ঢাকা , সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

স্ত্রীর অভিমান ভাঙাতেই ভাইকে হত্যা

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) আসামি ইকরামুল গাজীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পর ভ্যানচালক দেলোয়ার গাজীর হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন।

এর আগে বুধবার (২১ জুন) দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে নড়াইল সদরের বিছালী ইউনিয়নের মধুরগাতী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে মৃত শুকুর আলী গাজীর ছেলে ও ভ্যানচালক দেলোয়ার গাজীর ভাই ইকরামুল গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনা তদন্তকালে ও আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, ইকরামুল গাজীর স্ত্রীর সঙ্গে নিহত দেলোয়ার গাজীর স্ত্রীর বিভিন্ন সময় সাংসারিক ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হত। ঝগড়া-বিবাদের বিষয়টি ইকরামুলের স্ত্রী তাকে জানালে প্রতিকার চেয়ে বড় ভাই দেলোয়ার গাজীর কাছে একাধিকবার নালিশ করে  ইকরামুল। কিন্তু পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদের বিষয়ে দেলোয়ার গাজী কোনো গুরুত্বারোপ করেনি এমনকি সান্ত্বনামূলক কোনো কথা বলেননি ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে।

এতে ইকরামুলের স্ত্রী রাগ করে তার বাবার বাড়ি চলে যান। ঘটনার সমাধান না হলে ইকরামুলের সংসারে আসবে না বলে আল্টিমেটাম দেন। স্ত্রীর এই আল্টিমেটামের কারণেই ইকরামুল বিষয়টি নিয়ে তার বন্ধুর সঙ্গে মিলে তার ভাই দেলোয়ার গাজীকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে।

 

পুলিশ সুপার আরও বলেন, পরিকল্পনামাফিক গত মে মাসের ২৯ তারিখ আনুমানিক রাত ৯টার দিকে দেলোয়ার গাজীকে ইকরামুলের বন্ধু কৌশলে ডেকে নিয়ে যান। এ সময় ইকরামুল ও তার অপর সহযোগী একত্রে তাদের পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী দেলোয়ার গাজীর ভ্যানে চড়ে আটঘরা গ্রাম থেকে নাউসোনা মহাশ্মশানগামী রাস্তা দিয়ে আসতে থাকেন। পথে নূর মোহাম্মদ বিশ্বাসের মৎস্যঘেরের নিকট আসার পর ইকরামুলের বন্ধু তার কাছে থাকা গামছা দিয়ে পেছন থেকে দেলোয়ার গাজীর গলা পেঁচিয়ে ধরে। পরে দুইজন দুই পাশ থেকে গামছা টেনে শ্বাসরোধ করে দেলোয়ার গাজীর মৃত্যু নিশ্চিত করে।

এসপি সাদিরা খাতুন বলেন, এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের মোড় অন্য দিকে প্রবাহিত করতেই ইকরামুল ও তার বন্ধু ঘটনার ওই রাতে পার্শ্ববর্তী জেলা যশোরের অভয়নগর থানাধীন বুনোরামনগর এলাকায় নিহত দেলোয়ার গাজীর ভ্যানটি রেখে পালিয়ে যায়। ইকরামুলের সহযোগীকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

 

 

উল্লেখ্য, গত ২৯ মে বিকেলে নড়াইল সদরের বিছালী ইউনিয়নের মধুরগাতী গ্রামের মৃত শুকুর আলী গাজীর ছেলে ও ভ্যানচালক দেলোয়ার গাজী ওরফে দেলবার নিজের ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাতে বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজির পাশাপাশি বিছালী পুলিশ ক্যাম্পে অভিযোগ করেন। পরের দিন ৩০ মে সকালে ওই ইউনিয়নের আটঘরা গ্রামের নাউসোনা শ্মশানগামী কাঁচারাস্তা সংলগ্ন নূর মোহাম্মদ বিশ্বাসের মৎস্য ঘেরের পাড় থেকে নিখোঁজ দেলোয়ার গাজীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় ৩১ মে নিহতের ভাই গাজী মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নড়াইল সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

স্ত্রীর অভিমান ভাঙাতেই ভাইকে হত্যা

আপডেট টাইম : ০৮:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ জুন ২০২৩

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) আসামি ইকরামুল গাজীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পর ভ্যানচালক দেলোয়ার গাজীর হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন।

এর আগে বুধবার (২১ জুন) দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে নড়াইল সদরের বিছালী ইউনিয়নের মধুরগাতী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে মৃত শুকুর আলী গাজীর ছেলে ও ভ্যানচালক দেলোয়ার গাজীর ভাই ইকরামুল গাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনা তদন্তকালে ও আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, ইকরামুল গাজীর স্ত্রীর সঙ্গে নিহত দেলোয়ার গাজীর স্ত্রীর বিভিন্ন সময় সাংসারিক ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হত। ঝগড়া-বিবাদের বিষয়টি ইকরামুলের স্ত্রী তাকে জানালে প্রতিকার চেয়ে বড় ভাই দেলোয়ার গাজীর কাছে একাধিকবার নালিশ করে  ইকরামুল। কিন্তু পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদের বিষয়ে দেলোয়ার গাজী কোনো গুরুত্বারোপ করেনি এমনকি সান্ত্বনামূলক কোনো কথা বলেননি ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে।

এতে ইকরামুলের স্ত্রী রাগ করে তার বাবার বাড়ি চলে যান। ঘটনার সমাধান না হলে ইকরামুলের সংসারে আসবে না বলে আল্টিমেটাম দেন। স্ত্রীর এই আল্টিমেটামের কারণেই ইকরামুল বিষয়টি নিয়ে তার বন্ধুর সঙ্গে মিলে তার ভাই দেলোয়ার গাজীকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে।

 

পুলিশ সুপার আরও বলেন, পরিকল্পনামাফিক গত মে মাসের ২৯ তারিখ আনুমানিক রাত ৯টার দিকে দেলোয়ার গাজীকে ইকরামুলের বন্ধু কৌশলে ডেকে নিয়ে যান। এ সময় ইকরামুল ও তার অপর সহযোগী একত্রে তাদের পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী দেলোয়ার গাজীর ভ্যানে চড়ে আটঘরা গ্রাম থেকে নাউসোনা মহাশ্মশানগামী রাস্তা দিয়ে আসতে থাকেন। পথে নূর মোহাম্মদ বিশ্বাসের মৎস্যঘেরের নিকট আসার পর ইকরামুলের বন্ধু তার কাছে থাকা গামছা দিয়ে পেছন থেকে দেলোয়ার গাজীর গলা পেঁচিয়ে ধরে। পরে দুইজন দুই পাশ থেকে গামছা টেনে শ্বাসরোধ করে দেলোয়ার গাজীর মৃত্যু নিশ্চিত করে।

এসপি সাদিরা খাতুন বলেন, এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের মোড় অন্য দিকে প্রবাহিত করতেই ইকরামুল ও তার বন্ধু ঘটনার ওই রাতে পার্শ্ববর্তী জেলা যশোরের অভয়নগর থানাধীন বুনোরামনগর এলাকায় নিহত দেলোয়ার গাজীর ভ্যানটি রেখে পালিয়ে যায়। ইকরামুলের সহযোগীকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

 

 

উল্লেখ্য, গত ২৯ মে বিকেলে নড়াইল সদরের বিছালী ইউনিয়নের মধুরগাতী গ্রামের মৃত শুকুর আলী গাজীর ছেলে ও ভ্যানচালক দেলোয়ার গাজী ওরফে দেলবার নিজের ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাতে বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজির পাশাপাশি বিছালী পুলিশ ক্যাম্পে অভিযোগ করেন। পরের দিন ৩০ মে সকালে ওই ইউনিয়নের আটঘরা গ্রামের নাউসোনা শ্মশানগামী কাঁচারাস্তা সংলগ্ন নূর মোহাম্মদ বিশ্বাসের মৎস্য ঘেরের পাড় থেকে নিখোঁজ দেলোয়ার গাজীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় ৩১ মে নিহতের ভাই গাজী মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নড়াইল সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।