ঢাকা , শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

পাওনা টাকা চাওয়ায় সংখ্যালঘু যুবককে নির্যাতন করায় আত্মহত্যা

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে পাওনা টাকা চেয়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে এক সংখ্যালঘু যুবকের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। নিহতের নাম স্বদেশ সরকার (২৬)। তিনি উপজেলার চতুল ইউনিয়নের পোয়াইল গ্রামের স্বপন সরকারের ছেলে। আত্মহত্যার আগে ওই যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে এক মিনিট পঁয়ত্রিশ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে এ ঘটনার বিচার চেয়েছেন।
জানা যায়, একই গ্রামের রিয়াজ (১৬) কিছু দিন আগে স্বদেশের নিকট থেকে ১৫০ টাকা ধার নেয়। রিয়াজ উপজেলার চতুল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসমত আলীর ভাই জাকারিয়ার ছেলে। গত সোমবার রিয়াজের নিকট পাওনা ১৫০ টাকা চাইলে রিয়াজ পাওনা টাকা না দিয়ে স্বদেশকে মারধর করে। এ ঘটনায় মর্মাহত হয়ে স্বদেশ বুধবার রাত ১০টার দিকে নিজ বাড়ির ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে স্বদেশের পোস্ট দেয়া এক মিনিট পঁয়ত্রিশ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের গ্রামের জাকারিয়ার ছোট ছেলে রিয়াজ। সে আমার কাছ থেকে ১৫০ টাকা নিয়ে টাকা দেয় নাই। আরো আমাকে মেরেছে। আমি টাকা চাইলে বলে কীসের টাকা। আমাকে মারছে ভাই, ঘুষি মারছে। সবার সামনে। আমার পক্ষে কেউ একটা কথা বললো না। আমি পুলিশ প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলছি-‘বিচারটা যেন আমি পাই। আপনারা এই ভিডিওটা শেয়ার করে দেন যাতে পুলিশ প্রশাসন দেখতে পায়।’
পরে পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রিয়াজের চাচা হাসমত আলী বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। ওই ছেলেটা মারা যাওয়ার পরে শুনেছি রিয়াজ ওকে (স্বদেশ) মেরেছিল।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক উত্তম কুমার সেন বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গেলে স্বদেশকে মারধরের বিষয়ে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার অফিসার ইন চার্জ মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, ছেলেটা আগে থেকেই অভিমানী ছিল। ছেলেটা মারা যাওয়ার আগে আমাদের জানায়নি যে ছেলেপুলে তাকে মেরেছে। মারা গেলে তার বাবা মৃত্যুর সংবাদ দিলে অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণের জন্য লাশ পোস্টমর্টেমে পাঠানো হয়েছে। অন্য কোন বিষয় আছে কি-না পুলিশ তদন্ত করে দেখবে।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

পাওনা টাকা চাওয়ায় সংখ্যালঘু যুবককে নির্যাতন করায় আত্মহত্যা

আপডেট টাইম : ০২:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩
এস. এম. রুবেল, স্টাফ রিপোর্টার :
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে পাওনা টাকা চেয়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে এক সংখ্যালঘু যুবকের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। নিহতের নাম স্বদেশ সরকার (২৬)। তিনি উপজেলার চতুল ইউনিয়নের পোয়াইল গ্রামের স্বপন সরকারের ছেলে। আত্মহত্যার আগে ওই যুবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে এক মিনিট পঁয়ত্রিশ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে এ ঘটনার বিচার চেয়েছেন।
জানা যায়, একই গ্রামের রিয়াজ (১৬) কিছু দিন আগে স্বদেশের নিকট থেকে ১৫০ টাকা ধার নেয়। রিয়াজ উপজেলার চতুল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসমত আলীর ভাই জাকারিয়ার ছেলে। গত সোমবার রিয়াজের নিকট পাওনা ১৫০ টাকা চাইলে রিয়াজ পাওনা টাকা না দিয়ে স্বদেশকে মারধর করে। এ ঘটনায় মর্মাহত হয়ে স্বদেশ বুধবার রাত ১০টার দিকে নিজ বাড়ির ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে স্বদেশের পোস্ট দেয়া এক মিনিট পঁয়ত্রিশ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের গ্রামের জাকারিয়ার ছোট ছেলে রিয়াজ। সে আমার কাছ থেকে ১৫০ টাকা নিয়ে টাকা দেয় নাই। আরো আমাকে মেরেছে। আমি টাকা চাইলে বলে কীসের টাকা। আমাকে মারছে ভাই, ঘুষি মারছে। সবার সামনে। আমার পক্ষে কেউ একটা কথা বললো না। আমি পুলিশ প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলছি-‘বিচারটা যেন আমি পাই। আপনারা এই ভিডিওটা শেয়ার করে দেন যাতে পুলিশ প্রশাসন দেখতে পায়।’
পরে পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রিয়াজের চাচা হাসমত আলী বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। ওই ছেলেটা মারা যাওয়ার পরে শুনেছি রিয়াজ ওকে (স্বদেশ) মেরেছিল।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক উত্তম কুমার সেন বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গেলে স্বদেশকে মারধরের বিষয়ে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার অফিসার ইন চার্জ মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, ছেলেটা আগে থেকেই অভিমানী ছিল। ছেলেটা মারা যাওয়ার আগে আমাদের জানায়নি যে ছেলেপুলে তাকে মেরেছে। মারা গেলে তার বাবা মৃত্যুর সংবাদ দিলে অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণের জন্য লাশ পোস্টমর্টেমে পাঠানো হয়েছে। অন্য কোন বিষয় আছে কি-না পুলিশ তদন্ত করে দেখবে।

প্রিন্ট