ঢাকা , রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মাগুরার বাগবাড়িয়ায় মধুমতী নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন

মাগুরা সদর উপজেলার বগিয়া ইউনিয়নের বাগবাড়িয়া এলাকায় বলগেট ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে লাখ লাখ ঘনফুট বালি উত্তোলন করে বিক্রি ও সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে বুধবার ৩০ আগস্ট দুপুর ১২ টার সময় দেখা যায় সজল ইটভাটার মধুমতী নদীর তীরে বিশাল বালির স্তুপ।
সজল ইট ভাটার কর্মচারী আজাদ জানান, থ্রি এমএমএমবি ভাটার মালিক সোহেল ও সজল ইট ভাটার মালিক জুয়েল এরা দুজনে মিলে নদী থেকে বলগেট ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে পাইপের দ্বারা বালি উত্তোলন করে ভাটার উত্তর পাশে মজুদ করে রাখে। আরও দেখা যায় ঐ বিশাল বালির স্তুপের পাশে গাড়িতে বালি ভরার জন্য একটা এক্সভেটর গাড়ি রাখা আছে। এভাবে সরজমিনে আরও দেখা যায় সুমনের এমএসবি ভাটায় অবৈধ বলগেট ড্রেজার মেশিন এখনও পড়ে আছে।
লিপ্টনের এমএমআরবি ভাটা, রিপনের এইচআরবি ভাটার উত্তর পাশে বালির স্তুপ পড়ে আছে। ভাটা মালিক রাজু মুঠোফোনে বলেন নদীর তীরে আমার জমি থেকে বলগেট ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাইপের দ্বারা পতিত জায়গায় বালি ভরাট করে সমতল করেছি। তিনি আরও বলেন উক্ত জমিতে আমি ধান চাষ করবো বলে বালি কাটার মেশিন দিয়ে জায়গাটা ভরাট করেছি। এরপর পলাশের বিএমবি ভাটায় যাওয়া হয়। তুরানের টু স্টার ভাটার মতিয়ার রহমান তোতা মিয়া জানান ভাটার কাজের জন্য মধুমতী নদীর তীরে নিজেদের জমি থেকে বালি কেটে পাহাড়ের মতো স্তুপ করে রাখা হয়েছে। ইকরামে এমএমটি ভাটার ম্যানেজার জয়নাল বলেন ১০ চাকার ড্রাম চালক দিলু বেশির ভাগ ভাটায় বাইরে থেকে বালি নিয়ে আসে তবে সে কোন জায়গা থেকে বালি ট্রাকে করে নিয়ে আসে এটা আমার জানা নেই। এমআরবি ভাটার মালিক মিলনের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বাগবাড়িয়া এলাকার স্থানীয় এলাকাবাসীর লোকজন জানায়, এখানে সমস্ত অবৈধ ইট ভাটার মালিকগণের যোগসাজশে মধুমতী নদী থেকে বলগেট ড্রেজার মেশিন দিয়ে তাদের যৌথ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বালি গুলো উত্তোলন করে লাখ লাখ ঘনফুট বালি বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি ও ভাটায় ব্যবহার করছে। এলাকাবাসীর লোকজন আরও জানায় এভাবে নদী থেকে অবৈধভাবে বালি কাটলে অচিরেই ফসলী জমি ও মানুষের বসবাসরত ঘরবাড়ি ধ্বংস ও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাগবাড়ীয়া ইট ভাটার লাটা গাড়ি চালক বলেন, ভাটার মালিকগন চালাকি করে বালি নদী থেকে কেটে নিয়ে এসে পতিত  জমিতে ভরাট করে, পরে সুযোগ মতো সময়ে সেগুলো বিক্রি করে বিভিন্ন স্থানে ও মানুষের কাছে। তিনি আরও জানান ইট ভাটার এই সব মালিকগণ ২ থেকে ৪ লাখ ঘনফুটের মতো বালি উত্তোলন করে মধুমতী নদী থেকে।
এবিষয়ে বাগবাড়িয়ার অধিকাংশ ইটভাটার মালিকগণের কাছে মোবাইল ফোনে কথা বললে তারা নিজের দোষ স্বীকার না করে আরেক ইট মালিকের বালি কাটার দোষ দেয় এবং তারা সবাই একে অপরের উপর দোষ চাপিয়ে দেয়।
মাগুরা সদর উপজেলার ভূমি সহকারী কমিশনার এসিল্যান্ড মোঃ সাদ্দাম হোসেন মুঠোফোনে জানান, বাগবাড়িয়া এলাকায় অবৈধভাবে মধুমতী নদী থেকে বালি উত্তোলন করার জন্য ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এবং ঐখানের অবৈধ বলগেট ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করা হয়েছে।
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

রোহিঙ্গা পরিস্থিতিঃ রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রহনযোগ্যতা ও আরাকান আর্মি

error: Content is protected !!

মাগুরার বাগবাড়িয়ায় মধুমতী নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন

আপডেট টাইম : ০৮:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৩
মাগুরা সদর উপজেলার বগিয়া ইউনিয়নের বাগবাড়িয়া এলাকায় বলগেট ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে লাখ লাখ ঘনফুট বালি উত্তোলন করে বিক্রি ও সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে বুধবার ৩০ আগস্ট দুপুর ১২ টার সময় দেখা যায় সজল ইটভাটার মধুমতী নদীর তীরে বিশাল বালির স্তুপ।
সজল ইট ভাটার কর্মচারী আজাদ জানান, থ্রি এমএমএমবি ভাটার মালিক সোহেল ও সজল ইট ভাটার মালিক জুয়েল এরা দুজনে মিলে নদী থেকে বলগেট ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে পাইপের দ্বারা বালি উত্তোলন করে ভাটার উত্তর পাশে মজুদ করে রাখে। আরও দেখা যায় ঐ বিশাল বালির স্তুপের পাশে গাড়িতে বালি ভরার জন্য একটা এক্সভেটর গাড়ি রাখা আছে। এভাবে সরজমিনে আরও দেখা যায় সুমনের এমএসবি ভাটায় অবৈধ বলগেট ড্রেজার মেশিন এখনও পড়ে আছে।
লিপ্টনের এমএমআরবি ভাটা, রিপনের এইচআরবি ভাটার উত্তর পাশে বালির স্তুপ পড়ে আছে। ভাটা মালিক রাজু মুঠোফোনে বলেন নদীর তীরে আমার জমি থেকে বলগেট ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাইপের দ্বারা পতিত জায়গায় বালি ভরাট করে সমতল করেছি। তিনি আরও বলেন উক্ত জমিতে আমি ধান চাষ করবো বলে বালি কাটার মেশিন দিয়ে জায়গাটা ভরাট করেছি। এরপর পলাশের বিএমবি ভাটায় যাওয়া হয়। তুরানের টু স্টার ভাটার মতিয়ার রহমান তোতা মিয়া জানান ভাটার কাজের জন্য মধুমতী নদীর তীরে নিজেদের জমি থেকে বালি কেটে পাহাড়ের মতো স্তুপ করে রাখা হয়েছে। ইকরামে এমএমটি ভাটার ম্যানেজার জয়নাল বলেন ১০ চাকার ড্রাম চালক দিলু বেশির ভাগ ভাটায় বাইরে থেকে বালি নিয়ে আসে তবে সে কোন জায়গা থেকে বালি ট্রাকে করে নিয়ে আসে এটা আমার জানা নেই। এমআরবি ভাটার মালিক মিলনের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বাগবাড়িয়া এলাকার স্থানীয় এলাকাবাসীর লোকজন জানায়, এখানে সমস্ত অবৈধ ইট ভাটার মালিকগণের যোগসাজশে মধুমতী নদী থেকে বলগেট ড্রেজার মেশিন দিয়ে তাদের যৌথ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বালি গুলো উত্তোলন করে লাখ লাখ ঘনফুট বালি বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি ও ভাটায় ব্যবহার করছে। এলাকাবাসীর লোকজন আরও জানায় এভাবে নদী থেকে অবৈধভাবে বালি কাটলে অচিরেই ফসলী জমি ও মানুষের বসবাসরত ঘরবাড়ি ধ্বংস ও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাগবাড়ীয়া ইট ভাটার লাটা গাড়ি চালক বলেন, ভাটার মালিকগন চালাকি করে বালি নদী থেকে কেটে নিয়ে এসে পতিত  জমিতে ভরাট করে, পরে সুযোগ মতো সময়ে সেগুলো বিক্রি করে বিভিন্ন স্থানে ও মানুষের কাছে। তিনি আরও জানান ইট ভাটার এই সব মালিকগণ ২ থেকে ৪ লাখ ঘনফুটের মতো বালি উত্তোলন করে মধুমতী নদী থেকে।
এবিষয়ে বাগবাড়িয়ার অধিকাংশ ইটভাটার মালিকগণের কাছে মোবাইল ফোনে কথা বললে তারা নিজের দোষ স্বীকার না করে আরেক ইট মালিকের বালি কাটার দোষ দেয় এবং তারা সবাই একে অপরের উপর দোষ চাপিয়ে দেয়।
মাগুরা সদর উপজেলার ভূমি সহকারী কমিশনার এসিল্যান্ড মোঃ সাদ্দাম হোসেন মুঠোফোনে জানান, বাগবাড়িয়া এলাকায় অবৈধভাবে মধুমতী নদী থেকে বালি উত্তোলন করার জন্য ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এবং ঐখানের অবৈধ বলগেট ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করা হয়েছে।