নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন সীমান্ত ভর্তি এলাকা ঘুরে-এবং সাধারণ জনগণের সাথে কথা বলে জানাযায়, এবং দেখা যায় রোহিঙ্গা, কতিপয় এনজিও কর্মীর মদ্যপায়ীরা পর্যটক সেজে সপ্তাহের শুক্রবার শনিবার চোলাই মদ, বিয়ার,বিদেশি মদ পান করতে বাইক,সিএনজি, নোহা,কার গাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহন করে বিভিন্ন ইউনিয়ন,উপজেলা ও জেলা থেকে ভীড় জমায় সীমান্তঘেষা তুমব্রু হেডম্যান পাড়া ও বাইশপাড়ীতে এবং পাড়ার প্রবেশদ্বারে গাড়ির পার্কিং দেখলে মনে হয় ব্যস্ত একটা স্টেশন!
গেল দুই একদিন মিয়ানমারের ভূখন্ডে সীমান্তঘেষে তাদের সেনাবাহিনীর টহল অব্যাহত থাকার কারনে চাকমা পাড়ায় অনেকটা স্হানীয় ও বাইরের লোকজনের সমাগম ছিল অতি নগণ্য।কারবারিরা আজকে থেকে আবারও বিদেশী মদ ও ১২%বিয়ার সীমান্তের ৩৫ পিলার দিয়ে উক্ত পাড়াতে ঢুকাতে শুরু করেছে।
সম্প্রতি তুমব্রু হেড়ম্যান পাড়া মাদকের ব্যবহার বেড়েছে আশংকা-জনক হারে। শুধু বাইরের গ্রাম বা উপজেলার উচ্চবিত্ত নয়, ঘুমধুমের গ্রামে-গঞ্জে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে নানা নেশা জাতীয় দ্রব্য। মাদকের বিষাক্ত শক্তি শেষ করে দিচ্ছে তারুণ্যের শক্তি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে। মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসনের কারণে পরিবার ও সমাজে বিপর্যয় নেমে আসছে। বেড়েছে মারামারি, ছিনতাই সহ নানা অপরাধ। ধনী-দরিদ্র উভয় পরিবারের কিশোর- বিশেষ করে তরুণ সমাজ বিপথগামী হচ্ছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় যথাযত উদ্যোগের অভাবে মাদকসেবীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশ মায়ানমারের প্রতিবেশী হওয়ায় এবং দেশটিতে মাদক উৎপাদন হওয়ায় যুবক-যুবতীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে!
ঘুমধুম সীমান্তকে এখন বলা হয় মাদকের ঘাট বা মাদক নগরী।
এদিকে সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে তুমব্রু উলুবনিয়ায় ২টি বাড়ি, ভাজাবনিয়া ১টি বাড়ি গাজা বিক্রি করে এবং হেড়ম্যান (তংচংগ্যা) পাড়াতে ১০টির অধিক বাড়িতে মাদক ব্যবসায় জড়িত এবং প্রতি নিয়ত বসে জুয়ার আসর । অন্য দিকে অত্র ইউনিয়নে কয়েকটি গ্রামে চিহ্নিত মাদক ও স্বর্ণ কারবারিত আছেই। হেডম্যান পাড়া ও বাইশপাড়ীতে এবং ফাত্রাঝিরি (রেজু পাড়া), রেজু বরইতলি, প্রতিদিন তৈরি হয় ৫শত লিটারের ও বেশি দেশীয় চোলাই মদ।
হেডম্যান পাড়া ও বাইশপাড়ীতে মিয়ানমার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার ১২% ক্যান বিয়ারসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের মদ প্রবেশ করে। যার কারনে উক্ত পাড়ায় এসে উন্মুক্ত ভাবে ঘুমধুম ইউনিয়নের অনেক স্হানীয় যুবক ও দেশীয় পর্যটকরা মাদক সেবনে জড়িত হয়ে পড়েছে।
মাদকসক্তরা তাদের স্বাভাবিক বিবেক বুদ্ধি ও মানবিক মূল্যবোধকে হারিয়ে হয়ে উঠে বেপরোয়া, উচ্ছৃঙ্খল এক অস্বাভাবিক ব্যক্তি। এতে শুধু তাদের নিজেদের জীবন বিপন্ন হয় না, গোটা পরিবার ও সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেখা গেছে মাদকসক্ত হয়ে অনেকে একে অপেরর প্রতি হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে যার বিনিময়ে হয়েছে বেশকটা মামলা!
মাদকের ব্যবহার এক্কেবারে বন্ধ করা হয়তো সম্ভব নয়, তবে সীমান্তে কড়া নজরদারী, মাদকের উৎস নির্মূল, মাদকের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত তৈরী এবং ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সচেতনতা মাদক নির্মুলে সবচেয়ে দরকারী পদক্ষেপ হতে পারে বলে মনে করেছেন সুশিল সমাজের সচেতন ব্যক্তিবর্গ ।
উল্লেখযোগ্য যে, মদ্যপায়ীরা প্রতিদিন একটি উচ্চ বিদ্যালয় ও ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্রস করে যাওয়া আসা করছে যার প্রভাব পড়েছে সীমান্তঘেষা কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের উপর। যদি অল্প সময়ের মধ্যে টাস্কফোর্স গঠন করে ইউনিয়নের উক্ত পাড়াগুলোতে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করা হয় তাহলে প্রায় মাদক নির্মূল করা সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রিন্ট