প্রচন্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। প্রশান্তির জন্য একটুখানি ছায়ার সন্ধানে শ্রমজীবী মানুষ। গত কয়েক দিনের টানা দাবদাহে অতিষ্ঠ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার মানুষ।গরমের তীব্রতায় ছোটবড় সবার হাঁসফাঁস অবস্থা। প্রচন্ড ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস শুরু হয়েছে জনজীবন। বাসা থেকে বের হওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই রোদের খরতাপে অসহনীয় অবস্থায় পড়ছেন তাঁরা। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না অনেকে। যাঁরা ঘুরে ঘুরে পণ্য বিক্রি করেন, রোদের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে তাঁরা কম লাভে দ্রুত পণ্য বিক্রি করে বাসার পথ ধরছেন। বৃষ্টি না হওয়ায় ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে খাল-বিলসহ মাটি।
গত জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে ভেড়ামারায় ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হয়নি। আষাঢ় মাসের আজ ২ তারিখ। কােন রকম বৃষ্টিপাত নেই।ভেড়ামারায়
সপ্তাহখানেক ধরে তাপমাত্রা থাকছে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। আবহাওয়া দপ্তর সুত্রে জানাগেছে, আষাঢ় মাসের আজ ২তারিখ (১৬জুন)শুক্রবার ভেড়ামারায় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এই তাপমাত্রায়ও সমস্যা হতো না যদি স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতো। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ভূপৃষ্ঠে পুঞ্জিভূত তাপ বাড়িয়ে দিয়েছে গরমের অনুভূতি।
এদিকে হাসপাতাল ও ক্লিনিক গুলোতে ডায়রিয়া রোগীর চাপ অত্যাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাওযার কারনে গত কয়েক দিন ধরে বেলা বাড়ার সাথে-সাথেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। লোকজন অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেনা। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা সব মানুষের। রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকায় গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তাপপ্রবাহে বেশি বিপাকে পড়েছেন ভেড়ামারার শ্রমজীবী মানুষ। এ উপজেলায় তীব্র গরম ও রোদের তাপে কৃষি শ্রমিকসহ দিনমজুর, রিকশাচালকরা কাজ করতে পারছে না। এই অবস্থায় সরবতসহ পানীয় জাতিয় দোকানে ভীর করছেন লোকজন।
দিন মজুর শরিফুল ইসলাম সাগর বলেন, এমন গরম জীবনে দেখিনি, সব যেন পুড়ে যাচ্ছে। ঘরের মধ্যেও স্বস্তিতে থাকতে পারছিনা। লোড শেডিং এ রাতে ঘুমাতে পারছিনা, গরমে দম যেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
প্রচন্ড গরমে নাজেহাল শিশু-বৃদ্ধ। এই অবস্থায় একটু রেহাই পেতে একমাত্র ভরসা ফলের রস বা শরবত। অতিরিক্ত গরমে শরীর-মন ঠান্ডা রাখতে সাহায করছে শরবত। চিকিৎসকদের পরামর্শ পুরুষদের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩.৭ লিটার এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ২.৭ লিটার জল শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই অনেকেই গরমে অস্বস্তি কমাতে বিভিন্ন রকম শরবত পান করেন।
চিকিৎসক ডা: সাজেদুর রহমান সাজু বলছেন, প্রচন্ড গরমে মানুষ অনেক ঘামচ্ছে। শরীর থেকে অনেক পানি বেরিয়ে যাচ্ছে। তাই গরম মোকাবেলা করতে হলে বেশি বেশি করে পানি খাওয়ার জন্য জনগণকে বলছেন।
ভেড়ামারা হাসপাতালে কর্মরত জোৎস্না বেগমের ভাষায়, গরমে যেন দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, মনে হয় পড়ে কহন যেন মরে যাব।
দিনমজুর লালন শাহ বলেন, কাজ করতি পারতিছি না। পুকুরে নামেও শান্তি নেই, গরমে পুকুরের পানি যেন ফুঁটছে, জম্মের গরম, নামা যায় না, গোসল করা যায় না। তাই সকালে আর রাত্রিরে গোসল করি, তা করলি কি হবে, একটু পরেই যা তাই, গা ঘামতে থাকে।
প্রিন্ট