ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মাগুরার ছাত্রীকে খুনের চেষ্টা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ

মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রীকে খুনের চেষ্টা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার ৪ সেপ্টেম্বর বেলা ১১ টার সময় মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে অভিভাবক, ছাত্রী, শিক্ষার্থী ও মাগুরা বাসীর আয়োজনে এই মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে এসময় উপস্থিত ছিলো, মাইশার আম্মা- রেহানা পারভীন, পিতা- তৌহিদুল ইসলাম, বোন- যশোর এম এম কলেজ ছাত্রী সামিয়া ইয়াসমিন শশী, মহিলা কলেজের ছাত্রী মালিহা জান্নাত জেসিকা, হাজীপুর কলেজের ছাত্রী সানজিদা ইসলাম শিমু, মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ছাত্রী অনুরিমা, মৌ বিশ্বাস, দুধ মল্লিক স্কুলের ছাত্রী ইসরাত মারিয়া, সরকারি কলেজের ছাত্রী সামিয়া আক্তার লিজা, মাগুরা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ ছাত্রী অনিশা শিকদার, সরকারি কলেজের জারিন তাসনিম, নুসরাত কবির শ্রাবণী, হাইলিন তিন্নি, জোহরা, জামরুল তলার সপ্না বিশ্বাস সহ প্রমুখ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দগণ।
মাগুরা জজ কোর্ট আদালতের পি-৩৩১/২৩ সূত্রে জানা যায়, বাদী রেহানা পারভীন স্বামী- তৌহিদুল ইসলাম সাং- গোবিন্দপুর, হাল সাং-  ম্যাটারনিটি পাড়া ইউনুচ প্যালেসের ভাড়াটিয়া মাগুরার ৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। মামলার আসামিরা হলো পশু হাসপাতাল পাড়া ঢাকা রোড সংলগ্ন মোঃ বাবর খানের পুত্র মোঃ ইব্রাহিম হোসেন (২২), স্টেডিয়াম পাড়ার মোঃ কাওছার আলীর পুত্র এ আর রাফি (২১), স্টেডিয়াম পাড়ার মোঃ কামরুল ইসলামের পুত্র মোঃ তালহা জুবায়ের (২২) ও মাগুরা ঢাকা রোড চাউলিয়া বটতলার মোঃ সাইফুল ইসলামের পুত্র মোঃ সাজ (২২) গণ। ঘটনার সূত্রপাত হলো তৌহিদুল ইসলামের কন্যা রুবাইয়া ইয়াসমিন (মাইশা) ১৪ কে নিয়ে।
গত শুক্রবার ২৮ জুলাই ২০২৩ তারিখে রাত অনুমান ৮.৩০ টা হতে ৯ টার মধ্যে মাগুরা হাজী রোডের সেন্ট্রাল হেলথ কেয়ার হাসপাতালের পশ্চিম পাশে কলাগাছের বাগানের পাশে মাইশাকে হত্যার উদ্দেশ্য ইব্রাহিম রামদা দিয়ে মাথায় কোপ দিয়ে মোটরসাইকেল যোগে চলে যায়।
রেহানা পারভীন বলেন, মাগুরা সাহাপাড়া এলাকার সামছুল আরেফিন ও বিলকিস জাহান শেলীর বাড়ীতে গত শুক্রবার ২৮ জুলাই তারিখে সন্ধ্যা ৬.৪০ টার সময় দাওয়াত খেতে যায়। এসময় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে দাওয়াতী খাওয়া অবস্থায় ইব্রাহিম, রাফি, তালহা ও সাজ অস্ত্রের মুখে (পিস্তল) ঠেকিয়ে মাইশাকে সাথে থাকা বন্ধুদের সহায়তায় জোরপূর্বক ২ টা মোটরসাইকেল যোগে মাগুরা ইনডোর স্টেডিয়ামের ভিতর ধর্ষণের উদ্দেশ্য নিয়ে যায়। এসময় মাইশার ডাক চিৎকারে ইব্রাহিম ধর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়ে জলন্ত সিগারেটের আগুন দিয়ে মাইশার শরীর পোড়ায় ও মুখে ধোঁয়া মারতে থাকে। এরপর ইব্রাহিম ও তার বন্ধুরা মোটরসাইকেলে মাইশাকে উঠিয়ে নিয়ে মাগুরা হাজী রোডের সেন্ট্রাল হেলথ কেয়ার হাসপাতালের পশ্চিম পাশের কলাবাগানের পাশে নিয়ে যায়। এসময় রাফি লাথি মেরে মাইশাকে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেয়, তালহা জুবায়ের চড় থাপ্পড় এবং সাজ তার পরনের পরিহিত জামা-কাপড় ছিড়ে ফেলে।
হঠাৎ করে ইব্রাহিম রামদা দিয়ে খুনের উদ্দেশ্য মাইশার মাথার ডান পাশে কানের উপরে কোপ দেয় এবং দ্রুত আসামীরা স্থান ত্যাগ করে। মাইশার চিৎকারে স্থানীয় জনতা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে অটোযোগে মাগুরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। সবশেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাইশাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
মাইশার পিতা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমার মেয়ে এখন ঢাকায় প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে তার অবস্থা খুবই আশংকা জনক। তিনি প্রশাসনের কাছে দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি কামনা করেন। তিনি আরও বলেন ঘটনার স্বাক্ষী হিসেবে অবগত আছে সাহাপাড়া এলাকার বিলকিস জাহান শেলী ও সামছুল আরেফিন, ম্যাটারনিটি পাড়ার নুরুল ইসলামের পুত্র তৌহিদুল ইসলাম, পশু হাসপাতাল পাড়ার আব্দুল আলীর পুত্র ইমরান হোসেন, সত্যপুর গ্রামের রেজাউল মোল্লার কন্যা জোহরা বেগম এবং গোবিন্দপুর গ্রামের তৌহিদুল ইসলামের কন্যা সামিয়া ইয়াসমিন শশী।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

মাগুরার ছাত্রীকে খুনের চেষ্টা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ

আপডেট টাইম : ০৪:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ফারুক আহমেদ, স্টাফ রিপোর্টার, মাগুরা :
মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রীকে খুনের চেষ্টা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার ৪ সেপ্টেম্বর বেলা ১১ টার সময় মাগুরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে অভিভাবক, ছাত্রী, শিক্ষার্থী ও মাগুরা বাসীর আয়োজনে এই মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে এসময় উপস্থিত ছিলো, মাইশার আম্মা- রেহানা পারভীন, পিতা- তৌহিদুল ইসলাম, বোন- যশোর এম এম কলেজ ছাত্রী সামিয়া ইয়াসমিন শশী, মহিলা কলেজের ছাত্রী মালিহা জান্নাত জেসিকা, হাজীপুর কলেজের ছাত্রী সানজিদা ইসলাম শিমু, মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ছাত্রী অনুরিমা, মৌ বিশ্বাস, দুধ মল্লিক স্কুলের ছাত্রী ইসরাত মারিয়া, সরকারি কলেজের ছাত্রী সামিয়া আক্তার লিজা, মাগুরা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ ছাত্রী অনিশা শিকদার, সরকারি কলেজের জারিন তাসনিম, নুসরাত কবির শ্রাবণী, হাইলিন তিন্নি, জোহরা, জামরুল তলার সপ্না বিশ্বাস সহ প্রমুখ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দগণ।
মাগুরা জজ কোর্ট আদালতের পি-৩৩১/২৩ সূত্রে জানা যায়, বাদী রেহানা পারভীন স্বামী- তৌহিদুল ইসলাম সাং- গোবিন্দপুর, হাল সাং-  ম্যাটারনিটি পাড়া ইউনুচ প্যালেসের ভাড়াটিয়া মাগুরার ৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। মামলার আসামিরা হলো পশু হাসপাতাল পাড়া ঢাকা রোড সংলগ্ন মোঃ বাবর খানের পুত্র মোঃ ইব্রাহিম হোসেন (২২), স্টেডিয়াম পাড়ার মোঃ কাওছার আলীর পুত্র এ আর রাফি (২১), স্টেডিয়াম পাড়ার মোঃ কামরুল ইসলামের পুত্র মোঃ তালহা জুবায়ের (২২) ও মাগুরা ঢাকা রোড চাউলিয়া বটতলার মোঃ সাইফুল ইসলামের পুত্র মোঃ সাজ (২২) গণ। ঘটনার সূত্রপাত হলো তৌহিদুল ইসলামের কন্যা রুবাইয়া ইয়াসমিন (মাইশা) ১৪ কে নিয়ে।
গত শুক্রবার ২৮ জুলাই ২০২৩ তারিখে রাত অনুমান ৮.৩০ টা হতে ৯ টার মধ্যে মাগুরা হাজী রোডের সেন্ট্রাল হেলথ কেয়ার হাসপাতালের পশ্চিম পাশে কলাগাছের বাগানের পাশে মাইশাকে হত্যার উদ্দেশ্য ইব্রাহিম রামদা দিয়ে মাথায় কোপ দিয়ে মোটরসাইকেল যোগে চলে যায়।
রেহানা পারভীন বলেন, মাগুরা সাহাপাড়া এলাকার সামছুল আরেফিন ও বিলকিস জাহান শেলীর বাড়ীতে গত শুক্রবার ২৮ জুলাই তারিখে সন্ধ্যা ৬.৪০ টার সময় দাওয়াত খেতে যায়। এসময় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে দাওয়াতী খাওয়া অবস্থায় ইব্রাহিম, রাফি, তালহা ও সাজ অস্ত্রের মুখে (পিস্তল) ঠেকিয়ে মাইশাকে সাথে থাকা বন্ধুদের সহায়তায় জোরপূর্বক ২ টা মোটরসাইকেল যোগে মাগুরা ইনডোর স্টেডিয়ামের ভিতর ধর্ষণের উদ্দেশ্য নিয়ে যায়। এসময় মাইশার ডাক চিৎকারে ইব্রাহিম ধর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়ে জলন্ত সিগারেটের আগুন দিয়ে মাইশার শরীর পোড়ায় ও মুখে ধোঁয়া মারতে থাকে। এরপর ইব্রাহিম ও তার বন্ধুরা মোটরসাইকেলে মাইশাকে উঠিয়ে নিয়ে মাগুরা হাজী রোডের সেন্ট্রাল হেলথ কেয়ার হাসপাতালের পশ্চিম পাশের কলাবাগানের পাশে নিয়ে যায়। এসময় রাফি লাথি মেরে মাইশাকে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেয়, তালহা জুবায়ের চড় থাপ্পড় এবং সাজ তার পরনের পরিহিত জামা-কাপড় ছিড়ে ফেলে।
হঠাৎ করে ইব্রাহিম রামদা দিয়ে খুনের উদ্দেশ্য মাইশার মাথার ডান পাশে কানের উপরে কোপ দেয় এবং দ্রুত আসামীরা স্থান ত্যাগ করে। মাইশার চিৎকারে স্থানীয় জনতা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে অটোযোগে মাগুরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। সবশেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাইশাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
মাইশার পিতা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমার মেয়ে এখন ঢাকায় প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে তার অবস্থা খুবই আশংকা জনক। তিনি প্রশাসনের কাছে দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি কামনা করেন। তিনি আরও বলেন ঘটনার স্বাক্ষী হিসেবে অবগত আছে সাহাপাড়া এলাকার বিলকিস জাহান শেলী ও সামছুল আরেফিন, ম্যাটারনিটি পাড়ার নুরুল ইসলামের পুত্র তৌহিদুল ইসলাম, পশু হাসপাতাল পাড়ার আব্দুল আলীর পুত্র ইমরান হোসেন, সত্যপুর গ্রামের রেজাউল মোল্লার কন্যা জোহরা বেগম এবং গোবিন্দপুর গ্রামের তৌহিদুল ইসলামের কন্যা সামিয়া ইয়াসমিন শশী।

প্রিন্ট