সততা ও সাহসিকতার এক উজ্জ্বল নিদর্শন নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার মোসাঃ সাদিরা খাতুন।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় আইজিপির সদিচ্ছায় তিনি ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট নড়াইল জেলায় যোগদান করেন। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও স্মার্ট পুলিশিং প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশের ভিশন ও মিশন হৃদয়ে ধারণ ও লালন করে জেলা পুলিশকে সমৃদ্ধ করতে ও জনসেবার ব্রত নিয়ে জেলা পুলিশের সকল সদস্যকে নিয়ে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সেবার মানসিকতা নিয়ে জনগণের আস্থার আশ্রয়স্থল হিসেবে দৃপ্তপদভারে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে চলেছেন সাহসী এই পুলিশ সুপার।
পুলিশ সুপার মহোদয় অদ্য বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) সকালে অফিসে এসে পৌঁছালে বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ইনচার্জদের পক্ষ থেকে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভিন্দন জানানো হয়।
এ সময় প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার, সিআইডি, তারেক আল মেহেদী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্), মোঃ দোলন মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল), নড়াইলসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ইনচার্জগণ, অফিসার ও ফোর্স উপস্থিত ছিলেন।
পূর্বের যেকোন সময়ের চেয়ে জেলার বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। নড়াইল জেলায় দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে গত এক বছরে পুলিশ সুপার তার মেধা, বুদ্ধিমত্তা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করেছেন। জেলার অপরাধ দমন, অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা, মাদকদ্রব্য উদ্ধার, সাজাপ্রাপ্ত আসামি ও ডাকাত আটকসহ চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটনে রয়েছে তার অসামান্য অবদান।
তার যুগোপযোগী দক্ষ নেতৃত্বে জেলার অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটেছে। তিনি অত্র জেলায় সব ধরণের যানবাহন হতে চাঁদাবাজি বন্ধ করে সুধীজনদের প্রশংসা পেয়েছেন। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রার্থীদের দ্রুত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে এবং সার্টিফিকেট প্রাপ্তি সহজীকরণ ও দীর্ঘসূত্রিতা অবসানের লক্ষ্যে তার কার্যালয়ে হটলাইন প্রতিষ্ঠাপূর্বক আবেদন প্রাপ্তির ৭২ ঘন্টার মধ্যে সার্টিফিকেট প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা পরিহারের লক্ষ্যে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে ও অন্যকে উৎসাহিত করতে তিনি সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
যোগদানের পরই তার সামনে আসে সাম্প্রাদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার বড় এক চ্যালেঞ্জ। তিনি তার অসাধারণ নেতৃত্বগুণে নাজুক ঐ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষম হন। ফলে অত্র এলাকায় পুনরায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে তিনি জনপ্রতিনিধি, সুধীজন, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, মিডিয়া প্রতিনিধি, সর্বস্তরের জনগণ এবং সকল অফিসার ফোর্সদের সাথে বিভিন্ন সময় মতবিনিময় করেন।
এভাবে তিনি জেলা পুলিশের মূল মেসেজ সকলের নিকট পৌঁছে দিতে সক্ষম হন। দায়িত্ব গ্রহণের পর জেলা পরিষদ নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদ সাধারণ নির্বাচনে কোন প্রকার সংঘর্ষ বা সংঘাত ছাড়াই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে ভোটারদের নিরাপত্তাসহ অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষভাবে কঠোর ও দক্ষতার সাথে মনিটরিং করে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ায় তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
অসাধারণ এক ব্যক্তিত্বের অধিকারী এই পুলিশ সুপার। তার কার্যালয়ে আগত সেবা প্রত্যাশী সকলের সমস্যা সমাধানে তিনি সিদ্ধহস্ত। অসহায় ও অত্যাচারিত মানুষেরা এখানে এসে খুঁজে পায় এক নিরাপদ আশ্রয়। বিভিন্ন সময়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল, স্বাভাবিক ও সহনশীল পর্যায়ে রাখতে তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন।
নিয়োগ পদ্ধতির স্বচ্ছতায় পুলিশ সুপার মহোদয়ের সভাপতিত্বে সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে কনস্টেবল পদে ২৭ তরুণ-তরুণীর স্বপ্ন পূরণ হয়। জেলা পুলিশের দক্ষতা উন্নয়নে তিনি রেখেছেন অসামন্য অবদান। নিজ উদ্যোগে জেলা পুলিশের সক্ষমতা, পেশাদারিত্ব ও উৎকর্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পুলিশ সদস্যদের “সাইবার সিকিউরিটি এ্যান্ড ডিজিটাল ফরেনসিক প্রশিক্ষণ”, “মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন বিষয়ক প্রশিক্ষণ” এর ব্যবস্থা করেছেন।
রাষ্ট্রীয় সকল কর্মসূচীতে রয়েছে তার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন। পুলিশ সুপারের উদ্যোগে পুলিশ লাইনসে বঙ্গবন্ধুর ৪৮ তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
ক্রীড়া ক্ষেত্রেও তার অসামান্য অবদান রয়েছে। তিনি বাংলাদেশ পুলিশ আর্চারি ক্লাবের সদস্যদের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক। তার পৃষ্ঠপোষকতায় প্রথমবারের মতো নড়াইল জেলা পুলিশ নারী কাবাডি দল “বাংলাদেশ পুলিশ কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২৩” এ রানার্সআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে। আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জনকারী ক্রীড়াবিদদেরও উৎসাহিত করেছেন তিনি। তিনি স্পেশাল অলিম্পিকস্ ওয়ার্ল্ড গেমস্ বার্লিন (জার্মানি)-২০২৩ এ সাঁতারে স্বর্ণ ও ব্রোঞ্জ পদক জয়ী রূপালী খাতুনকে সংবর্ধনা প্রদান করেন।
পুলিশ সুপার মহোদয়ের সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বে চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস সকল মামলার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস সকল মামলার রহস্য উদঘাটন, ৩৯ টি ল্যাপটপ ও বিপুল পরিমাণ চোরাই মালামাল উদ্ধারের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি আইজিপি অর্থ পুরস্কার পেয়েছেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় অসামান্য অবদান রাখায় এবং উত্তম ও প্রশংসনীয় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি “এক্সেমপ্লারি গুড সার্ভিস ব্যাজ-২০২২ (আইজিপি ব্যাজ)” এ ভূষিত হন।
প্রিন্ট