তীব্র গরমের মধ্যেই গোপালগঞ্জে ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিং হচ্ছে, এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে জেলার সকল শ্রেণীপেশার মানুষ। এই জেলায় রাতে ও দিনে সমান তালে লোডশেডিং হওয়ায় মানুষের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি রাতের ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটছে।
গোপালগঞ্জ জেলার গ্রাম পর্যায়ে গোপালগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) এবং গোপালগঞ্জ শহর ও পৌর এলাকায় ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
গোপালগঞ্জের গ্ৰাম- শহর সর্বত্র একই চিত্র ফুটে উঠেছে। শহরের বিত্তবান শ্রেণীর মানুষ (আইপিএস) ও রিচার্জেবল ফ্যান দিয়ে কিছু কষ্ট লাঘব করার চেষ্টা করলেও নিম্ন আয় ও গ্রামের সাধারণ মানুষের করুণ অবস্থা। একদিকে অতিরিক্ত লোডশেডিং, অন্যদিকে অব্যাহত দাবদাহ এই দুইয়ে মিলে জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে জেলার ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন কোম্পানির রিচার্জেবল নির্ধারিত মুল্যের পরিবর্তে এক হাজার হতে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত মুল্য বৃদ্ধি করেছে। অসাধু ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে অসহায় ভোক্তা।
কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অফ (ক্যাপ) গোপালগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক মুজাহারুল হক বাবলু বলেন, কোনফ্যান ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভোক্তা প্রতারিত হলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গোপালগঞ্জ কার্যালয়ে অভিযোগ করলে প্রতিকার পাবে।
তবে জেলার কোন ইলেকট্রনিক্স মার্কেটে এখন পর্যন্ত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালনার খবর পাওয়া যায়নি।
গোপালগঞ্জের আবহাওয়া অফিস বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করে ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন ছিল ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গোপালগঞ্জ জেলায় রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমথাকলেও ভ্যাপসা গরম কমে না।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা গ্ৰামের গৃহিণী এক সন্তানের জননী নিশা আক্তার দীনা জানান, বর্তমানে আমার এইচএসসি নির্বাচনী পরিক্ষা চলছে। প্রতিদিন পরিবারের সকলের খাবার রান্নার কাজ ও বাচ্চাটার পরিচর্যা করার পরে রাতে একটু বই নিয়ে পড়তে বসতাম, তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে সেটি আর পারছি না। দিনে রাতে সমান তালে বিদ্যুৎ জাওয়া আশা করছে। একঘন্টা পর একঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে।
গোপালগঞ্জ পৌর এলাকার পুরাতন বই ব্যবসায়ী আনিচুল ইসলাম জানান, এক ঘন্টা পরপর লোডশেডিং এর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। তীব্র এই গরমে ফ্যান ছাড়া তারা দোকানে বসে ক্রয় বিক্রয় করতে পারছে না। গোপালগঞ্জের কাপড়, প্রসাধনী ও হোটেল ব্যবসায়ীদেরও একই অভিযোগ লোডশেডিংয়ের কারণে তারা ঠিক মত ব্যবসা করতে পারছেনা।
এবিষয়ে গোপালগঞ্জ পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোঃ জুলফিকার রহমান বলেন, আমরা গোপালগঞ্জ জেলার বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় কিছুটা কম সরবরাহ পাচ্ছি। জাতীয় গ্রিট থেকে যা পাচ্ছি সেটি দিয়েই গ্ৰহকদের মধ্যে সুষম বন্টন করার চেষ্টা করছি।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) গোপালগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত নিবার্হী প্রকৌশলী মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেন, আমার পৌর এরিয়ায় চাহিদা রয়েছে ১৫ মেগাওয়াট কিন্তু জাতীয় গ্ৰিট থেকে সরবরাহ পাচ্ছি মাত্র ৯ মেগাওয়াট। সরবরাহ পাওয়া ৯ মেগাওয়াট দিয়ে দুই ঘন্টা পর এক ঘন্টা লোডশেডিং দিয়ে সমন্নয় করছি।
প্রিন্ট