ঢাকা , শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বোয়ালমারীতে মৎস্যজীবীদের মাঝে গবাদি পশু বিতরণ অনিয়মের অভিযোগ Logo মামলার পাহাড় কমাতে কলকাতা হাইকোর্টের মিডিয়েশন কমিটির পদক্ষেপ Logo কুষ্টিয়ায় তামাকের গাছ কাটার সময় বজ্রপাতে কলেজ ছাত্র নিহত Logo রূপগঞ্জে ছাত্রদল নেতা পাভেল হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন Logo নাগরপুরে সরকারি বইসহ ট্রাক জব্দ, প্রধান শিক্ষক পলাতক Logo ছাত্রীকে লাইব্রেরিতে ডেকে কুপ্রস্তাব দিলেন প্রধান শিক্ষক Logo চরভদ্রাসনে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে এইচবিবি রাস্তা নির্মাণে এলাকাবাসীর অভিযোগ Logo তানোরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এক পরিবারকে একঘরে Logo সদরপুরে গৃহবধূকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ, আসামি গ্রেপ্তার Logo গরমে হাতিয়ায় শ্রেণিকক্ষেই অসুস্থ হয়ে পড়ল ৭ শিক্ষার্থী
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

চোখে আলো নেই, অন্যের হাত দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে নাজীফা

নাজীফা তাসনিম লাবীবা অদম্য মেধাবী। জন্ম থেকেই তার দু’চোখে আলো নেই। তাই বলে দমে যায়নি। ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখার প্রতি মনোযোগী। চোখে আলো না থাকলেও মনের জোর অনেক গুণ বেশি। একবার শুনলেই পড়া মুখস্থ করে ফেলতে পারে নাজীফা। এই বিদ্যাকে পুঁজি করে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পার করেছে।

রবিবার (৩০ এপ্রিল) ধুনট সরকারি এনইউ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে শ্রুতিলেখকের সহযোগিতায় এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে নাজীফা। সে ধুনট সদরের বিলকাজুলী গ্রামের সহকারী অধ্যাপক ওবায়দুল্লাহ লিটনের মেয়ে। গোপালনগর ইউএকে উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে নাফীজা। তাকে সহযোগিতা করছে স্কুলছাত্র শ্রুতিলেখক রোকনুজ্জামান।

নাজীফা জানায়, ব্রেইল পদ্ধতি, অডিও রেকর্ডিং ও ইউটিউবে লেকচার শুনে পাড়া মুখস্থ করে। পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় মেধাতালিকায় বৃত্তি পেয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি গানবাজনায় সে সমানভাবে পারদর্শী।

নিজেকে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত সংগীতশিল্পী বলে দাবি করে নাজীফা। ভবিষ্যতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত শিক্ষক হতে চায় অদম্য মেধাবী এই শিক্ষার্থী।

নাজীফার বাবা ওবায়দুল্লাহ লিটন বলেন, ‘জন্মগতভাবেই নাজীফা চোখে কম দেখে। মেয়েকে নিয়ে আমি বড় দুশ্চিন্তায় পড়ি। অনেক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেও কোনো সুফল মেলেনি। কিন্তু অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে নাজীফা পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে। তার স্মরণশক্তি খুব ভালো। আমি এখন আশাবাদী, সে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করবে।’

নাজীফার মা জান্নাতুল ফেরদৌসী সুইটি বলেন, ‘মেয়েকে নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলাম। এখন অন্য ছেলে-মেয়েদের চেয়ে নাজীফা পড়ালেখায় বেশি মনোযোগী। পড়ার প্রতি প্রবল ইচ্ছাশক্তিই তাকে সব প্রতিবন্ধকতাকে দূর করে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছে।’

এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রসচিব তফিজ উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষা বোর্ডের অনুমতি নিয়ে একজন শ্রুতিলেখকের মাধ্যমে নাজীফাকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রোকনুজ্জামান শ্রুতিলেখকের দায়িত্ব পালন করছে।’

রোকনুজ্জামান বলে, ‘প্রশ্ন বললেই সঙ্গে সঙ্গে নাজীফা আপু আমাকে উত্তর বলে দেন। আমি শুধু তার হয়ে খাতায় উত্তর লিখে দিচ্ছি। এতে কোনো সমস্যা হয়নি। পরীক্ষা ভালো হয়েছে।’


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

বোয়ালমারীতে মৎস্যজীবীদের মাঝে গবাদি পশু বিতরণ অনিয়মের অভিযোগ

error: Content is protected !!

চোখে আলো নেই, অন্যের হাত দিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে নাজীফা

আপডেট টাইম : ০৫:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৩
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক :
নাজীফা তাসনিম লাবীবা অদম্য মেধাবী। জন্ম থেকেই তার দু’চোখে আলো নেই। তাই বলে দমে যায়নি। ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখার প্রতি মনোযোগী। চোখে আলো না থাকলেও মনের জোর অনেক গুণ বেশি। একবার শুনলেই পড়া মুখস্থ করে ফেলতে পারে নাজীফা। এই বিদ্যাকে পুঁজি করে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পার করেছে।

রবিবার (৩০ এপ্রিল) ধুনট সরকারি এনইউ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে শ্রুতিলেখকের সহযোগিতায় এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে নাজীফা। সে ধুনট সদরের বিলকাজুলী গ্রামের সহকারী অধ্যাপক ওবায়দুল্লাহ লিটনের মেয়ে। গোপালনগর ইউএকে উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে নাফীজা। তাকে সহযোগিতা করছে স্কুলছাত্র শ্রুতিলেখক রোকনুজ্জামান।

নাজীফা জানায়, ব্রেইল পদ্ধতি, অডিও রেকর্ডিং ও ইউটিউবে লেকচার শুনে পাড়া মুখস্থ করে। পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় মেধাতালিকায় বৃত্তি পেয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি গানবাজনায় সে সমানভাবে পারদর্শী।

নিজেকে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত সংগীতশিল্পী বলে দাবি করে নাজীফা। ভবিষ্যতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত শিক্ষক হতে চায় অদম্য মেধাবী এই শিক্ষার্থী।

নাজীফার বাবা ওবায়দুল্লাহ লিটন বলেন, ‘জন্মগতভাবেই নাজীফা চোখে কম দেখে। মেয়েকে নিয়ে আমি বড় দুশ্চিন্তায় পড়ি। অনেক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেও কোনো সুফল মেলেনি। কিন্তু অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে নাজীফা পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে। তার স্মরণশক্তি খুব ভালো। আমি এখন আশাবাদী, সে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করবে।’

নাজীফার মা জান্নাতুল ফেরদৌসী সুইটি বলেন, ‘মেয়েকে নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলাম। এখন অন্য ছেলে-মেয়েদের চেয়ে নাজীফা পড়ালেখায় বেশি মনোযোগী। পড়ার প্রতি প্রবল ইচ্ছাশক্তিই তাকে সব প্রতিবন্ধকতাকে দূর করে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছে।’

এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রসচিব তফিজ উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষা বোর্ডের অনুমতি নিয়ে একজন শ্রুতিলেখকের মাধ্যমে নাজীফাকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রোকনুজ্জামান শ্রুতিলেখকের দায়িত্ব পালন করছে।’

রোকনুজ্জামান বলে, ‘প্রশ্ন বললেই সঙ্গে সঙ্গে নাজীফা আপু আমাকে উত্তর বলে দেন। আমি শুধু তার হয়ে খাতায় উত্তর লিখে দিচ্ছি। এতে কোনো সমস্যা হয়নি। পরীক্ষা ভালো হয়েছে।’


প্রিন্ট