্বাস গং নিম্ন কোর্টে তার পক্ষে রায় হবে। উল্লেখ থাকে এসময় আবুল হোসেন বিশ্বাস বিদেশ চলে গেলে তার সমস্ত কেস মামলার কাজ তার পক্ষে আজিজার রহমান মন্ডল করেন। পরবর্তীতে আবু বক্কার মোল্লা আবার আপীল করে গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০১২ সালে ক্রমিক নং- ৩৪ যার ৭৪/২০০৪ দেং মাগুরা শ্রীপুর আদালতে বিচারাধীন আছে বা চলমান অবস্থায় আছে। এখন আমাদের ২০ শতকের রেজিস্ট্রিকৃত জমি এবং আবুল হোসেনের ৩০ শতক বায়নানামা জমি আজও লিখে দেয়নি আবুল হোসেন বিশ্বাস। বর্তমানে আজিজার রহমান অল্প কিছু দিন পূর্বে জানতে পারলেন ১০ শতাংশ জমি আব্দুল বারিক বিশ্বাসের কাছে বিক্রি করেছে। বিষয়টি জানার পর আজিজার মন্ডল ও জাফর মন্ডল কাদিরপাড়া ওয়ার্ডের মেম্বার শুকুর আলী ও স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিগণের সাথে একস্থানে আলোচনা করেন।
সেখানে আজিজার মন্ডল বলেন, আমার ছোট ভাই জাফর মন্ডল ঐ জমিতে বসবাস করে এবং জাফরের ধানের চাতাল আছে যা এলাকাবাসীর সবাই দীর্ঘ দিন ধরে শুনে ও দেখে আসছে। আলাপ আলোচনার ঘন্টা খানেক সময় পরে শ্রীপুর ও মাগুরা থেকে কিছু লোকজন এবং প্রশাসনের লোকজন নিয়ে ২২ জন বাইরের রাজমিস্ত্রী নিয়ে ইমারত নির্মাণ করছে আব্দুল বারিক বিশ্বাস ও আজাদ বিশ্বাস। এখন আমার ক্রয়কৃত রেজিষ্ট্রিকৃত কবলা দলিলের ২০ শতক জমি দখল করে নিয়েছে। যেখানে মহামান্য আদালতে আপীল চলমান,
তিনি আরও বলেন, আশ্চর্য হয়ে গেলাম আপীল চলমান অবস্থায় কিভাবে তারা আবুল হোসেনের কাছে থেকে জমি রেজিষ্ট্রি করেছে। এ বিষয়ে ৬ নং কাদিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেনকে বলা হলে তিনিও এর সুষ্ঠু সমাধান করতে পারিনি। তাদের ২ ভাইয়ের মাগুরার প্রশাসন ও পুলিশের কাছে  সবিনয় আবেদন উক্ত জমি সংক্রান্ত বিষয়টি তদন্ত করে সুষ্ঠু সমাধান করবেন।
আব্দুল বারিক বিশ্বাস জানান, জাফররা আবুল হোসেনকে মারধর করে তাকে এখানে থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে সে এখন ফরিদপুর মধুখালি উপজেলার বাগাট নামক স্থানে বসবাস করছে। কবলা দলিল করে ১২ লাখ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছি।
আজাদ বিশ্বাস জানান, ১৫ দিন হলো আমি জমি খরিদ করেছি। তিনি আরও বলেন, আমি জমির দলিল দেখে খরিদ করেছি এবং এই জমির নাম পত্তন করা হয়ে গেছে। জাফর মন্ডল ৪০-৫০ জন লোকজন নিয়ে এসে আমার কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তবে জাফর মন্ডল যদি দলিল নিয়ে আসে তবে জমি আমি ছেড়ে দিবো, তাতে আমার কোন আপত্তি নেই। আজাদ বিশ্বাস দেখান মৌজা কাদিরপাড়া জে এল নং ০৫৫ আর এস ৩৭১ খতিয়ানে ৪৮৮৪ দাগে০. ০৬৭৫ শতাংশ, ৪৮৮৬ দাগে ০.০২৫৮ ও ৪৮৮৭ দাগে ০.০০৬৭ শতাংশ মোট ১০ শতাংশ জমি আজাদ বিশ্বাস ও সাহেব আলী বিশ্বাস নামে করা হয়েছে।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

মাগুরার কাদিরপাড়ায় দীর্ঘ ২৭ বছরের জমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ, আদালতে আপীল চলমান

আপডেট টাইম : ০২:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
মোঃ ফারুখ আহমেদ, স্টার্ফ রিপোর্টার মাগুরা :
মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার কাদিরপাড়া ইউনিয়নের কাদিরপাড়া গ্রামের আবু জাফর মন্ডলের দীর্ঘ ২৭ বছরের ভোগদখলীয় জমিতে ধানের চাতাল ও ঘরবাড়ি দখলের অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার ৪ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫ টার সময়  সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কাদিরপাড়া গ্রামের মোহন মন্ডলের পুত্র আবু জাফর মন্ডলের জমি দখল করে আব্দুল বারিক বিশ্বাস পাঁচিল-ইমারত স্থাপন ও নির্মাণ কাজ করছেন।
আবু জাফর মন্ডলের বড় আপন ভাই মোঃ আজিজার রহমান মন্ডল জানান, আজ থেকে দীর্ঘ ২৬ থেকে ২৭ বছর পূর্বে কাদিরপাড়া ৫৫ নং মৌজার ৩ টি দাগ নং- ২৬৩০, ২৬৪০ ও ২৬৪১ জমির পরিমাণ ২ একর ৬২ শতাংশ তার মধ্যে থেকে দক্ষিণ পাশের ১ একর ৩১ শতাংশ জমির মধ্যে আবুল হোসেন বিশ্বাসের পিতা জব্বার বিশ্বাস মৃত্যুর পর ওয়ারেশগণ আমাদেরকে ৩০ শতাংশ জমি ১০ জনের নামে ১০ শতাংশ এবং আমাদের ৩ জনের নামে ২০ শতক জমি বায়নানামে মূলে স্ট্যাম্প করে নেয়। তারপর আরেকটি জমি আবুল হোসেনের আপন বোন সুফিয়া খাতুনের কাছে থেকে রেজিস্ট্রি কবলা দলিল মূলে ২০ শতক জমি খরিদ করি এবং সেখানে ধান ছাঁটাইকরণের চাতাল ও বসতবাড়ি নির্মাণ করি। এই ধানের চাতাল জমিতে শরিকানা অংশে মৃত শুকলাল বিশ্বাসের পুত্র মোঃ আবু বক্কার বিশ্বাস বাদী হয়ে বিবাদী ছলেমান মোল্লার ওয়ারেশগণ গোলাম ছরোয়ার, আবুল হোসেন বিশ্বাস, সুফিয়া খাতুন, আফছার মোল্লা, আবু জাফর মন্ডল, আজিজার রহমান মন্ডল সহ ৩২ জনের নামে গত ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১১ সালে মোকাম মাগুরা শ্রীপুর সহকারী জজ আদালতে ৭৪/২০০৪ দেং মামলা দায়ের করে। এখানে আবুল হোসেন বিশ্বাস গং নিম্ন কোর্টে তার পক্ষে রায় হবে। উল্লেখ থাকে এসময় আবুল হোসেন বিশ্বাস বিদেশ চলে গেলে তার সমস্ত কেস মামলার কাজ তার পক্ষে আজিজার রহমান মন্ডল করেন। পরবর্তীতে আবু বক্কার মোল্লা আবার আপীল করে গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০১২ সালে ক্রমিক নং- ৩৪ যার ৭৪/২০০৪ দেং মাগুরা শ্রীপুর আদালতে বিচারাধীন আছে বা চলমান অবস্থায় আছে। এখন আমাদের ২০ শতকের রেজিস্ট্রিকৃত জমি এবং আবুল হোসেনের ৩০ শতক বায়নানামা জমি আজও লিখে দেয়নি আবুল হোসেন বিশ্বাস। বর্তমানে আজিজার রহমান অল্প কিছু দিন পূর্বে জানতে পারলেন ১০ শতাংশ জমি আব্দুল বারিক বিশ্বাসের কাছে বিক্রি করেছে। বিষয়টি জানার পর আজিজার মন্ডল ও জাফর মন্ডল কাদিরপাড়া ওয়ার্ডের মেম্বার শুকুর আলী ও স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিগণের সাথে একস্থানে আলোচনা করেন।
সেখানে আজিজার মন্ডল বলেন, আমার ছোট ভাই জাফর মন্ডল ঐ জমিতে বসবাস করে এবং জাফরের ধানের চাতাল আছে যা এলাকাবাসীর সবাই দীর্ঘ দিন ধরে শুনে ও দেখে আসছে। আলাপ আলোচনার ঘন্টা খানেক সময় পরে শ্রীপুর ও মাগুরা থেকে কিছু লোকজন এবং প্রশাসনের লোকজন নিয়ে ২২ জন বাইরের রাজমিস্ত্রী নিয়ে ইমারত নির্মাণ করছে আব্দুল বারিক বিশ্বাস ও আজাদ বিশ্বাস। এখন আমার ক্রয়কৃত রেজিষ্ট্রিকৃত কবলা দলিলের ২০ শতক জমি দখল করে নিয়েছে। যেখানে মহামান্য আদালতে আপীল চলমান,
তিনি আরও বলেন, আশ্চর্য হয়ে গেলাম আপীল চলমান অবস্থায় কিভাবে তারা আবুল হোসেনের কাছে থেকে জমি রেজিষ্ট্রি করেছে। এ বিষয়ে ৬ নং কাদিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেনকে বলা হলে তিনিও এর সুষ্ঠু সমাধান করতে পারিনি। তাদের ২ ভাইয়ের মাগুরার প্রশাসন ও পুলিশের কাছে  সবিনয় আবেদন উক্ত জমি সংক্রান্ত বিষয়টি তদন্ত করে সুষ্ঠু সমাধান করবেন।
আব্দুল বারিক বিশ্বাস জানান, জাফররা আবুল হোসেনকে মারধর করে তাকে এখানে থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে সে এখন ফরিদপুর মধুখালি উপজেলার বাগাট নামক স্থানে বসবাস করছে। কবলা দলিল করে ১২ লাখ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছি।
আজাদ বিশ্বাস জানান, ১৫ দিন হলো আমি জমি খরিদ করেছি। তিনি আরও বলেন, আমি জমির দলিল দেখে খরিদ করেছি এবং এই জমির নাম পত্তন করা হয়ে গেছে। জাফর মন্ডল ৪০-৫০ জন লোকজন নিয়ে এসে আমার কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তবে জাফর মন্ডল যদি দলিল নিয়ে আসে তবে জমি আমি ছেড়ে দিবো, তাতে আমার কোন আপত্তি নেই। আজাদ বিশ্বাস দেখান মৌজা কাদিরপাড়া জে এল নং ০৫৫ আর এস ৩৭১ খতিয়ানে ৪৮৮৪ দাগে০. ০৬৭৫ শতাংশ, ৪৮৮৬ দাগে ০.০২৫৮ ও ৪৮৮৭ দাগে ০.০০৬৭ শতাংশ মোট ১০ শতাংশ জমি আজাদ বিশ্বাস ও সাহেব আলী বিশ্বাস নামে করা হয়েছে।

প্রিন্ট