ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের পোয়াইল গ্রামে বিবদমান আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের দ্ব›েদ্বর জেরে বুধবার রাতে আকমল শেখ নামের একজন খুন হয়েছে।
পুলিশ হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বুধবার রাতে ঐ গ্রামে ইয়াছিন গাজীর দোকানের পাশে উভয় গ্রæপ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন শেষে খিচুড়ি খাওয়ার আয়োজন করে।
আকমল শেখ খিচুড়ি খেয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর নিকট থেকে ২০টাকা নিয়ে দোকানে যায় বিড়ি কিনতে।
বিড়ি কিনে ফেরার সময় দুর্বৃত্তরা তাকে রাস্তার পাশে নিয়ে ঘাড় ও গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে তার আর্তচিৎকারে লোকজন উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.মাহমুদ রহমান তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আকমল শেখ মৃত আহমদ শেখের ছেলে। এ ঘটনার পরে মধুখালী সার্কেলের এএসপি আনিসুজ্জামান লালন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
নিহত আকমল শেখের ছেলে ইব্রাহিম শেখ বলেন, সে খারদিয়া শ্বশুর বাড়িতে ছিল। খবর পেয়ে বাইসাইকেলে বাড়ি ফেরার সময় তেলজুড়ী বাজার পার হওয়ার পর জামাল মাতুব্বর, সজিব, ইউনুছ, হাসান, হোসেন, মাহিম, শহিদুল প্রমুখকে সংঘবদ্ধভাবে দেখতে পায়। এবং তারা ইব্রাহিমকে ধাওয়া করে।
ইব্রাহিমের ধারণা এ গ্রুপই তার পিতাকে হত্যা করেছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে জামাল মাতুব্বরের স্ত্রী লাখি বেগম জানান, দুই বছর আগে নাজিম উদ্দিন মেম্বারের লোকজনের হাতে আমার ভাসুর দেলওয়ার মাতুব্বর খুন হয়। সে খুনের মামলা থেকে বাঁচতে তারা নিজেরাই এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।
চতুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটু বলেন, রাতের অন্ধকারে কে বা কারা আকমল শেখকে কুপিয়েছে তা কেউ বলতে পারেনা। তবে যে বা যারাই এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকুক না কেন প্রশাসনকে অনুরোধ করবো নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য।
বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, তিনি এবং উর্ধত্বন কতৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওই এলাকায় দু‘পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। তবে ঠিক কেন হত্যা কান্ড ঘটেছে তা এজাহার না পাওয়া পর্যন্ত বলা যাবেনা।
পরিস্থিতির চাহিদানুযী পুলিশ মোতায়ন থাকবে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে থানায় আনা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরে মামলা হবে।
উল্লেখ্য, চতুল ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক আহবায়ক জামাল মাতুব্বরের সাথে বর্তমান ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নাজিম উদ্দিন মেম্বরের দীর্ঘদিন ধরে দ্ব›দ্ব চলে আসছে।
দুই পক্ষের দ্বন্দে¦র জেরে ২০১৯ সালে ১৭ই এপ্রিল বুধবার খালেক মাতুব¦রের ছেলে দেলওয়ার মাতুব্বর খুন হয়।
প্রিন্ট