ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ফরিদপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শামীম তালুকদার গ্রেপ্তার Logo এবার ২১ দিনের মধ্যে জবাব দিতে আদানিকে সমন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র Logo মাগুরা শ্রীপুরে মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী গ্রেফতার Logo রাশিয়ার কুরস্কে ৪০ শতাংশ এলাকার দখল হারিয়েছে ইউক্রেন Logo কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির বিপক্ষে যাওয়ায় ১৫ নেতাকে শোকজ Logo ভিডিও ফুটেজে নারীর ওপর হামলা, পুলিশের প্রতিবেদনে উলটে গেল ঘটনা Logo নতুন নেতৃত্বের আ’লীগ চায় বিএনপি Logo বোয়ালমারীতে ইউনিটি ফর ইউনিভার্স হিউম্যান রাইটস অব বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পরিচিতি সভা Logo লালপুরে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সরল আটক Logo গোদাগাড়ীতে ইউপি বিএনপি’র কর্মী সভা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

পূর্ণাঙ্গ রূপ পাচ্ছে থার্ড টার্মিনাল

৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন ♦ চলছে যন্ত্রপাতি লাগানোর কাজ

সিলিংয়ে সোনালি-ক্রিম রঙের চোখধাঁধানো কারুকাজ। মেঝেতে লাগানো হচ্ছে বাহারি টাইলস। চারপাশের নীল কাচে শেষ বিকালের আলো ঠিকরে পড়ে তৈরি করছে মোহনীয় দৃশ্যপট। হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় (থার্ড) টার্মিনালের ভিতরে প্রবেশ করলে অনিন্দ্যসুন্দর এ কর্মযজ্ঞে যে-কারও চোখ আটকাতে বাধ্য।

দেশের অন্যতম মেগা প্রকল্প শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে দ্রুতগতিতে। এখন পর্যন্ত এ প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আসছে অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ টার্মিনাল উদ্বোধন করবেন।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, ‘থার্ড টার্মিনাল নির্মাণকাজের ৭৫ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। অক্টোবরে এ প্রকল্পের আংশিক উদ্বোধনের (সফট ওপেনিং) সময় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সিলিংয়ের কাজ প্রায় শেষ। মেঝের টাইলস লাগানোর কাজ চলছে। বাইরের গ্লাস লাগানোর কাজ শেষ। যন্ত্রপাতি লাগানো চলছে। প্রতিদিন ১০-১২ হাজার কর্মী তিন শিফটে কাজ করছেন।রোদবৃষ্টি মাথায় নিয়ে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। আশা করি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারব।’

 

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, শাহজালাল বিমানবন্দরে বর্তমানে যে দুটি টার্মিনাল রয়েছে, তার যাত্রীধারণ ক্ষমতা বছরে প্রায় ৭০ লাখ। তৃতীয় টার্মিনাল তৈরি হলে এ সংখ্যা দাঁড়াবে ২ কোটির কাছাকাছি। ৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারের এ টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি প্লেন রাখার অ্যাপ্রোন (প্লেন পার্ক করার জায়গা) নির্মাণ করা হচ্ছে। টার্মিনাল ভবন হবে ২ লাখ ৩০ হাজার স্কয়ার মিটারের। ভবনের ভিতরে থাকবে পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য ও অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির ছোঁয়া। নির্মাণাধীন টার্মিনালটিতে বেশ কয়েকটি স্ট্রেইট এসকেলেটর লাগানো হবে। যারা বিমানবন্দরের ভিতরে দীর্ঘ পথ হাঁটতে পারবেন না, তাদের জন্য এ ব্যবস্থা। সিঙ্গাপুর, ব্যাংককসহ বিশ্বের অত্যাধুনিক বিমানবন্দরগুলোয় বেশি যাত্রী প্রবাহের জায়গা এ এসকেলেটরগুলো ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি যাত্রীদের মসৃণ যাত্রার অভিজ্ঞতা দেবে। বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে মেট্রোরেল। তৈরি হবে পৃথক একটি স্টেশনও। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে আসা যাত্রীরা বিমানবন্দর থেকে বের না হয়েই মেট্রোরেলে নিজ গন্তব্যে যেতে পারবেন।

 

এ ছাড়া ঢাকার যে কোনো স্টেশন থেকে মেট্রোরেলের মাধ্যমে সরাসরি বিমানবন্দরের বহির্গমন এলাকায় যাওয়া যাবে। টার্মিনালটির প্রতিটি ওয়াশরুমের সামনে থাকবে একটি করে বেবি কেয়ার লাউঞ্জ। এ লাউঞ্জের ভিতর মায়েদের ব্রেস্ট ফিডিং বুথ, একটি বড় পরিসরে ফ্যামিলি বাথরুম থাকবে। এ ছাড়া শিশুদের খেলার জন্য স্লিপার-দোলনাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা থাকবে। হেলথ ইন্সপেকশন সুবিধা, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ফার্স্ট-এইড রুম, নানা রোগের টেস্টিং সেন্টার ও আইসোলেশন এরিয়া থাকবে। টার্মিনালের ভিতরের ভবনটির নকশা তৈরি করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন।

 

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ প্রকল্প ব্যয় নির্ধারিত হয়েছে ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি ৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। মোট খরচের মধ্যে সরকার দেবে ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার এবং ঋণ হিসেবে জাপানের জাইকা দেবে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। থার্ড টার্মিনালের নকশায় পর্যাপ্তসংখ্যক এসকেলেটর, সাবস্টেশন ও লিফট সংযুক্ত রাখা হয়েছে। থাকবে রাডার, কন্ট্রোল টাওয়ার, অপারেশন ভবন, বহুতল কার পার্ক। তিন তলাবিশিষ্ট এ টার্মিনাল ভবনটির স্থাপত্যরীতিতে আনা হচ্ছে অনন্য নান্দনিকতা। টার্মিনাল ভবনের বহির্বিভাগে থাকবে চোখধাঁধানো নকশা।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শামীম তালুকদার গ্রেপ্তার

error: Content is protected !!

পূর্ণাঙ্গ রূপ পাচ্ছে থার্ড টার্মিনাল

আপডেট টাইম : ০৭:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০২৩
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক :

সিলিংয়ে সোনালি-ক্রিম রঙের চোখধাঁধানো কারুকাজ। মেঝেতে লাগানো হচ্ছে বাহারি টাইলস। চারপাশের নীল কাচে শেষ বিকালের আলো ঠিকরে পড়ে তৈরি করছে মোহনীয় দৃশ্যপট। হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় (থার্ড) টার্মিনালের ভিতরে প্রবেশ করলে অনিন্দ্যসুন্দর এ কর্মযজ্ঞে যে-কারও চোখ আটকাতে বাধ্য।

দেশের অন্যতম মেগা প্রকল্প শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে দ্রুতগতিতে। এখন পর্যন্ত এ প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আসছে অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ টার্মিনাল উদ্বোধন করবেন।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, ‘থার্ড টার্মিনাল নির্মাণকাজের ৭৫ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। অক্টোবরে এ প্রকল্পের আংশিক উদ্বোধনের (সফট ওপেনিং) সময় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সিলিংয়ের কাজ প্রায় শেষ। মেঝের টাইলস লাগানোর কাজ চলছে। বাইরের গ্লাস লাগানোর কাজ শেষ। যন্ত্রপাতি লাগানো চলছে। প্রতিদিন ১০-১২ হাজার কর্মী তিন শিফটে কাজ করছেন।রোদবৃষ্টি মাথায় নিয়ে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। আশা করি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারব।’

 

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, শাহজালাল বিমানবন্দরে বর্তমানে যে দুটি টার্মিনাল রয়েছে, তার যাত্রীধারণ ক্ষমতা বছরে প্রায় ৭০ লাখ। তৃতীয় টার্মিনাল তৈরি হলে এ সংখ্যা দাঁড়াবে ২ কোটির কাছাকাছি। ৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারের এ টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি প্লেন রাখার অ্যাপ্রোন (প্লেন পার্ক করার জায়গা) নির্মাণ করা হচ্ছে। টার্মিনাল ভবন হবে ২ লাখ ৩০ হাজার স্কয়ার মিটারের। ভবনের ভিতরে থাকবে পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য ও অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির ছোঁয়া। নির্মাণাধীন টার্মিনালটিতে বেশ কয়েকটি স্ট্রেইট এসকেলেটর লাগানো হবে। যারা বিমানবন্দরের ভিতরে দীর্ঘ পথ হাঁটতে পারবেন না, তাদের জন্য এ ব্যবস্থা। সিঙ্গাপুর, ব্যাংককসহ বিশ্বের অত্যাধুনিক বিমানবন্দরগুলোয় বেশি যাত্রী প্রবাহের জায়গা এ এসকেলেটরগুলো ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি যাত্রীদের মসৃণ যাত্রার অভিজ্ঞতা দেবে। বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে মেট্রোরেল। তৈরি হবে পৃথক একটি স্টেশনও। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে আসা যাত্রীরা বিমানবন্দর থেকে বের না হয়েই মেট্রোরেলে নিজ গন্তব্যে যেতে পারবেন।

 

এ ছাড়া ঢাকার যে কোনো স্টেশন থেকে মেট্রোরেলের মাধ্যমে সরাসরি বিমানবন্দরের বহির্গমন এলাকায় যাওয়া যাবে। টার্মিনালটির প্রতিটি ওয়াশরুমের সামনে থাকবে একটি করে বেবি কেয়ার লাউঞ্জ। এ লাউঞ্জের ভিতর মায়েদের ব্রেস্ট ফিডিং বুথ, একটি বড় পরিসরে ফ্যামিলি বাথরুম থাকবে। এ ছাড়া শিশুদের খেলার জন্য স্লিপার-দোলনাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা থাকবে। হেলথ ইন্সপেকশন সুবিধা, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ফার্স্ট-এইড রুম, নানা রোগের টেস্টিং সেন্টার ও আইসোলেশন এরিয়া থাকবে। টার্মিনালের ভিতরের ভবনটির নকশা তৈরি করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন।

 

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ প্রকল্প ব্যয় নির্ধারিত হয়েছে ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি ৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। মোট খরচের মধ্যে সরকার দেবে ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার এবং ঋণ হিসেবে জাপানের জাইকা দেবে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। থার্ড টার্মিনালের নকশায় পর্যাপ্তসংখ্যক এসকেলেটর, সাবস্টেশন ও লিফট সংযুক্ত রাখা হয়েছে। থাকবে রাডার, কন্ট্রোল টাওয়ার, অপারেশন ভবন, বহুতল কার পার্ক। তিন তলাবিশিষ্ট এ টার্মিনাল ভবনটির স্থাপত্যরীতিতে আনা হচ্ছে অনন্য নান্দনিকতা। টার্মিনাল ভবনের বহির্বিভাগে থাকবে চোখধাঁধানো নকশা।


প্রিন্ট