ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

স্বপ্নের শহরে দুঃস্বপ্নের বাস্তবতা!

প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার খরচ করে নিওম নামে একটি ভবিষ্যৎমুখী সবুজ শহর গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে সৌদি আরব। লোহিত সাগরের পাশে প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে তৈরি হচ্ছে শহরটি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, দ্রুতগতির ট্রেন, ড্রোনের মতো সুবিধা নিয়ে পুরোপুরি নবায়নযোগ্য জ্বালানিনির্ভর শহরটি ২০৩৯ সালে উদ্বোধন করার পরিকল্পনা আছে দেশটির। অতি উচ্চাভিলাষী প্রকল্পটি নিয়ে শুরু থেকে সমালোচনা হচ্ছে। তোলা হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের উচ্ছেদের অভিযোগও। এবার চলমান প্রকল্পটিতে মানুষ হত্যার অভিযোগও উঠল। খোদ জাতিসংঘ সেখানে মানাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে বলছে, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন বলছে, নিওমের কাজ শুরু করতে হুওয়াইতাত গোত্রের মানুষদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না দিয়ে তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া উচ্ছেদকাজে বাধা দেওয়ায় একজনকে হত্যা করা হয়েছে, তিনজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। আরও তিনজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের দায়ে ৫০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সৌদি আরবের প্রখ্যাত নারী অধিকারকর্মী লুজেইন আল-হাথলুলের বোন লিনা আল-হাথলুল ডয়চে ভেলেকে জানান, হুওয়াইতাত গোত্রের মানুষদের বিচার গোপনে করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্বেগ হচ্ছে সৌদি রক্তে নিওম গড়ে তোলা হচ্ছে।’

মানবাধিকার সংস্থা রিপ্রাইভের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক পরিচালক জিড বাসুনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘জোরপূর্বক উচ্ছেদ, রাষ্ট্রীয় সহিংসতা ও মৃত্যুদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে নিওম গড়ে উঠছে। যদিও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান অঙ্গীকার করেছিলেন যে নিওম প্রকল্পের কাজের জন্য যারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তাদের প্রকল্প বাস্তবায়নকাজে যুক্ত করা হবে।’

জার্মানির কিছু কোম্পানি নিওম প্রকল্পে যুক্ত আছে। তাই ভবিষ্যতে সম্ভাব্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় শুধু সৌদি আরব নয়, জার্মান কোম্পানিগুলোর ওপরও পড়বে বলে মনে করেন জার্মানির ‘সেন্টার ফর অ্যাপ্লায়েড রিসার্চ ইন পার্টনারশিপ উইথ দ্য ওরিয়েন্ট’-এর ঊর্ধ্বতন গবেষক সেবাস্টিয়ান সন্স। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক সম্প্রতি সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের সঙ্গে বৈঠকের সময় দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আলোচনা করেন। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে আইনের শাসন, মানবাধিকার ও স্বাধীনতা থেকে বিচ্ছিন্নভাবে বিবেচনা করা যায় না।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সিডিএর নতুন চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ

error: Content is protected !!

স্বপ্নের শহরে দুঃস্বপ্নের বাস্তবতা!

আপডেট টাইম : ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ মে ২০২৩

প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার খরচ করে নিওম নামে একটি ভবিষ্যৎমুখী সবুজ শহর গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে সৌদি আরব। লোহিত সাগরের পাশে প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে তৈরি হচ্ছে শহরটি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, দ্রুতগতির ট্রেন, ড্রোনের মতো সুবিধা নিয়ে পুরোপুরি নবায়নযোগ্য জ্বালানিনির্ভর শহরটি ২০৩৯ সালে উদ্বোধন করার পরিকল্পনা আছে দেশটির। অতি উচ্চাভিলাষী প্রকল্পটি নিয়ে শুরু থেকে সমালোচনা হচ্ছে। তোলা হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের উচ্ছেদের অভিযোগও। এবার চলমান প্রকল্পটিতে মানুষ হত্যার অভিযোগও উঠল। খোদ জাতিসংঘ সেখানে মানাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে বলছে, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন বলছে, নিওমের কাজ শুরু করতে হুওয়াইতাত গোত্রের মানুষদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না দিয়ে তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া উচ্ছেদকাজে বাধা দেওয়ায় একজনকে হত্যা করা হয়েছে, তিনজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। আরও তিনজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের দায়ে ৫০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সৌদি আরবের প্রখ্যাত নারী অধিকারকর্মী লুজেইন আল-হাথলুলের বোন লিনা আল-হাথলুল ডয়চে ভেলেকে জানান, হুওয়াইতাত গোত্রের মানুষদের বিচার গোপনে করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্বেগ হচ্ছে সৌদি রক্তে নিওম গড়ে তোলা হচ্ছে।’

মানবাধিকার সংস্থা রিপ্রাইভের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক পরিচালক জিড বাসুনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘জোরপূর্বক উচ্ছেদ, রাষ্ট্রীয় সহিংসতা ও মৃত্যুদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে নিওম গড়ে উঠছে। যদিও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান অঙ্গীকার করেছিলেন যে নিওম প্রকল্পের কাজের জন্য যারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তাদের প্রকল্প বাস্তবায়নকাজে যুক্ত করা হবে।’

জার্মানির কিছু কোম্পানি নিওম প্রকল্পে যুক্ত আছে। তাই ভবিষ্যতে সম্ভাব্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় শুধু সৌদি আরব নয়, জার্মান কোম্পানিগুলোর ওপরও পড়বে বলে মনে করেন জার্মানির ‘সেন্টার ফর অ্যাপ্লায়েড রিসার্চ ইন পার্টনারশিপ উইথ দ্য ওরিয়েন্ট’-এর ঊর্ধ্বতন গবেষক সেবাস্টিয়ান সন্স। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক সম্প্রতি সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের সঙ্গে বৈঠকের সময় দেশটিতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আলোচনা করেন। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে আইনের শাসন, মানবাধিকার ও স্বাধীনতা থেকে বিচ্ছিন্নভাবে বিবেচনা করা যায় না।