ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলামকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন Logo কুষ্টিয়ায় চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের মামলায় সাবেক এমপিসহ ৫৪ জন বেকসুর খালাস Logo ফরিদপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের উদ্যোগে জনসভা অনুষ্ঠিত Logo তানোরে আটক আলুবীজ: ইঁদুর-বিড়াল খেলা? Logo শহিদ ও আহতদের স্মরণে বাঘায় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত Logo কালুখালীতে উদ্ভাবিত লাগসই প্রযুক্তির প্রদর্শনী উদ্বোধন Logo কালুখালীতে গনঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরনসভা Logo কুষ্টিয়ায় আসামিদের ধরতে সাংবাদিক ইউনিয়নের মানববন্ধন Logo সদরপুরে বিএডিসি’র নকল লোগোযুক্ত ধানের বীজ বিক্রয়ের দায়ে জরিমানা Logo আলফডাঙ্গায় বাড়িতে ঢুকে স্বামী-স্ত্রীসহ ৩ জনকে কুপিয়ে জখম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মাগুরার আমুড়িয়ায় সুদে কারবারি সালমার জালচক্রে নীরিহ কৃষক শাহাজান প্রতারণার ফাঁদে

মাগুরা সদর উপজেলার কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের হরিশপুর গ্রামের শাহাজান মোল্লা(৫৫), পিং- মৃত জুলমত মোল্যা, সাং- হরিশপুর শাহাজান নিঃস্ব হয়ে দিন যাপন করছে। গত কয়েক বছর পূর্বে এপ্রিল-মে মাসে সালমা খাতুন (৪০), স্বামী- মোঃ মুরাদ আলী, গ্রাম- আমুড়িয়া (চরপাড়া) এর কাছে থেকে ১ লক্ষ টাকা সুদে নেওয়া হয়। এই ১ লক্ষ টাকা ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুরের রুহুল আমিন (৩৫) পেয়ারা ব্যবসায়ীকে আমার মাধ্যমে দেওয়া হয়।
সালমা খাতুনকে এই সুদে টাকার ফিরিয়ে দেওয়ার শর্ত যে প্রতি সপ্তাহে ২ হাজার টাকা দিতে হবে কিন্তু পরবর্তীতে ৭ মাস ধরে প্রতি সপ্তাহে ১৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়, যে টাকার পরিমাণ প্রায় ৪২ হাজার টাকা। এরপর ২০২২ সালে ১২ এপ্রিল মঙ্গলবার পেয়ারা ব্যবসায়ী রুহুল আমিন সেই ১ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিলে আমি তৎক্ষনাৎ সালমা খাতুনকে টাকা ফেরত দিলে সে আরও ২০ হাজার টাকা দাবি করে। শাহাজান মোল্লা আরও বলেন গত রবিবার ১৩ নভেম্বর ২০২২ সালে আমি আমুড়িয়া বাজারে বাজার করার উদ্দেশ্য যাচ্ছিলাম সালমার বাড়ির সামনে থেকে সালমার পুত্র সৌরভ এবং আরও কয়েকজন লোকজন মিলে আমাকে তার  বাড়ির ভেতর জোরপূর্বক টেনে হিজড়ে ধরে নিয়ে আমার পিঠে হাতে লাঠি দিয়ে প্রহার করে শারীরিক জখম করে এবং জোরপূর্বক ভাবে শিকল দিয়ে বেধে আইয়ুবের সামনে সাদা স্ট্যাম্পের কাগজে ল্যাম্পের কালি দিয়ে জোরপূর্বক টিপসহি করিয়ে নেয়।
সালমা খাতুন কুল্লিয়া বাজার থেকে আমার কাছ থেকে ২৫ কেজি মাংস নেয় এবং সেই মাংসর টাকাও সে দেয়নি। এই স্ট্যাম্প নিয়ে পরবর্তীতে কুচিয়ামোড়া ইউনিয়ন পরিষদে শালিস হয় ও এই শালিসের পর সালমা খাতুন  মাগুরা জেলা গোয়েন্দা অফিস (ডিবি) তে অভিযোগ দায়ের করেছে আমার বিরুদ্ধে। আলামিন জানান সালমার ছেলে সৌরভ ও নছিমন চালক স্বপন আমার বাড়ির উপর এসে জীবননাশের হুমকি প্রদর্শন করে। সালমা খাতুন বলেন শাহজান মোল্লার সাথে আমি ধর্ম বোন আত্মীয় সম্পর্ক গড়ে তুলে ছিলাম। ২০২০ সালে আমার কাছে থেকে শাহাজান মোল্লা মৌখিক ভাবে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ছিলো। শাহাজান মোল্লা সেই টাকা দেয়নি বলে আমি ২ বছর পর ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে হাড়ির কালি দিয়ে জোর করে সাদা স্ট্যাম্প কাগজে টিপসহি করিয়ে নেয় যাহার স্ট্যাম্প নম্বর ৮৬৪৯৬৪৫।
সালমা খাতুনের পুত্র সৌরভ জানায়,  কুচিয়ামোড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান টিপু সিকদার বলেন ৪ কিস্তির মাধ্যমে ১ লক্ষ্য টাকা দিতে হবে এই শালিশ বোর্ড অফিসে করে ছিলো। এরপর ডিবি অফিসে অভিযোগ দেওয়া হয়। সালমা খাতুন আরও বলেন ২০২০ সালে ১ ‌লক্ষ ৫০ হাজার টাকা শবেবরাতে গরু জবাই করে গোস্ত বিক্রি করে দেওয়ার কথা ছিলো কিন্তু সে আমাকে টাকা ফেরত দেয়নি।
কুচিয়ামোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম টিপু বুধবার ২ আগস্ট রাত ৯ টার সময় বলেন, শাহাজান মোল্লার কাছে ছালমা খাতুন টাকা পাবে, আমার ইউনিয়ন পরিষদে উভয় পক্ষের গণ্যমান্য ব্যক্তিগণের সম্মুখে গত ৪-৫ মাস পূর্বে শালিস হয়। এই শালিসে সিদ্ধান্ত হয় শাহাজান মোল্লা ছালমা খাতুনকে ১ লাখ টাকা প্রদান করিবে ৪ টি কিস্তির মাধ্যমে।
শাহাজান মোল্লা বলেন, ১ কিস্তির ২৫ হাজার টাকা জোরপূর্বক চেয়ারম্যানের লোকজন  আমুড়িয়া চরপাড়া এলাকার রফিক নামে এক ব্যক্তির কাছে গচ্ছিত রেখেছেন, রফিকের  কাছে সালমা খাতুন এর এই টাকা সুদে কারবারি লেনদেন হয়েছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, শাহাজান ও সালমার মধ্যে কোন সুদে কারবারি হয়েছে কিনা এটা আমার জানা নাই।
সুদে কারবারি লেনদেন হলে আমি কখনও এই শালিস দরবার আমার ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে করতাম না। আর শাহাজান মোল্লা পূর্বে স্ট্যাম্প ছাড়া ছালমার কাছে ১ লাখ টাকা লেনদেন করা হয়ে ছিলো এটা ইউনিয়ন পরিষদের শালিসের সময় জানায়নি, চেয়ারম্যান বলেন অবশ্যই পূর্বের এই লেনদেনের ঘটনা আমাকে বললে আমি উপযুক্ত সঠিক বিচার করতাম।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলামকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

error: Content is protected !!

মাগুরার আমুড়িয়ায় সুদে কারবারি সালমার জালচক্রে নীরিহ কৃষক শাহাজান প্রতারণার ফাঁদে

আপডেট টাইম : ০৪:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৩
রনি আহমেদ রাজু, মাগুরা জেলা প্রতিনিধি :
মাগুরা সদর উপজেলার কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের হরিশপুর গ্রামের শাহাজান মোল্লা(৫৫), পিং- মৃত জুলমত মোল্যা, সাং- হরিশপুর শাহাজান নিঃস্ব হয়ে দিন যাপন করছে। গত কয়েক বছর পূর্বে এপ্রিল-মে মাসে সালমা খাতুন (৪০), স্বামী- মোঃ মুরাদ আলী, গ্রাম- আমুড়িয়া (চরপাড়া) এর কাছে থেকে ১ লক্ষ টাকা সুদে নেওয়া হয়। এই ১ লক্ষ টাকা ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুরের রুহুল আমিন (৩৫) পেয়ারা ব্যবসায়ীকে আমার মাধ্যমে দেওয়া হয়।
সালমা খাতুনকে এই সুদে টাকার ফিরিয়ে দেওয়ার শর্ত যে প্রতি সপ্তাহে ২ হাজার টাকা দিতে হবে কিন্তু পরবর্তীতে ৭ মাস ধরে প্রতি সপ্তাহে ১৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়, যে টাকার পরিমাণ প্রায় ৪২ হাজার টাকা। এরপর ২০২২ সালে ১২ এপ্রিল মঙ্গলবার পেয়ারা ব্যবসায়ী রুহুল আমিন সেই ১ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিলে আমি তৎক্ষনাৎ সালমা খাতুনকে টাকা ফেরত দিলে সে আরও ২০ হাজার টাকা দাবি করে। শাহাজান মোল্লা আরও বলেন গত রবিবার ১৩ নভেম্বর ২০২২ সালে আমি আমুড়িয়া বাজারে বাজার করার উদ্দেশ্য যাচ্ছিলাম সালমার বাড়ির সামনে থেকে সালমার পুত্র সৌরভ এবং আরও কয়েকজন লোকজন মিলে আমাকে তার  বাড়ির ভেতর জোরপূর্বক টেনে হিজড়ে ধরে নিয়ে আমার পিঠে হাতে লাঠি দিয়ে প্রহার করে শারীরিক জখম করে এবং জোরপূর্বক ভাবে শিকল দিয়ে বেধে আইয়ুবের সামনে সাদা স্ট্যাম্পের কাগজে ল্যাম্পের কালি দিয়ে জোরপূর্বক টিপসহি করিয়ে নেয়।
সালমা খাতুন কুল্লিয়া বাজার থেকে আমার কাছ থেকে ২৫ কেজি মাংস নেয় এবং সেই মাংসর টাকাও সে দেয়নি। এই স্ট্যাম্প নিয়ে পরবর্তীতে কুচিয়ামোড়া ইউনিয়ন পরিষদে শালিস হয় ও এই শালিসের পর সালমা খাতুন  মাগুরা জেলা গোয়েন্দা অফিস (ডিবি) তে অভিযোগ দায়ের করেছে আমার বিরুদ্ধে। আলামিন জানান সালমার ছেলে সৌরভ ও নছিমন চালক স্বপন আমার বাড়ির উপর এসে জীবননাশের হুমকি প্রদর্শন করে। সালমা খাতুন বলেন শাহজান মোল্লার সাথে আমি ধর্ম বোন আত্মীয় সম্পর্ক গড়ে তুলে ছিলাম। ২০২০ সালে আমার কাছে থেকে শাহাজান মোল্লা মৌখিক ভাবে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ছিলো। শাহাজান মোল্লা সেই টাকা দেয়নি বলে আমি ২ বছর পর ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে হাড়ির কালি দিয়ে জোর করে সাদা স্ট্যাম্প কাগজে টিপসহি করিয়ে নেয় যাহার স্ট্যাম্প নম্বর ৮৬৪৯৬৪৫।
সালমা খাতুনের পুত্র সৌরভ জানায়,  কুচিয়ামোড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান টিপু সিকদার বলেন ৪ কিস্তির মাধ্যমে ১ লক্ষ্য টাকা দিতে হবে এই শালিশ বোর্ড অফিসে করে ছিলো। এরপর ডিবি অফিসে অভিযোগ দেওয়া হয়। সালমা খাতুন আরও বলেন ২০২০ সালে ১ ‌লক্ষ ৫০ হাজার টাকা শবেবরাতে গরু জবাই করে গোস্ত বিক্রি করে দেওয়ার কথা ছিলো কিন্তু সে আমাকে টাকা ফেরত দেয়নি।
কুচিয়ামোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম টিপু বুধবার ২ আগস্ট রাত ৯ টার সময় বলেন, শাহাজান মোল্লার কাছে ছালমা খাতুন টাকা পাবে, আমার ইউনিয়ন পরিষদে উভয় পক্ষের গণ্যমান্য ব্যক্তিগণের সম্মুখে গত ৪-৫ মাস পূর্বে শালিস হয়। এই শালিসে সিদ্ধান্ত হয় শাহাজান মোল্লা ছালমা খাতুনকে ১ লাখ টাকা প্রদান করিবে ৪ টি কিস্তির মাধ্যমে।
শাহাজান মোল্লা বলেন, ১ কিস্তির ২৫ হাজার টাকা জোরপূর্বক চেয়ারম্যানের লোকজন  আমুড়িয়া চরপাড়া এলাকার রফিক নামে এক ব্যক্তির কাছে গচ্ছিত রেখেছেন, রফিকের  কাছে সালমা খাতুন এর এই টাকা সুদে কারবারি লেনদেন হয়েছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, শাহাজান ও সালমার মধ্যে কোন সুদে কারবারি হয়েছে কিনা এটা আমার জানা নাই।
সুদে কারবারি লেনদেন হলে আমি কখনও এই শালিস দরবার আমার ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে করতাম না। আর শাহাজান মোল্লা পূর্বে স্ট্যাম্প ছাড়া ছালমার কাছে ১ লাখ টাকা লেনদেন করা হয়ে ছিলো এটা ইউনিয়ন পরিষদের শালিসের সময় জানায়নি, চেয়ারম্যান বলেন অবশ্যই পূর্বের এই লেনদেনের ঘটনা আমাকে বললে আমি উপযুক্ত সঠিক বিচার করতাম।

প্রিন্ট