ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

নড়াইল সদর হাসপাতালের ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের  অভিযোগ

নড়াইল সদর হাসপাতালের অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক জাহান আরা খানম।

নড়াইল সদর হাসপাতালের সেবা ফিসের প্রায় ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক জাহানারা খানমকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে বুধবার পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
হাসপাতালের তত্ত্ববধায়কের কার্যালয় সূত্র জানায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগ ফি, জরুরি বিভাগ ফি, ভর্তি ফি, প্যাথলজি ফি, এক্সরে ফি, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি ফি, ক্যাবিন ফি, অ্যাম্বুলেন্স ফি, অপারেশন ফি, কোভিড-১৯ বাবদ ফিসহ অন্যান্য ফি সেবা গ্রহীতাদের নিকট থেকে নেওয়া হয়। এসব ফি সোনালী ব্যাংকের চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা হয়।
সদর হাসপাতালের এসব ফি’র টাকা নড়াইল সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখায় জমা হওয়ার কথা। কিন্তু ২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়নি। অথচ ব্যাংকে জমা দেওয়ার জাল চালান হাসপাতালের হিসাবরক্ষকের কার্যালয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
হাসপাতাল সুত্র আরও জানায়, একইভাবে এর আগের হিসাবরক্ষক মো. মাহফুজুর রহমান সাত বছরের সেবা ফির প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা জমা দেননি। বিষয়টি অডিটে ধরা পড়লে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) যশোর কার্যালয়ে মামলা হয় (মামলা নম্বর-৪/২০২০)। মামলাটি বিচারাধীন আছে।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক মো. আব্দুস শাকুর বলেন, ‘প্রতি বছর অডিট হওয়ার কথা, কিন্তু অডিট হয় ৪-৫ বছর পর। প্রতি বছর অডিট হলে এমন সমস্যা হতো না।’
৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তত্ত্ববধায়ক মো. আব্দুস শাকুর জানান, সেবা ফির টাকা প্রতিটি বিভাগ থেকে লিখিতভাবে গ্রহণ করেন হিসাবরক্ষক।
হিসাবরক্ষক প্রতি মাসে ওই টাকা ব্যাংকে চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দেবেন। কিন্ত হিসাবরক্ষক জাহান আরা
খানম ওই টাকা জমা না দিয়ে ব্যাংকে জমা দেওয়ার জাল চালান তৈরি করে সংরক্ষণ করেছেন। বিষয়টি সন্দেহ হলে গত ঙ্গলবার ব্যাংকে গিয়ে যাচাই করে এর সতত্যা পাওয়া যায়।
আব্দুস শাকুর বলেন, ‘ওই টাকা ব্যাংকে তিন দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য জাহান আরা খানমকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাঁকে কারণদর্শানো হয়েছে, তিনদিনের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
তাঁকে সেবা ফি গ্রহণের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিয়ে প্রধান সহকারী মঞ্জুরুল আলমকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বুধবার পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান সার্জারি বিভাগের জ্যেষ্ঠ কনসালটেন্ট মো. আকরাম হোসেন ও সদস্য সচিব আরএমও আ ফ ম মশিউর রহমান। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’
নড়াইল সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. আবু সেলিম জানান, ব্যাংকে ওই সময়ে এ বাবদ কোনো টাকা জমা হয়নি। যে চালান সংরক্ষণ করা হয়েছে সেগুলো জাল। ব্যাংকের সিল ও স্বাক্ষর জাল করে জমা চালান তৈরি করা হয়েছে।’
এ ব্যপারে জানতে চাইলে জাহানারা খানম সাংবাদিকদের বলেছেন, কিছু টাকা জমা দেওয়া হয়নি। তা এক সপ্তহের মধ্যে জমা দিয়ে দেব।
জাল চালান তৈরির বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। কত টাকা জমা দেননি, এসব প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যান।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে হত্যাচেষ্টা মামলায় কুষ্টিয়ার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

error: Content is protected !!

নড়াইল সদর হাসপাতালের ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের  অভিযোগ

আপডেট টাইম : ০৩:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ এপ্রিল ২০২১
খন্দকার সাইফুল্লা আল মাহমুদ, নড়াইল প্রতিনিধিঃ :
নড়াইল সদর হাসপাতালের সেবা ফিসের প্রায় ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক জাহানারা খানমকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে বুধবার পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
হাসপাতালের তত্ত্ববধায়কের কার্যালয় সূত্র জানায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগ ফি, জরুরি বিভাগ ফি, ভর্তি ফি, প্যাথলজি ফি, এক্সরে ফি, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি ফি, ক্যাবিন ফি, অ্যাম্বুলেন্স ফি, অপারেশন ফি, কোভিড-১৯ বাবদ ফিসহ অন্যান্য ফি সেবা গ্রহীতাদের নিকট থেকে নেওয়া হয়। এসব ফি সোনালী ব্যাংকের চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা হয়।
সদর হাসপাতালের এসব ফি’র টাকা নড়াইল সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখায় জমা হওয়ার কথা। কিন্তু ২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়নি। অথচ ব্যাংকে জমা দেওয়ার জাল চালান হাসপাতালের হিসাবরক্ষকের কার্যালয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
হাসপাতাল সুত্র আরও জানায়, একইভাবে এর আগের হিসাবরক্ষক মো. মাহফুজুর রহমান সাত বছরের সেবা ফির প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা জমা দেননি। বিষয়টি অডিটে ধরা পড়লে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) যশোর কার্যালয়ে মামলা হয় (মামলা নম্বর-৪/২০২০)। মামলাটি বিচারাধীন আছে।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক মো. আব্দুস শাকুর বলেন, ‘প্রতি বছর অডিট হওয়ার কথা, কিন্তু অডিট হয় ৪-৫ বছর পর। প্রতি বছর অডিট হলে এমন সমস্যা হতো না।’
৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তত্ত্ববধায়ক মো. আব্দুস শাকুর জানান, সেবা ফির টাকা প্রতিটি বিভাগ থেকে লিখিতভাবে গ্রহণ করেন হিসাবরক্ষক।
হিসাবরক্ষক প্রতি মাসে ওই টাকা ব্যাংকে চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দেবেন। কিন্ত হিসাবরক্ষক জাহান আরা
খানম ওই টাকা জমা না দিয়ে ব্যাংকে জমা দেওয়ার জাল চালান তৈরি করে সংরক্ষণ করেছেন। বিষয়টি সন্দেহ হলে গত ঙ্গলবার ব্যাংকে গিয়ে যাচাই করে এর সতত্যা পাওয়া যায়।
আব্দুস শাকুর বলেন, ‘ওই টাকা ব্যাংকে তিন দিনের মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য জাহান আরা খানমকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাঁকে কারণদর্শানো হয়েছে, তিনদিনের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
তাঁকে সেবা ফি গ্রহণের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিয়ে প্রধান সহকারী মঞ্জুরুল আলমকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বুধবার পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান সার্জারি বিভাগের জ্যেষ্ঠ কনসালটেন্ট মো. আকরাম হোসেন ও সদস্য সচিব আরএমও আ ফ ম মশিউর রহমান। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’
নড়াইল সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. আবু সেলিম জানান, ব্যাংকে ওই সময়ে এ বাবদ কোনো টাকা জমা হয়নি। যে চালান সংরক্ষণ করা হয়েছে সেগুলো জাল। ব্যাংকের সিল ও স্বাক্ষর জাল করে জমা চালান তৈরি করা হয়েছে।’
এ ব্যপারে জানতে চাইলে জাহানারা খানম সাংবাদিকদের বলেছেন, কিছু টাকা জমা দেওয়া হয়নি। তা এক সপ্তহের মধ্যে জমা দিয়ে দেব।
জাল চালান তৈরির বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। কত টাকা জমা দেননি, এসব প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যান।

প্রিন্ট