শয্যা না পেয়ে রোগীরা যায়গা নিয়েছেন ওয়ার্ডের মেঝেতে। সেখানেও ঠাঁই না পেয়ে হাসপাতালের বারান্দায় নিজের বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে অনেকের। ৩১ শয্যার হাসপাতালে রবিবার থেকে সোমবার বিকেল প্রর্যন্তু ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১১৪ জন।
উপজেলার প্রায় তিন লাখ মানুষের চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। ধারণ ক্ষমতার প্রায় চারগুণ রোগী ভর্তির হওয়ার কারণে নির্ধারিত তিনটি ওয়ার্ড ছাপিয়ে রোগীদের ঠাঁই নিতে হয়েছে মেঝেতে ও বারান্দায়।
অতিরিক্ত রোগীর চাপে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত না হলেও জায়গা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।
ডায়রিয়া, পেট ব্যাথা, জ¦র, শ্বাসকষ্ট, মারামারি, গর্ভকালীন জটিলতা ও প্রচন্ড গরমের কারণে নানান রোগে আক্রান্ত রোগীদের চাপে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। রোগীদের তীব্র চাপে বেগ পেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের। শয্যা না পাওয়া বিভিন্ন রোগীদের ঠাঁই নিতে হচ্ছে মেঝেতে ও বারান্দায়। ফলে তাদেরকেও বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সোমবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে- ভর্তিকৃত রোগীদের চাপ। ৩১ শয্যার এই হাসপাতালে গত দুইদিনে ভর্তি হয়েছেন ১১৩ জন রোগী। এরমধ্যে গত শনিবার ভর্তি হয়েছেন ৩৬ জন। রবিবার ৫৭ জন এবং সোমবার দুপুর বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন ২১ জন রোগী। ৩১ শয্যার বিপরিতে ১১৪ জন রোগী ভর্তি হওয়ার কারণে ৮৩ জন রোগীর ঠাঁই হয়েছে মেঝেতে ও বারান্দায়।
এ পরিস্থিতিতে ধারণ ক্ষমতার প্রায় চারগুণ রোগী নিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
একদিকে মেঝেতে ও বারান্দায় জায়গা পাওয়া রোগী ও তাদের স্বজনরা দুর্ভোগের পাশাপাঁশি অস্বস্তি বোধ করছেন। অন্যদিকে অতিরিক্তি রোগী সামলাতে ডাক্তার ও নার্সদেরকেও বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। মেঝেতে ও বারান্দায় জায়গা পাওয়া রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা যেন লজ্জা পাচ্ছিলেন! তখন কথা হয় ভর্তিকৃত রোগীদের সাথে। এসময় তারা নানা অভিযোগ তুলে ধরেন।
১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স শুরু থেকেই ৩১ শয্যার। পরবর্তীকালে ৫০ শয্যার ভবন নির্মিত হয়। ২০১৬ সালের ৩০ জুলাই তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ৫০ শয্যার হাসপাতালের শুভ উদ্বোধন করেন। তবে এখনও ৩১ শয্যার জনবল এবং উপকরণ দিয়েই পরিচালিত হচ্ছে এটি। শিগগিরই ৫০ শয্যার কার্যক্রম শুরু হওয়ার দরকার বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মকছেদুল মোমিন বলেন, ‘৩১ শয্যার বিপরিতে প্রায় চারগুণ ভর্তি রোগীদের জায়গা দিতে সমস্যা হচ্ছে। মেঝেতে ও বারান্দায় বিছানা দেওয়া হচ্ছে। ফলে তাদের বেশ কষ্ট হচ্ছে। তবে চিকিৎসেবা স্বাভাবিকভাবেই চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অতিদ্রুত ৫০ শয্যার কার্যক্রম শুরু করার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু পদক্ষেপ প্রয়োজন।’
প্রিন্ট