ঢাকা , শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বোয়ালমারীতে সড়ক দূর্ঘটনায় আহতর ঘটনাকে প্রতিপক্ষের হামলা দেখিয়ে মামলা দেওয়ার অভিযোগ

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হওয়ার ঘটনাকে প্রতিপক্ষের হামলা দেখিয়ে আদালতে মামলা দিয়ে একটি নিরীহ পরিবারের ৪ সদস্যকে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কাদিরদী গ্রামের চাঞ্চল্যকর এই সাজানো মামলার বিবাদীরা হলেন- আব্দুস সালাম বিশ্বাস, মফিজ বিশ্বাস, শহিদুল বিশ্বাস ও মারুফা বেগম। জমি-জমা নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে একই গ্রামের পান্থ মোল্লা গত ১ আগস্ট আদালতে মিথ্যা তথা কথিত মারপিটের এ মামলাটি দায়ের করেন বলে জানাগেছে।

মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, বিবাদীদের সঙ্গে জমি-জমা নিয়ে তাদের পূর্ব বিরোধ রয়েছে। এরই জের ধরে গত ২৯ জুলাই বিবাদীরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে বাদীর বসত বাড়িতে হামলা চালান। আসামীরা বাদীর মা তাসলিমা ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে কাদিরদী গ্রামে ২৯ জুলাই-২০২৩ ইং তারিখের ঐ হামলা-মারধরের ঘটনার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি! ঘটনা স্থলের আশপাশের বাসিন্দারা এ ঘটনাকে সম্পূর্ণ সাজানো বা মিথ্যা, ভিত্তিহীন বলে দাবী করেছেন।

 

গ্রামের আফছার বিশ্বাস, জাহিদা বেগম, তুহিনা পারভিন, শাহনাজ বেগম বলেন, তাসলিমা ইসলামের সঙ্গে জমা-জমি নিয়ে বিবাদী পক্ষের পুরাতন বিরোধ রয়েছে সত্য, তবে ২৯ জুলাই-২০২৩ ইং তারিখে কোন মারামারির ঘটনা ঘটেনি। বছর দুয়েক আগে তাদের মধ্যে অনেক ঝগড়াঝাটি, গন্ডগোল হতে দেখেছি। কিন্তু পরবর্তীতে প্রশাসনের লোক এসে মাপ-ঝোঁক করে জমিজমা বুঝিয়ে দিয়ে যাওয়ায় অনেক দিন হলো তাদের মধ্যে ঝামেলা নেই। হঠাৎ করে এই সাজানো, বানোয়াট মামলার ব্যাপারে তারা বিস্ময় প্রকাশ করে এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান। মামলার প্রধান আসামী আঃসালাম বিশ্বাস বলেন,বাদীপক্ষ আমার নিকট আত্মীয়-স্বজন। জমিজমা নিয়ে অনেক আগে তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। এখন নেই। তাছাড়া তারা এখন এলাকায়ও বসবাস করেননা। ফরিদপুরে ভাড়া বাসায় থাকেন। ফলে ঝামেলা বা মারামারি করার সুযোগ কই।

 

২৯ তারিখের হামলা, মারধরের ঘটনা অসত্য,কাল্পনিক দাবী করে তিনি বলেন,হঠাৎ করে কেন এই সাজানো মামলা বুঝতে পারছিনা। সালাম বিশ্বাস দাবী করেন,ফরিদপুরে চলাফেরা করার সময় সম্প্রতি তাসলিমা অটোরিকশা থেকে পড়ে গিয়ে সামান্য আহত হন। আর সেই ঘটনায় ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেন। পরে এই চিকিৎসার কাগজ পত্র দেখিয়ে আদালতে বিবাদীদের নামে মারধরের মিথ্যা মামলা করেন বলে সালাম বিশ্বাসের অভিযোগ।

 

বাদী পান্থমোল্যার মা ভিকটিম তাসলিমা ইসলাম বলেন, এজাহারে বর্নিত আমার সকল বক্তব্য সঠিক। আসামীদের ভয়ে এলাকাবাসী মুখ খুলছেনা।

 

 

মামলার সত্যতা পেয়েই পুলিশ এক আসামীকে গ্রেফতার করে বলে জানান তাসলিমা। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, দুই পক্ষের পুরোনো দ্বন্দ্বের কথা জানি। তবে ইদানিং কালের কোন মারামারির খবর শুনিনাই।

উল্লেখ্য, বাদী প্রথমে এজাহারটি আদালতে দাখিল করেন। পরে আদালতের নির্দেশে বোয়ালমারী থানা পুলিশ ৩ আগস্ট এজাহারটিকে মামলা হিসাবে গ্রহণ করে। মামলা নং-৩। এরপর এক আসামী গ্রেফতার হয়ে জামিনও পেয়েছেন একদিন পর। বর্তমানে মামলাটি বোয়ালমারী থানার এস.আই রেজাউল ইসলাম মোল্যা তদন্ত করছেন বলে জানাগেছে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

বোয়ালমারীতে সড়ক দূর্ঘটনায় আহতর ঘটনাকে প্রতিপক্ষের হামলা দেখিয়ে মামলা দেওয়ার অভিযোগ

আপডেট টাইম : ০৬:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৩
মোঃ রফিকুল ইসলাম, বোয়ালমারী পৌর প্রতিনিধি :

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হওয়ার ঘটনাকে প্রতিপক্ষের হামলা দেখিয়ে আদালতে মামলা দিয়ে একটি নিরীহ পরিবারের ৪ সদস্যকে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কাদিরদী গ্রামের চাঞ্চল্যকর এই সাজানো মামলার বিবাদীরা হলেন- আব্দুস সালাম বিশ্বাস, মফিজ বিশ্বাস, শহিদুল বিশ্বাস ও মারুফা বেগম। জমি-জমা নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে একই গ্রামের পান্থ মোল্লা গত ১ আগস্ট আদালতে মিথ্যা তথা কথিত মারপিটের এ মামলাটি দায়ের করেন বলে জানাগেছে।

মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, বিবাদীদের সঙ্গে জমি-জমা নিয়ে তাদের পূর্ব বিরোধ রয়েছে। এরই জের ধরে গত ২৯ জুলাই বিবাদীরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে বাদীর বসত বাড়িতে হামলা চালান। আসামীরা বাদীর মা তাসলিমা ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে কাদিরদী গ্রামে ২৯ জুলাই-২০২৩ ইং তারিখের ঐ হামলা-মারধরের ঘটনার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি! ঘটনা স্থলের আশপাশের বাসিন্দারা এ ঘটনাকে সম্পূর্ণ সাজানো বা মিথ্যা, ভিত্তিহীন বলে দাবী করেছেন।

 

গ্রামের আফছার বিশ্বাস, জাহিদা বেগম, তুহিনা পারভিন, শাহনাজ বেগম বলেন, তাসলিমা ইসলামের সঙ্গে জমা-জমি নিয়ে বিবাদী পক্ষের পুরাতন বিরোধ রয়েছে সত্য, তবে ২৯ জুলাই-২০২৩ ইং তারিখে কোন মারামারির ঘটনা ঘটেনি। বছর দুয়েক আগে তাদের মধ্যে অনেক ঝগড়াঝাটি, গন্ডগোল হতে দেখেছি। কিন্তু পরবর্তীতে প্রশাসনের লোক এসে মাপ-ঝোঁক করে জমিজমা বুঝিয়ে দিয়ে যাওয়ায় অনেক দিন হলো তাদের মধ্যে ঝামেলা নেই। হঠাৎ করে এই সাজানো, বানোয়াট মামলার ব্যাপারে তারা বিস্ময় প্রকাশ করে এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান। মামলার প্রধান আসামী আঃসালাম বিশ্বাস বলেন,বাদীপক্ষ আমার নিকট আত্মীয়-স্বজন। জমিজমা নিয়ে অনেক আগে তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। এখন নেই। তাছাড়া তারা এখন এলাকায়ও বসবাস করেননা। ফরিদপুরে ভাড়া বাসায় থাকেন। ফলে ঝামেলা বা মারামারি করার সুযোগ কই।

 

২৯ তারিখের হামলা, মারধরের ঘটনা অসত্য,কাল্পনিক দাবী করে তিনি বলেন,হঠাৎ করে কেন এই সাজানো মামলা বুঝতে পারছিনা। সালাম বিশ্বাস দাবী করেন,ফরিদপুরে চলাফেরা করার সময় সম্প্রতি তাসলিমা অটোরিকশা থেকে পড়ে গিয়ে সামান্য আহত হন। আর সেই ঘটনায় ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেন। পরে এই চিকিৎসার কাগজ পত্র দেখিয়ে আদালতে বিবাদীদের নামে মারধরের মিথ্যা মামলা করেন বলে সালাম বিশ্বাসের অভিযোগ।

 

বাদী পান্থমোল্যার মা ভিকটিম তাসলিমা ইসলাম বলেন, এজাহারে বর্নিত আমার সকল বক্তব্য সঠিক। আসামীদের ভয়ে এলাকাবাসী মুখ খুলছেনা।

 

 

মামলার সত্যতা পেয়েই পুলিশ এক আসামীকে গ্রেফতার করে বলে জানান তাসলিমা। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, দুই পক্ষের পুরোনো দ্বন্দ্বের কথা জানি। তবে ইদানিং কালের কোন মারামারির খবর শুনিনাই।

উল্লেখ্য, বাদী প্রথমে এজাহারটি আদালতে দাখিল করেন। পরে আদালতের নির্দেশে বোয়ালমারী থানা পুলিশ ৩ আগস্ট এজাহারটিকে মামলা হিসাবে গ্রহণ করে। মামলা নং-৩। এরপর এক আসামী গ্রেফতার হয়ে জামিনও পেয়েছেন একদিন পর। বর্তমানে মামলাটি বোয়ালমারী থানার এস.আই রেজাউল ইসলাম মোল্যা তদন্ত করছেন বলে জানাগেছে।


প্রিন্ট