ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন Logo দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের ফুলবাড়ী উপজেলায় মতবিনিময় সভা Logo তানোরে যাতায়াতের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ Logo মাগুরাতে এসএমসি’র পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo রূপগঞ্জে সাংবাদিকের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন Logo অর্থনৈতিক শুমারি উপলক্ষে স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত Logo প্রত্যন্ত গ্রামে নারী ফুটবল প্রীতি ম্যাচ উপভোগ করলেন হাজারো দর্শক Logo বাঘায় উপজেলা শুমারি স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত Logo কুষ্টিয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা Logo ফরিদপুরে দুই দিনব্যাপী তথ্য মেলা অনুষ্ঠিত
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

‘ন্যায়বিচার’ পেয়ে সন্তুষ্ট ফুলপরী

পাঁচ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কারের পর মোবাইল ফোনে ফুলপরীরর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এসময় তিনি বলেন, ‘এ বিচারে আমি সন্তষ্ট। আমি শুরু থেকেই ন্যায় বিচার চেয়েছিলাম। সুষ্ঠু ও সর্বোচ্চ বিচার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাই প্রশাসনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’

 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের দায়ে ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঘটনার ছয় মাস পর চূড়ান্ত এ সিদ্ধান্ত নিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তে সন্তোষ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফুলপরী।

 

আজ ওই পাঁচ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কারের পর মোবাইল ফোনে ফুলপরীরর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এসময় তিনি বলেন, ‘এ বিচারে আমি সন্তষ্ট। আমি শুরু থেকেই ন্যায়বিচার চেয়েছিলাম। সুষ্ঠু ও সর্বোচ্চ বিচার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাই প্রশাসনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’

তিনি বলেন, ‘এরকম ন্যক্কারজনক ঘটনা শুধু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েও যেন না হয়। এরকম কঠোর বিচার হলে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরনের কাজ করার সাহস পাবে না। শুধু র‍্যাগিংই নয়, এর সঙ্গে অন্য কোনো শারীরিক-মানসিক জুলুমের মতো আর কোনো ঘটনাও ঘটবে না। এরকম সঠিক বিচার হলে ক্যাম্পাসে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকবে এবং শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে পড়াশোনা শেষ করে বের হতে পারবে।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমি বর্তমানে হলে অবস্থান করছি। কোনো রকমের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি না। তবে খুব বেশি প্র‍য়োজন না হলে আমি হল থেকে বের হই না।’

গত ১৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে আচারণবিধির দ্বিতীয় অধ্যায়ের ৮ ধারা অনুযায়ী জড়িতদের এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছিল কর্তৃপক্ষ। পরে ২৬ জুলাই এই শাস্তি ‘যথোপযুক্ত নয়’ উল্লেখ করে পুনরায় শাস্তি নির্ধারণে ভিসিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আগামী ২৩ আগস্ট আদালতে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে বলা হয়।

হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সোমবার জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডাকে কর্তৃপক্ষ। ভিসির নেতৃত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জড়িতদের আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় রিটকারী আইনজীবী গাজী মো. মহসিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আইন রয়েছে, তাতে সর্বোচ্চ শাস্তি স্থায়ী বহিষ্কারের বিধান রয়েছে। বিচারক কোড অব কন্ডাক্টের বিধি প্রথম ভাগের ৪, ৫, ৭ এবং দ্বিতীয় ভাগের ৮ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।’

 

 

গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠে উল্লেখিত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগ এবং হাইকোর্ট কর্তৃক পৃথক পৃথকভাবে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।

পরে এ ঘটনায় হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। ফলে হাইকোর্টের নির্দেশে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। তদন্ত শেষে প্রতিটি কমিটির প্রতিবেদনে ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হয়। এর প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে অভিযুক্তদের হল ও শাখা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

error: Content is protected !!

‘ন্যায়বিচার’ পেয়ে সন্তুষ্ট ফুলপরী

আপডেট টাইম : ০৭:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অগাস্ট ২০২৩
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :
পাঁচ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কারের পর মোবাইল ফোনে ফুলপরীরর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এসময় তিনি বলেন, ‘এ বিচারে আমি সন্তষ্ট। আমি শুরু থেকেই ন্যায় বিচার চেয়েছিলাম। সুষ্ঠু ও সর্বোচ্চ বিচার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাই প্রশাসনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’

 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের দায়ে ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঘটনার ছয় মাস পর চূড়ান্ত এ সিদ্ধান্ত নিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তে সন্তোষ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফুলপরী।

 

আজ ওই পাঁচ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কারের পর মোবাইল ফোনে ফুলপরীরর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এসময় তিনি বলেন, ‘এ বিচারে আমি সন্তষ্ট। আমি শুরু থেকেই ন্যায়বিচার চেয়েছিলাম। সুষ্ঠু ও সর্বোচ্চ বিচার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাই প্রশাসনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’

তিনি বলেন, ‘এরকম ন্যক্কারজনক ঘটনা শুধু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েও যেন না হয়। এরকম কঠোর বিচার হলে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরনের কাজ করার সাহস পাবে না। শুধু র‍্যাগিংই নয়, এর সঙ্গে অন্য কোনো শারীরিক-মানসিক জুলুমের মতো আর কোনো ঘটনাও ঘটবে না। এরকম সঠিক বিচার হলে ক্যাম্পাসে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকবে এবং শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে পড়াশোনা শেষ করে বের হতে পারবে।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমি বর্তমানে হলে অবস্থান করছি। কোনো রকমের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি না। তবে খুব বেশি প্র‍য়োজন না হলে আমি হল থেকে বের হই না।’

গত ১৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে আচারণবিধির দ্বিতীয় অধ্যায়ের ৮ ধারা অনুযায়ী জড়িতদের এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছিল কর্তৃপক্ষ। পরে ২৬ জুলাই এই শাস্তি ‘যথোপযুক্ত নয়’ উল্লেখ করে পুনরায় শাস্তি নির্ধারণে ভিসিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আগামী ২৩ আগস্ট আদালতে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে বলা হয়।

হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সোমবার জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডাকে কর্তৃপক্ষ। ভিসির নেতৃত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জড়িতদের আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় রিটকারী আইনজীবী গাজী মো. মহসিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যে আইন রয়েছে, তাতে সর্বোচ্চ শাস্তি স্থায়ী বহিষ্কারের বিধান রয়েছে। বিচারক কোড অব কন্ডাক্টের বিধি প্রথম ভাগের ৪, ৫, ৭ এবং দ্বিতীয় ভাগের ৮ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।’

 

 

গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠে উল্লেখিত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগ এবং হাইকোর্ট কর্তৃক পৃথক পৃথকভাবে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।

পরে এ ঘটনায় হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। ফলে হাইকোর্টের নির্দেশে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। তদন্ত শেষে প্রতিটি কমিটির প্রতিবেদনে ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হয়। এর প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে অভিযুক্তদের হল ও শাখা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।


প্রিন্ট